চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
আরও একবার মাঠের বাইরের ক্রিকেটে ইন্ডিয়ান বোর্ডের (বিসিসিআই) দাদগিরির কাছে মাথা নত করল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)! হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনে মোড়ল দেশটির সঙ্গে সমঝোতায় বাধ্য হলো তারা। এর আগে গত এশিয়া কাপে পাকিস্তানে না গিয়ে ভারত নিজেদের ম্যাচগুলো খেলেছিল শ্রীলঙ্কায়। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তারা নিজেদের ম্যাচগুলো খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) যে এবার পুরোপুরি হেরে গেল সেটি বলা যাচ্ছে না। বিশ্বস্ত সুত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, হাইব্রিড মডেল মেনে নেওয়ার বিনিময়ে পাকিস্তানের দেওয়া শর্তও পূরণ হচ্ছে। ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে না পাকিস্তান ক্রিকেট দল। লিগ পর্যায়ে নিজেদের ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কার কলম্বোয়।
উল্লেখ্য রাজনৈতিক বৈরিতায় প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ভারত-পাকিস্তান দিপক্ষীয় ক্রিকেট সিরিজ বন্ধ রয়েছে। এখন কেবল আইসিসি আর এসিসির টুর্নামেন্টেই দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। পাকিস্তান গত এশিয়া কাপের আয়োজক হলে সেখানেও বাধা হয়ে আসে ভারত। কিছুতেই শত্রুদেশটিতে যায়নি তারা। ফলে অভিনব হাইব্রিড মডেলে তাদের ম্যাচগুলো হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়।
গত বেশ কয়েক বছর ধরে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো এলিট দলগুলো পাকিস্তানের মাটিতে দিপক্ষীয় সিরিজ খেললেও ভারত তাদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। কিছুতেই ক্রিকেটারদের পাকিস্তানের মাটিতে খেলার অনুমতি দেয়নি দেশটির সরকার। তাতে করে পাকিস্তানও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
পাকিস্তান ট্রিবিউনের খবর, বিসিসিআইয়ের ভারত ক্রিকেট দলকে পাকিস্তানে না পাঠানো এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ দুবাইয়ে খেলতে চাওয়ার বিনিময়ে পিসিবি পাকিস্তান দলের ভারতে না যাওয়ার যে শর্ত দিয়েছে, ২০২৭ পর্যন্ত তা মেনে নিচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও।
২০২৬ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করবে। এই টুর্নামেন্টে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচসহ পাকিস্তানের সব ম্যাচ হবে শ্রীলঙ্কায়। আগামী বছরের সেপ্টেম্বর–অক্টোবরে ভারতে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ হওয়ার কথা রয়েছে, এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের ম্যাচ আয়োজনের জন্য বিকল্প ভেন্যু নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।
পিসিবি হাইব্রিড মডেল মেনে নেওয়ায় ছেলেদের ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তো পাকিস্তান দল কলম্বোয় খেলবেই, সেই সঙ্গে ২০২৭–৩১ সময়ে পাকিস্তানকে মেয়েদের একটি আইসিসি টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগও দেওয়া হবে। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কিছু ম্যাচ দুবাইয়ে আয়োজন করার কারণে বিশেষভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবে না পিসিবি।
হাইব্রিড মডেলের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আয়োজক স্বত্ব থাকবে পিসিবিরই। আমিরাতে হবে ভারতের গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ, একটি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। আর এক সেমিফাইনালসহ মোট ১০ ম্যাচ আয়োজন করবে পাকিস্তান। অবশ্য ভারত যদি সেমিফাইনালে বা ফাইনালে না ওঠে, সে ক্ষেত্রে এই দুটি ম্যাচও হবে পাকিস্তানে।
ভারত ও পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, খুব দ্রুতই আইসিসি, বিসিসিআই ও পিসিবির ভার্চুয়াল মিটিংয়ে এ বিষয়ে চৃড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সুচি চুড়ান্ত হবে। পাকিস্তানের মাটিতে আগামি ফেব্রুয়ারি-মার্চে হওয়ার কথা ওয়ানডে ফরম্যাটে আট দলের শ্রেষ্ঠত্বের এ আসর।
মিরাজ/ আর কে