ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

দিয়াবাতের ম্যাজিকে আবাহনীকে হারাল মোহামেডান

রুমেল খান

প্রকাশিত: ০০:৩৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

দিয়াবাতের ম্যাজিকে আবাহনীকে হারাল মোহামেডান

বিপিএলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে গোলের পর মধ্যমণি সুলেমান দিয়াবাতেকে ঘিরে মোহামেডানের উদ্যাপন

হোম ভেন্যুতে ফেভারিট থাকে স্বাগতিক দলই। শনিবার সেটাই হয়েছে। জিতেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবই। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফুটবলে তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়েছে। তবে বিস্তর ঘাম ঝরিয়ে। এদিকে ওয়ান্ডারার্সকে হারিয়ে বড় জয় কুড়িয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাব। কুমিল্লার ভাষা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আবাহনী লিমিটেড ঢাকাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে মোহামেডান।

আর গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে পুলিশ। আল আমিন দুটি এবং দিপক রনি ও কিরমানে একটি করে গোল করেন। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে পুলিশ, সমান ম্যাচে তলানীতে পয়েন্ট না পাওয়া ওয়ান্ডারার্স। এছাড়া কিংস এ্যারেনায় বসুন্ধরা কিংস ৪-১ গোলে হারায় রহমতগঞ্জকে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট কিংসের। সমান ম্যাচে রহমতগঞ্জের সংগ্রহ সমান পয়েন্ট।
এক সময় সাদা-কালো বনাম আকাশী-হলুদের লড়াইয়ে জিতত দ্বিতীয় দলটিই। তবে এখন দৃশ্যপট ভিন্ন। বিদেশীহীন আবাহনীকে হারিয়ে উৎসব করেছে মোহামেডানই। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানই তা বলে দেয়। সবশেষ দুই দলের পাঁচ খেলায় (গতকালের ম্যাচসহ) মোহামেডান জয় পেয়েছে চারটিতে। একটি ম্যাচ ড্র। গত লিগের প্রথম পর্বে আবাহনীর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছিল মোহামেডান। দ্বিতীয় লেগে ২-১ গোলে জয়। গত বছরের ৩০ মে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে কুমিল্লার মাঠে ৪-৪ শেষে টাইব্রেকারে জেতে মোহামেডান।
আরও একবার ধানম-ির দলটিকে হারিয়ে উল্লাস করল ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’ বাহিনী। জয়ের নায়ক মালির ফরোয়ার্ড ও অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতে। কিংসের বিপক্ষে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন দিয়াবাতে। এই জয়ে ৩ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এলো মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটি। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে চারে আবাহনী। এটা তাদের চলমান লিগে প্রথম হার। 
দেশের ফুটবলে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বির লড়াই দেখতে দুই দলের শত শত সমর্থক হাজির হয়েছিলেন মাঠে। ‘আমাদের রক্তের গ্রুপ মোহামেডান পজিটিভ’ লেখা ব্যানার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন সাদা-কালো সমর্থকরা। স্মোক ফ্লোয়ারও ছড়িয়েছেন। আবাহনীর আকাশী হলুদ পতাকা নিয়েও উত্তেজনা ছিল গ্যালারিতে। ম্যাচের শেষদিকে এসে আবাহনী চেপে ধরেছিল মোহামেডানকে। হার এড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা।

কিন্ত ভাগ্য সহায় হয়নি। অন্তিম সময়ে জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। তাই দিয়াবাতের সেই প্রথমার্ধে দেওয়া গোলই গড়ে দেয় পার্থক্য। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিকে হারিয়ে জিতে যায় মোহামেডান। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে সতীর্থের ক্রসে ৬ গজের মধ্যে লাফিয়ে উঠে দিয়াবাতে হেডে জাল কাঁপান। এই যাত্রায় আবাহনীর গোলকিপার মিতুল মারমা কিছুই করতে পারেননি।
বিদেশী খেলোয়াড়দের ছাড়া আবাহনী কতটুকু প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারে, সেটাই দেখার ছিল। মাঠে আবাহনীকে আগ্রাসী খেলা খেলতে দেয়নি মোহামেডান। চার বিদেশী নিয়ে অধিকাংশ সময়জুড়ে চাপে রাখে আকাশী-নীল জার্সিধারীদের। দ্রুত প্রতিআক্রমণ নির্ভর খেলতে চাইলেও মারুফুল হকের দল সুযোগ পেয়েছে কমই। ম্যাচের ৮০ মিনিট খেলেছে মোহামেডান। তবে শেষ ১০ মিনিট দুর্দান্ত খেলেছে আবাহনী।

এর পরও সাদা-কালোদের বক্সে বল ঘোরাফেরা করলেও আবাহনী হার এড়ানোর মতো কিছু করতে পারেনি। শেষদিকে এসে আবাহনী চেপে ধরেছিল মোহামেডানকে। হার এড়ানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হলে যা হয়। জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। তাই সুলেমান দিয়াবাতের সেই প্রথমার্ধে দেওয়া গোলই গড়ে দেয় পার্থক্য।

×