নাহিদ রানা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ১৫ বছর আগে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিন্তু এরপর ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২২ সালে সফর করে সবমিলিয়ে ৬ টেস্ট খেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। এবারও অ্যান্টিগা টেস্টে বিপর্যস্ত হয়ে বড় হার দেখেছে তারা। কিন্তু জ্যামাইকার কিংস্টনে ঐতিহাসিক ব্যাপার ঘটতে চলেছে। জয়ের আশা ভালোভাবে জেগে উঠেছে। কারণ স্যাবিনা পার্কে গতির ঝড় তুলে স্বাগতিক ক্যারিবীয়দের রীতিমতো ভড়কে দিয়েছেন ফাস্ট বোলার নাহিদ রানা। ক্যারিয়ারের মাত্র ৬ষ্ঠ টেস্ট খেলতে নেমে এ গতিময় বোলার প্রথমবার পেয়েছেন ইনিংসে ৫ উইকেটের দেখা।
তাতেই প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পরও বাংলাদেশ পেয়েছে ১৮ রানের লিড। মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংস। নাহিদ ক্যারিয়ারের ১০ম ইনিংসে এসে ৫ উইকেটের দেখা পান ৬১ রান খরচায়। অধিকাংশ ডেলিভারি ১৫০ কিলোমিটার বেগের আশপাশেই ছিল নাহিদের। তাই স্বাগতিক উইন্ডিজের ধারাভাষ্যকাররাও প্রশংসা করেছেন এই ২২ বছর বয়সী তরুণের। পরে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান তুলে ২১১ রানের লিডও নিয়েছে বাংলাদেশ।
২০০৪ সালে প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে সেন্ট লুসিয়ায় ড্র করে। সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংস শেষে লিড নিতে পেরেছে। এরপর আর ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে কখনোই প্রথম ইনিংসে লিড নিতে পারেনি বাংলাদেশ। এবারও প্রথম টেস্টে অ্যান্টিগায় ২০১ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। জ্যামাইকাতে সিরিজ হার ঠেকানোর ম্যাচেও প্রথম ইনিংসে ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতা- ১৬৪ রানেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। তবে বল হাতে নিয়মিত ভালো করা বাংলাদেশের পেসাররা এবার যেন নিজেদের সেরাটাই দিয়েছেন। প্রথম টেস্টে বিশ্রাম নিয়ে যেন অনেক বেশি চাঙ্গা হয়ে ওঠেন নাহিদ। প্রথম থেকেই তিনি উইকেট তুলে নিয়েছেন দারুণ কিছু ‘এক্সপ্রেস’ ডেলিভারিতে।
দুই ওপেনার মিকাইল লুই, ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও ক্যাভেম হজ আউট হন তার গতিতে। তাই সাবেক উইন্ডিজ তারকা ইয়ান বিশপ ধারাভাষ্যে নাহিদকে বারবার বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ এক্সপ্রেস।’ তার বাউন্সার মিস করে কেমারা রোচ কাঁধে আঘাত পান। পরে তাকে ও শামার জোসেফকে শিকার করে প্রথমবার ৫ উইকেটের দেখা পান নাহিদ। তিনি বলেন, ‘বেশি কিছু চেষ্টা করিনি। শুধু চেষ্টা করেছি, ব্যাটসম্যানকে জায়গা না দিয়ে কিভাবে লাইন টু লাইন বোলিং করা যায় এবং কোন পরিস্থিতিতে কোন ব্যাটসম্যানকে কীভাবে বোলিং করা যায়, সেই বোলিংটা করার চেষ্টা করেছি।’
এরপর সাদমান ইসলাম ৮২ বলে ৪৬ করলেও শাহাদাত হোসেন দিপু ২৬ বলে ২৮, মেহেদি হাসান মিরাজ ৩৯ বলে ৪২, লিটন দাস ৩৪ বলে ২৫ রান করেন। ফলে তৃতীয় দিনশেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান করেছে বাংলাদেশ। ২১১ রানের লিড নিয়ে আশায় আছে ১৫ বছর পর আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জেতার।