ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১

শেষটা সুখের হলো না সাকিবের

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:২৪, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

শেষটা সুখের হলো না সাকিবের

সাকিব আল হাসান

‘ক্রিকেট যতটা আবেগের, তার চেয়ে অনেক বেশি সায়েন্স (বিজ্ঞান)’- প্রায় তিন দশক আগে বলেছিলেন প্রয়াত কিংবদন্তী কোচ বব উলমার। কিন্তু উপমহাদেশের ক্রিকেটে যে এই দর্শন খাটে না, দেখা গেল আরও একবার। নইলে আরেকটি আইসিসির টুর্নামেন্টে দল ঘোষণায় সাকিব আল হাসান ও তামিম  ইকবালকে নিয়ে কেন এত আলোচনা? বাস্তবতা মানলে দুজনই তো ‘গন কেস’।

একদিন আগেই অ্যাকশন পরীক্ষায় সাকিব দ্বিতীয়বার ফেল করায় নির্বাচকদের জন্য অবশ্য কাজটা সহজই হয়ে গেছে, ‘বোলিং অ্যাকশন নিয়ে যে সমস্যায় আছেন সাকিব, পরীক্ষা দিয়েছিলেন। দুঃখজনকভাবে ফলটা নেতিবাচক হওয়ায় তিনি একজন ব্যাটসম্যান হিসেবেই শুধু খেলতে পারতেন। দল নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় তাই তার অবস্থানটা শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে ছিল আমাদের কাছে। এই দলে আসলে সমন্বয় সাজাতে তাকে আমরা জায়গা দিতে পারিনি। বলছিলেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।
রবিবার হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে পনেরো সদস্যের দল ঘোষণা করেন গাজী আশরাফ। গত বছর অক্টোবরে ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের আগে টেস্ট এবং টি২০ ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন সাকিব।

কিন্তু পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতে আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি আর দেশে ফিরতে পারেননি। সর্বশেষ নভেম্বর-ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও ছিলেন না। ২০২৩ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের হয়ে আর ওয়ানডে খেলেননি। এই অবস্থায় ওয়ানডে ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার থাকা না থাকা ছিল আলোচনায়। তার সঙ্গে যুক্ত হয় ত্রুটিপূর্ণ বোলিং অ্যাকশন ইস্যু, একজন কিংবদন্তী ক্রিকেটারকে নিয়ে কোনো জায়গাটার জন্য তাকে দলে রাখা গেল না, এটা নিয়ে পাবলিকলি এত খোলামেলা আলোচনা করা খুব একটা ভালো বিষয় নয়।

সাকিবের বিষয়ে বোর্ড প্রেসিডেন্ট (ফারুক আহমেদ) বলেছিলেন, কেউ অবসর না নিলে দল নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় অ্যাভেইলঅ্যাবল। বোলিং অ্যাকশনের বিষয়টা আসায় আমরা আর দ্বিতীয় প্রসঙ্গে (রাজনৈতিক সমস্যা) যাইনি। বলছিলেন প্রধান নির্বাচক। 
২০০৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলার পর ওই বছরই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলেন সাকিব। সেই থেকে কখনোই কোনো বৈশ্বিক আসরে তাকে ছাড়া খেলেনি বাংলাদেশ। ১৯ বছরের সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ছে এবার। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময়েও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে সব ফরম্যাট থেকে অবসরের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। নাটকীয় কোনো পালাবদল না হলে ধরে নেওয়া যায়, বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ।

৩৭ বছর বয়সীর এমন পরিণতি নিয়ে সাবেক তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক বলেন, আমরা কিভাবে এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাই? সাকিব কয়টা বিশ্বকাপ খেলেছে, দেশের কয়টা প্লেয়ার কয়টা খেলেছে। এখন সাকিবকে নিয়ে কেন সমস্যা দাঁড়াচ্ছে। আজকে সাকিব  নেই টিমে, কিন্তু হতাশা থাকবেই।

×