তামিম ইকবাল ফিরবেন
তামিম ইকবাল ফিরবেন। জাতীয় দলের জার্সিতে ফের মাঠ মাতাবেন। আশায় ছিলেন ভক্তরা। বিপিএলে দারুণ ব্যাটিংয়ে সেই আশা আরও দৃঢ় হচ্ছিল। না, শেষ পর্যন্ত সমর্থকদের হতাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন তর্কাতীতভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ওপেনার।
২০১৮ এশিয়া কাপেই যেমন আঙুলে ব্যান্ডেজ নিয়ে গ্লাভস কেটে ব্যাটিংয়ে নেমে যখন এক হাতের বীরত্ব দেখিয়েছিলেন, তখন তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন ক্রিকেটের সীমানাও। টাইগার ক্রিকেট ইতিহাসের সঙ্গেই সমানে জড়িয়ে থাকবে তামিমের নাম। কত অর্জন, অনেক কীর্তি। রেকর্ড হয়ত সবসময় বাস্তবতা তুলে ধরতে পারে না, লেখা থাকে ইতিহাসের পাতায়।
* টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০- তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১৫ হাজার রান করা প্রথম ব্যাটসম্যান তামিম। তার নামের পাশে আছে ১৫১৯২ রান। পরে তাকে ছাড়িয়ে যান মুশফিকুর রহিম। ১৫৩০০ রান নিয়ে এখন শীর্ষে এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
* ওয়ানডেতে ২৪৩ ম্যাচে ৮৩৫৭ রান নিয়ে শীর্ষে তামিম। সেঞ্চুরি ১৪ ও হাফ সেঞ্চুরি ৫৬টি। ৭৭৯৩ রান নিয়ে দুইয়ে মুশফিক। তিন সংস্করণ মিলিয়ে তামিমের সেঞ্চুরি ২৫টি (১০+১৪+১)। বাংলাদেশের আর কারও ২০টির বেশি শতক নেই।
* তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম। ২০১৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করে অনন্য এই কীর্তি গড়েন তিনি। ছোট্ট ফরম্যাটে সেঞ্চুরি নেই দেশের আর কোনো ব্যাসম্যানের।
* ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড তামিমের। ২০০৮ সালে আয়ারল্যন্ডের বিপক্ষে ১২৯ রানের ইনিংস খেলার দিন তার বয়স ছিল ১৯ বছর ২ দিন। ওয়ানডেতে ছক্কা ১০৩টি, পরে তাকে ছাড়িয়ে যান মাহমুদউল্লাহ (১০৭)।
* ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে একাধিক দেড়শ’ ছোঁয়া ইনিংস খেলা একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম। ২০০৯ সালে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ১৫৪ রানের পর ও ২০২০ সালে ১৫৮ রান করে তিনিই ভাঙেন সেই রেকর্ড। এক ম্যাচ পর ১৭৬ রান করেন লিটন দাস।
* ওয়ানডে ইতিহাসে একটি নির্দিষ্ট ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড তামিমের দখলে (মিরপুরে ২৮৯৭), পরের দুটি নামও অবশ্য বাংলাদেশেরই। মুশফিক ২৬৮৪ ও সাকিব ২৬৫৬। কলম্বোর প্রেমাদাসায় ২৫১৪ রান নিয়ে চারে শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়সুরিয়া।
* টেস্টেও একসময় দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল তামিমের। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০৬ রান করেছিলেন তিনি। পরে ২১৭ রান করে সেটি ছাড়িয়ে যান সাকিব। এখন ২১৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে রেকর্ডটি মুশফিকের।
* বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫১৩৪ রান তামিমের। সেঞ্চুরি ১০ ও হাফ সেঞ্চুরি ৩১টি। ১১ সেঞ্চুরিতে ৬০০৭ রান নিয়ে শীর্ষে মুশফিক। টেস্টে টানা পাঁচ ইনিংসে ফিফটি করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম।
* ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ডবল সেঞ্চুরি করার পথে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তামিম। শুধু বাংলাদেশের নয়, সর্বোপরি টেস্টের ইতিহাসেই দলের দ্বিতীয় ইনিংসে এটিই ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।
* সেঞ্চুর হাঁকিয়ে ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখানো প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান এবং তৃতীয় ক্রিকেটার তামিম। ২০১০ সালের ২৮ মে ৫ উইকেট নিয়ে প্রথমে স্থান করে নিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন। তার দুদিন পর সেঞ্চুরি পান তামিম। অপর জন মুস্তাফিজ (২০২৯)।
* উইকেটকিপারদের বাইরে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেট মিলিয়ে একশ’র বেশি ক্যাচ নেওয়া চার ফিল্ডারের একজন তামিম। তার ক্যাচ ১০৬টি। সৌম্য সরকারের ক্যাচ ১১২টি, সাকিব আল হাসানের ১২০টি ও মাহমুদউল্লাহর ১৭২টি।