মেসির হাতে পরম আরাধ্যের বিশ্বকাপ
আজ ১৮ ডিসেম্বর। ২০২২ সালের এই দিনে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবল দল আর্জেন্টিনা তাদের ইতিহাসের তৃতীয় ফিফা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে অনুষ্ঠিত শ্বাসরুদ্ধকর ও অনেকের মতে ‘সর্বকালের সেরা বিশ্বকাপ ফাইনাল’-এ ইউরোপের ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ (৩-৩) গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা।
দীর্ঘ ৩৬ বছর পর এই আরাধ্য সোনালী ট্রফিটি করায়ত্ত করেছিল ‘লা আলবিসেলেস্তে’ বাহিনী। ফলে তাদের শিরোপাজয়ের আবেগটা ছিল স্বভাবতই বাঁধনছাড়া ও সীমাহীন। এবং এই ট্রফিজয় ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। শিরোপাজয়ের সেই চিত্তসুখের রেশ এখনও রয়ে গেছে আকাশী-শুভ্র সমর্থকদের মাঝে।
আজ তৃতীয়বারের মতো বিশ্বজয়ের পূর্তিতে আর্জেন্টিনা ভক্ত-সমর্থক-অনুরাগীরা দিনটি বিশেষভাবে স্মরণ ও পালন করছেন। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নানা ছবি ও স্ট্যাটাস দিচ্ছেন তারা। আজ ১৮ ডিসেম্বর উপলক্ষে আর্জেন্টিনা ফ্যানদের জন্য এই বিশেষ লেখায় থাকছে আর্জেন্টিনা ও দেশটির ফুটবলের আদ্যোপান্ত।
আর্জেন্টিনা নামের গল্প : আর্জেন্টিনার আগের নাম ছিল ‘ভাইসারোইয়ালটি অব দ্য রিও ডি লা প্লাটা’ (আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়েকে একসঙ্গে এ নামে ডাকা হতো। তখন স্পেন শাসন করতো এই চারটি দেশকে)। লাতিন শব্দ ‘আর্জেন্টুম’-এর অর্থ হচ্ছে ‘রূপা’। ১৬০২ সালে স্প্যানিশ কবি মার্টিন ডেল বার্কো বুয়েন্স এইরেসে বসে ‘লা আর্জেন্টিনা’ নামে একটি দেশাত্ববোধক কবিতা লেখেন। কবিতার বিষয়বস্ত ছিল আর্জেন্টিনার আন্দিজ পবর্তমালা। আন্দিজকে তিনি ‘রূপালী পর্বতমালা’ হিসেবে কল্পনা করে কবিতাটি লেখেন। ১৮২৬ সালে মার্টিনের কবিতা ‘লা আর্জেন্টিনা’ নাম থেকেই বেছে নেয়া হয় দেশটির নতুন নাম ‘আর্জেন্টিনা রিপাবলিক।’
আর্জেন্টিনা ফুটবলের শুরুর কাহিনী : সরকারীভাবে আর্জেন্টিনার ফুটবলচর্চা শুরু ১৮৬৭ সালে। জাতীয় দল গঠন হয় ১৯০১ সালে। তাদের প্রথম ম্যাচ ওই বছরই, ১৬ মেতে প্রীতি ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল প্রতিবেশী উরুগুয়ে। মন্টেভিডিওতে অনুষ্ঠিত সে ম্যাচে স্বাগতিকদের ৩-২ গোলে হারিয়ে শুভযাত্রা করেছিল আর্জেন্টিনা। খুব দ্রুতই ফিফার সদস্যপদ অর্জন করে তারা। তারপর একে একে অংশ নিতে থাকে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক, প্যান আমেরিকান গেমস, প্যান আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ, কোপা আমেরিকা, কোপা নিউটন, কোপা লিপটন, কোপা জুলিও এ রোকো, নেশন্স কাপ, কোপা কিরিন, কোপা কন্টেনেরিও রেভেল্যুসিওন ডি মায়ো, আর্টেমিও ডি ফ্রাঞ্চি ট্রফি, ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ, যুব বিশ্বকাপ ও ফিফা বিশ্বকাপের মতো ফুটবল টুর্নামেন্টগুলোতে।
জয়-হার-ম্যাচের পরিসংখ্যান : আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয় ১২-০ গোলে (বিপক্ষ ইকুয়েডর, ১৯৪২)। সবচেয়ে বড় হার ১-৬ গোলে (বিপক্ষ চেকোস্লোভাকিয়া, ১৯৫৮, বলিভিয়া ২০০৯ এবং স্পেন ২০১৮)। আর্জেন্টিনা সবচেয়ে বেশি খেলেছে উরুগুয়ের বিপক্ষে, ২০৩ ম্যাচে। সবচেয়ে বেশি জিতেছেও একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে (৯৪ বার)। সবচেয়ে বেশি ড্র-ও করেছে (৪৯ বার)। হেরেছেও তাই (৬০ বার)।
সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত আর্জেন্টিনা খেলেছে (১৯০১-২০২৪ পর্যন্ত) মোট ১১০৪ ম্যাচ। জিতেছে ৬২৪ ম্যাচে, হেরেছে ২৩৪ ম্যাচে, ড্র করেছে ২৪৬ ম্যাচে। গোল করেছে ২০৮৭টি, গোল হজম করেছে ১১১৬টি।
মারিও কেম্পেস, ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও লিওনেল মেসি-আর্জেন্টিনার তিন বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক
আমেরিকার প্রথম ও বিশ্বের দ্বিতীয় দল হিসেবে যে কৃতিত্ব : আর্জেন্টিনা একমাত্র দক্ষিণ আমেরিকান দল হিসেবে টানা দু’বার মহাদেশীয় শিরোপা ও একবার বিশ্বকাপ জিতেছে। ইউরোপে একমাত্র এই কৃতিত্ব আছে স্পেনের (২০০৮ ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০১২ ইউরো)। তাদের মতো স্বপ্নের এই ট্রেবল আর্জেন্টিনাও জিতেছে (২০২১ কোপা, ২০২২ বিশ্বকাপ এবং ২০২৪ কোপা)।
ফাইনালন্টিনা আর্জেন্টিনা : গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণের আলোকে বর্তমান সময়ের সেরা দল হিসেবে অনায়াসেই আর্জেন্টিনার নাম উল্লেখ করা যায়। গত ১৭ বছরে তারা ৭টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে। আর শিরোপা জিতেছে তিনটি। এই ডিজিটাল যুগে এবং রাফ এ্যান্ড টাফ ফুটবলের সময়ে কোন দলের এতবার ফাইনালে খেলাটা নিঃসন্দেহে কৃতিত্বপূর্ণ। এজন্য অনেক ফুটবলবোদ্ধা আর্জেন্টিনার নাম দিয়েছেন ‘ফাইনালন্টিনা’! আবার অনেকেই একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা ফুটবল দলও মনে করেন ‘আকাশী-সাদা বাহিনীকে।
অপরাজিত থাকায় দ্বিতীয় সেরা : ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার কৃতিত্ব (যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ) আর্জেন্টিনার। অল্পের জন্য ছুঁতে পারেনি বিশ্বরেকর্ড ইতালিকে (৩৭ ম্যাচ, ২০১৮-২০২১)।
অলিম্পিক গোলের জনক : ১৯২৪ সালের ২ অক্টোবর। উরুগুয়ের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলে আর্জেন্টিনা। খেলার ১৬ মিনিটে আর্জেন্টাইন উইঙ্গার সিজারিও ওঞ্জারি কর্নার কিক থেকে একটি গোল করেন। তিনি কর্নার কিক নেন এবং কোন খেলোয়াড় বল স্পর্শ না করলেও তা উরুগুয়ের গোলপোস্টের ভেতরে ঢুকে যায়। এই গোলটির নাম দেওয়া হয় ‘‘গোল অলিম্পিকো’’ বা ‘‘অলিম্পিক গোল’’। পরবর্তীতে এরকম গোল আরও অনেক হয়েছে। কিন্তু প্রথম অলিম্পিক গোলের কীর্তিধারী হিসেবে আর্জেন্টিনার নাম স্বমহিমায় থেকে যাবে চিরকাল।
সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ট্রফিজয় : ১৯৯৩-২০২১ সাল। প্রচুর মানসম্পন্ন ফুটবলার থাকার পরও এই দীর্ঘ ২৮ বছরে কোন আন্তর্জাতিক ট্রফি জিততে পারেনি আর্জেন্টিনা। তারপরও বিস্ময়করভাবে আর্জেন্টিনাই এখনও সবচেয়ে বেশি ২২টি আন্তর্জাতিক ট্রফি জেতা দেশ। এগুলো হচ্ছে-৩টি বিশ্বকাপ, ১৬টি কোপা আমেরিকা, ১টি কনফেডারেশন্স কাপ এবং ২টি কনমেবল-উয়েফা কাপ (ফিনালিসিমা)। এছাড়া ২ বার অলিম্পিক ফুটবলে স্বর্ণপদক এবং ১ বার প্যান আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপও জিতেছে দেশটি। সেগুলো ধরলে আর্জেন্টিনার এ পর্যন্ত মোট ট্রফি ২৫টি।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে আর্জেন্টিনা : ৬ এপ্রিল ২০২৩ থেকে এখন অবধি ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছে আর্জেন্টিনা। তবে এবারই প্রথম নয়। এর আগেও এক নম্বরে আসীন ছিল দেশটি। সেটা মার্চ ২০০৭ থেকে অক্টোবর ২০০৭, জুন ২০০৮ থেকে জুলাই ২০০৮, অক্টোবর ২০১৫, এপ্রিল ২০১৬ থেকে এপ্রিল ২০১৭ পর্যন্ত। এছাড়া সবচেয়ে বেশি সময় ধরে র্যাংকিংয়ে থাকার ক্ষেত্রে আর্জেন্টিনা আছে চারে (১৩৮৭ দিন)। দেশটির সর্বনিম্ন র্যাঙ্কিংও শুনে নিন। সেটা ২৪ (আগস্ট, ১৯৯৬)!
বিশ্বকাপের পরিসংখ্যানে আর্জেন্টিনা : আর্জেন্টিনা ১৮ বার বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলেছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ৮৮টি ম্যাচ খেলেছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ৪৭টি ম্যাচে জিতেছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ১৭টি ম্যাচে ড্র করেছে, যা চতুর্থ সর্বোচ্চ। ২৪টি ম্যাচে হেরেছে, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৫২টি গোল করেছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ১০১টি গোল হজম করেছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ১৫৮ পয়েন্ট পেয়েছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ৩ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ৩ বার রানার্সআপ হয়েছে, যা যুগ্মভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ৬ বার ফাইনাল খেলেছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ।
বিশ্বকাপে খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন লিওনেল মেসি (২৬)। বেশি আসরে (যুগ্মভাবে ৫ বার) খেলেছেন মেসি। বেশি গোল কন্ট্রিবিউশন (২১) মেসির। ১ আসরে বেশি টাইব্রেকার শট সেভ (৪) সের্জিও গয়কোচিয়ার (১৯৯০)। একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা ২ আসরে হ্যাটট্রিক গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার (১৯৯৪ ও ১৯৯৮)। সবচেয়ে বেশি সময় মাঠে ছিলেন মেসি (২৩১৪ মিনিট)। সবচেয়ে বেশি ম্যাচে ক্যাপ্টেন্সি (১৯) মেসির। সবচেয়ে বেশি গোল্ডেন বল জিতেছেন মেসি (২বার)। সবচেয়ে বেশিবার ম্যাচসেরা (১১বার) মেসি। ১ আসরে সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরা (৫বার) মেসি। একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে গ্রুপ পর্ব, দ্বিতীয় রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে গোল করেছেন মেসি (২০২২)।
অনন্য-অদ্বিতীয় মেসি : অনেকের মতেই সর্বকালের সেরা ফুটবলার মেসি। আর্জেন্টিনার রেকর্ডের বরপুত্র বলা যেতে পারে এলএম টেনকে। দেশটির হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (১৯১), বেশি গোল (১১২), বেশি এসিস্ট (৫৮), বেশি হ্যাটট্রিক (১০) ... সবই তার দখলে।
বিশ্বকাপজয়ী তিন অধিনায়ক : ড্যানিয়েল প্যাসারেলা (১৯৭৮), ডিয়েগো ম্যারাডোনা (১৯৮৬) এবং লিওনেল মেসি (২০২২)। এদের মধ্যে প্যাসারেলা দু’বার বিশ্বকাপ জিতেছেন।
বিশ্বকাপজয়ী তিন কোচ : আর্জেন্টিনার ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের কোচরা হলেন-লুই সিজার মেনোত্তি (১৯৭৮), কার্লোস বিলার্দো (১৯৮৬) এবং লিওনেল স্কালোনি (২০২২)। বিলার্দোর বিশেষত্ব হচ্ছে-তিনি দু'বার আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন (১৯৯০)।
আর্জেন্টিনার ফিফা বিশ্বকাপজয়ী কোচরা। বা থেকে লিওনেল স্কালোনি (২০২২), লুই সিজার মেনোত্তি (১৯৭৮) এবং কার্লোস বিলার্দো (১৯৮৬)
সবচেয়ে বেশি ট্রফিজয়ী কোচ : গুইলার্মো স্ট্যাবিল পরিস্যখ্যানের বিচারে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে সফল কোচ। দু’দফায় (১৯৩৯-১৯৫৮ এবং ১৯৬০) সবচেয়ে বেশি ১২৫ ম্যাচে কোচিং এবং সবচেয়ে বেশি ৮৩ ম্যাচে জয় দু’টি রেকর্ডই তার। এছাড়াও সবচেয়ে বেশি ৯টি ট্রফি আর্জেন্টিনাকে তিনিই এনে দিয়েছেন (৬টি সাউথ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ, ২টি প্যান আমেরিকান গেমস এবং ১টি প্যান আমিরকান চ্যাম্পিয়নশিপ)।
গোল অব দ্য সেঞ্চুরি : ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ডিয়েগো ম্যারাডোনার করা দ্বিতীয় গোলটিকে ফিফা “গোল অব দ্য সেঞ্চুরি”র মর্যাদা দিয়েছে। সেই গোলটি ম্যারাডোনা প্রতিপক্ষের ৬ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে অনবদ্য ভঙ্গিতে করেছিলেন।
উপসংহার : অভাব, দারিদ্রতা, একসময়কার সামরিক শাসনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, ফকল্যান্ড নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে ব্যর্থ লড়াই ... সবমিলিয়ে অর্থনৈতিকভাবে খুব একটা স্বচ্ছল নয় লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা (১৯ শতকের শেষ ভাগ থেকে দেশটি প্রচুর পরিমাণে কৃষিদ্রব্য রপ্তানি করা শুরু করে। দক্ষিণ আমেরিকায় আর্জেন্টিনাতেই প্রথম শিল্পায়ন শুরু হয় এবং এটি বহুদিন ধরে এ মহাদেশের সবচেয়ে ধনী দেশ ছিল। সেসময় এখানকার অধিবাসীরা ইউরোপীয় দেশগুলির সমমানের জীবনযাত্রা নির্বাহ করত। কিন্তু ১৯৪০-এর দশকের পর থেকে দেশটি ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি, উচ্চ বেকারত্ব ও বড় আকারের জাতীয় ঋণের সমস্যায় জর্জরিত)।
তারপরও দেশটির মানুষ স্বপ্ন দেখে, এক বুক আশা নিয়ে প্রতি রাতে ঘুমাতে যায়, চায় সাফল্য ও খ্যাতির চূড়োয় উঠতে। তাদের এই স্বপ্ন-ভালবাসার সেই মাধ্যমটি হচ্ছে একটি খেলা! খেলাটির নাম ফুটবল। চর্মগোলকের এ খেলাটি নিয়ে তাদের যেমন আছে অসীম আবেগ ও গৌরবগাঁথা, তেমনি আছে সুতীব্র কষ্ট আর হতাশার দীর্ঘশ্বাসও। সেই হতাশা ছিল দীর্ঘ সময় ধরে। সবচেয়ে বড় হতাশা ছিল বিশ্বকাপ ফুটবলে শিরোপা জিততে না পারার হতাশা। সেই হতাশা ঝেরে ফেলার দারুণ সুযোগ ছিল ২০১৪ সালে। কিন্তু সেবার তা হয়নি। মারাকানায় আর্জেন্টাইন স্বপ্ন হযেছিল বিলীন। কেঁদেছিলেন মেসি, কেঁদেছিল আর্জেন্টিনা, কেঁদেছিল আর্জেন্টিনার কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থক-অনুরাগী। নীল বেদনায় আচ্ছন্ন হয়েছিল রূপালী পর্বতমালার দেশটি। সেই হতাশা দূর হয়েছিল ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর, আজকের এই দিনে।
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা : ১৯৩০ সালে রানার্সআপ, ১৯৩৪ সালে প্রথম রাউন্ড, ১৯৩৮ সালে অংশ নেয়নি, ১৯৫০ সালে অংশ নেয়নি, ১৯৫৪ সালে অংশ নেয়নি, ১৯৫৮ সালে প্রথম রাউন্ড, ১৯৬২ সালে প্রথম রাউন্ড, ১৯৬৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল, ১৯৭০ সালে বাছাইপর্বে অনুত্তীর্ণ, ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় রাউন্ড, ১৯৭৮ সালে চ্যাম্পিয়ন, ১৯৮২ সালে দ্বিতীয় রাউন্ড, ১৯৮৬ সালে চ্যাম্পিয়ন, ১৯৯০ সালে রানার্সআপ, ১৯৯৪ সালে দ্বিতীয় রাউন্ড, ১৯৯৮ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০০২ সালে প্রথম রাউন্ড, ২০০৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১০ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৪ সালে রানার্সআপ, ২০১৮ সালে দ্বিতীয় রাউন্ড, ২০২২ সালে চ্যাম্পিয়ন।
শহীদ