![ছক্কার রাজা মাহমুদুল্লাহ ছক্কার রাজা মাহমুদুল্লাহ](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/25-2412131808.jpg)
.
আগামী ফেব্রুয়ারিতেই বয়স ৩৯ হবে। ইতোমধ্যেই টেস্ট ও টি২০ থেকে অবসরে গেছেন তিনি। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় হয়তো আগামী ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরই ওয়ানডেকেও বিদায় জানাবেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তার আগে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩ ফিফটিতে করেছেন ১৯৬ রান যা তার ক্যারিয়ারের সেরা পারফর্ম্যান্স কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে। এমন পারফর্ম্যান্সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ৩ ফরম্যাট মিলিয়ে চতুর্থ বাংলাদেশী হিসেবে ১১ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। এই সিরিজেই ওয়ানডেতে ছক্কার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন এবং এখন ১০৭টি ছক্কা নিয়ে বাংলাদেশের সেরা তিনি। ৩ ফরম্যাট মিলিয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ২০০ ছক্কার মাইলফলকও পেরিয়েছেন এই সিরিজে। এই সিরিজ শুরুর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা সর্বশেষ ম্যাচেও ৯৮ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদুল্লাহ। টানা ৪ ফিফটি হাঁকিয়ে তিনি যেমন তুঙ্গে, উল্টো পরিস্থিতি লিটন কুমার দাসের। তিনি সর্বশেষ ৭ ওয়ানডেতে একবারও দুই অঙ্কে পৌঁছুতে পারেননি।
স্বল্প পরিসরের ক্রিকেটে একটানা ব্যাট হাতে ব্যর্থ সময় কাটাচ্ছেন লিটন। বিশেষ করে ওয়ানডেতে চরম বাজে সময় কাটাচ্ছেন এ ডানহাতি ব্যাটার। সর্বশেষ ৭ ওয়ানডেতে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬, ১*, ০, ০, ২, ৪ ও ০ রান। সর্বশেষ ফিফটি করেছেন গত বছর অক্টোবরে ভারত সফরে পুনেতে। তারপর ১৩ ইনিংস তার ব্যাট হাতে রান খরা যাচ্ছে। এ কারণে তার ব্যাটিং পজিশনও বদলেছে। ৪ নম্বরেও ব্যাট করেছেন আর ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ৩ ম্যাচেই ওয়ানডাউনে নেমেছেন। লিটনের ব্যর্থতার মাঝে ব্যাট হাতে ঝলক দেখিয়ে যাচ্ছেন মাহমুদুল্লাহ। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে করেন ৪৪ বলে ৩ চার ও ৩ ছয়ে অপরাজিত ৫০, দ্বিতীয় ম্যাচে ৯২ বলে ২ চার ও ৪ ছয়ে ৬২ এবং সর্বশেষ ৬৩ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৮৪। ১৯৬ রান করেছেন এই সিরিজে। দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক ৩৪৯ রানের রেকর্ড ইমরুল কায়েসের। তিনি ২০১৮ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের সিরিজে সেই কীর্তি গড়েন। ২০২১ সালে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১৪৮ রানই ছিল মাহমুদুল্লাহর সেরা। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সফরে আসা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের সিরিজে করেছিলেন ১৭৯ রান।
সবমিলিয়ে ৩ ম্যাচে ১১ ছক্কা হাঁকিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। এই সিরিজেই ওয়ানডেতে তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে ছক্কার শতক হাঁকিয়েছেন তিনি। ২৩৮ ওয়ানডেতে এখন সর্বাধিক ১০৭টি ছক্কা তাঁর। অর্থাৎ বাংলাদেশের ছক্কার রাজা হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। তামিম ইকবাল ২৪৩ ওয়ানডেতে ১০৩টি ও মুশফিকুর রহিম ২৭২ ওয়ানডেতে ১০০ ছক্কার মালিক। তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অবশ্য সবার আগে ২০০ ছক্কার মাইলফলক মাহমুদুল্লাহ পেরিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতেই। ওয়ানডে, টেস্ট ও টি২০ মিলিয়ে একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে সেই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। এখন ৩ ফরম্যাটে ৪২৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৪৩২ ইনিংস ব্যাট করে মাহমুদুল্লাহর ছক্কা ২০৮টি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিমের ছক্কা ১৮৮টি। তিনি ৩৮৭ ম্যাচে ৪৪৮ ইনিংস ব্যাট করেছেন। দুই দলের মধ্যে হওয়া ওয়ানডে প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক ২৭ ছক্কাও এখন মাহমুদুল্লাহর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৪ ইনিংস ব্যাট করেছেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে এখন ক্রিস গেইল। তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে ২২ ইনিংস ব্যাট করে ২০ ছক্কা হাঁকিয়েছেন। মুশফিক ১৫ হাজার ৩০০, তামিম ১৫ হাজার ১৯২ ও সাকিব আল হাসান ১৪ হাজার ৭৩০ রান করেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এখন ১১ হাজার পেরিয়ে মাহমুদুল্লাহর রান ১১,০৪৩।