টানা ৭ জয়ের আনন্দ ঢাকা মেট্রোর ক্রিকেটারদের
প্রথমবারের মতো আয়োজিত জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি২০ আসরের প্রাথমিক পর্বে অপরাজিত থেকে প্লে-অফে উঠেছে ঢাকা মেট্রো। বৃহস্পতিবার সিলেট একাডেমি গ্রাউন্ডে চট্টগ্রামকে ১৭ রানে হারিয়ে টানা সপ্তম জয় পায় তারা। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে তারা এখন শনিবার প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় স্থানে থেকে প্লে-অফে ওঠা রংপুর বিভাগের। ম্যাচটি শনিবার বেলা ১টা ৩০ মিনিটে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে গড়াবে।
একই ভেন্যুতে সেদিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে খুলনা-চট্টগ্রাম খেলবে এলিমিনেটর ম্যাচ। বৃহস্পতিবার সিলেট একাডেমি মাঠে রংপুর খুলনার কাছে ৩৪ রানে হেরেছে। ৭ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট রংপুরের। আর খুলনা চতুর্থ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে এদিনই। চট্টগ্রাম ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থান পেয়েছে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন রাজশাহী ২৬ রানে সিলেটকে হারিয়ে ষষ্ঠ হয়েছে। একই মাঠে ঢাকা ১৯ রানে বরিশালকে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট লাভ করলেও নেট রানরেটে চট্টগ্রামের চেয়ে পিছিয়ে থেকে প্লে-অফে উঠতে পারেনি।
ঢাকা আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৭৮ রানে গুটিয়ে যায়। সুমন খান ২১ বলে ৪ চার, ১ ছয়ে ৩৬ ও জাওয়াদ আবরার ২৫ বলে ২ চার ৩ ছয়ে ৩২ রান করেন। রুয়েল মিয়া ৪টি ও জিহাদুল হক জিহাদ ৩টি উইকেট নেন। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৯ রান করতে পেরেছে বরিশাল। কামরুল ইসলাম রাব্বি ২৩ বলে ৩ চার, ৩ ছয়ে ৩৯ রান করেন। সাইফ হাসান নেন ২ উইকেট। রাজশাহী ২৬ রানে সিলেটকে হারিয়েছে।
২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৮১ রান তোলে রাজশাহী। নাজমুল হোসেন শান্ত মাত্র ৪৮ বলে ৬ চার, ৫ ছয়ে ৭৮ রান করেন। সৈয়দ খালেদ ৩টি ও এবাদত হোসেন ২টি উইকেট নেন। জবাবে সিলেট ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৫ রান করতে পেরেছে। জিশান আলম ৩২ বলে ২ চার, ৫ ছক্কায় ৬০ রান করেন।
পেসার আসাদুজ্জামান পায়েল ২৪ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। একাডেমি মাঠে রংপুরের বিপক্ষে খুলনা ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৫ রান তোলে। মোহাম্মদ মিঠুন ৪৯ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় ৭১, আজিজুল হাকিম তামিম ৪১ বলে ৭ চার, ৪ ছক্কায় ৬৬ ও ইমরুল কায়েস ১৯ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় অপরাজিত ৪০ রান করেন। রবিউল হক ২ উইকেট নেন। জবাবে রংপুর ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১৬১ রান করতে পেরেছে।
৩৪ রানে জয় পায় খুলনা। অধিনায়ক আকবর আলী ২৯ বলে ২ চার, ৫ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন। শেখ পারভেজ জীবন ও টিপু সুলতান ৩টি করে উইকেট নেন। ফর্মের তুঙ্গে থাকা মেট্রো প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচেও ১৭ রানে জিতেছে চট্টগ্রামের বিপক্ষে। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৮ রান করে তারা। শামসুর রহমান শুভ ৪৮ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ৫৬ ও মার্শাল আইয়ুব ৪২ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে ৫১ রান করেন। আহমেদ শরীফ ৩টি ও নাঈম হাসান ২টি উইকেট নেন। জবাবে চট্টগ্রাম ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪১ রান করতে পেরেছে। ইয়াসির আলী রাব্বি ৩১ বলে ৩ চার, ২ ছয়ে ৪৬ রান করেন।
মেট্রোর পক্ষে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ২ উইকেট নেন। একমাত্র দল হিসেবে এবার এনসিএল টি২০ আসরে অপরাজিত থেকেই প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছে। শুরু থেকেই রংপুরও তাদের সঙ্গে সমান্তরলেই চলছিল। কিন্তু টানা দুই ম্যাচ হেরেছে তারা। প্রথম পরাজয় রংপুর দেখেছে মেট্রোর কাছেই। আর শেষ ম্যাচে হারল খুলনার কাছে। তবে এ দুটি হারের পরও প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলবে তারা। শনিবার মেট্রোর বিপক্ষে প্রতিশোধ নিতে পারলে সরাসরি ফাইনালে উঠতে পারবে। তবে হেরে গেলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলার সুযোগ থাকবে। কারণ এলিমিনেটর ম্যাচে চট্টগ্রাম-খুলনা ম্যাচের বিজয়ীরা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলবে রবিবার।
সেই ম্যাচে জেতা দল উঠবে ফাইনালে। ২৩ ডিসেম্বর ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। প্রাথমিক রাউন্ড শেষে ব্যাট হাতে সিলেটের ওপেনার জিশান আলম সর্বাধিক ২৮১ রান করে শীর্ষে। রাজশাহীর হাবিবুর রহমান সোহান দ্বিতীয় স্থানে ২৫৯ রান করে। আর বোলিংয়ে রংপুরের পেস অলরাউন্ডার আলাউদ্দিন বাবু ১৪ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে। ১৩ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রামের পেসার আহমেদ শরীফ দ্বিতীয়।