রেকর্ড গড়া বোলিংয়ে জেডেন সিলসের ইতিহাস
অ্যান্টিগায় একাদশের বাইরে থাকা সাদমান ইসলাম জ্যামাইকায় জায়গা ফিরে পেয়েই চমৎকার ব্যাটিং উপহার দিলেন। ভেজা মাঠে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে খেলা হয়নি প্রথম দুই সেশন। শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে দুইবার জীবন পেয়ে শেষ পর্যন্ত পঞ্চাশে পা রেখে অপরাজিত ছিলেন বাঁহাতি এ ওপেনার। দ্বিতীয় দিনে আরেকটি ব্যাটিং ভরাডুবির পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেছে ১৬৪ রানে। সাদমান একাই করেছেন ৬৪। চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে এখনো পর্যন্ত তিন ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটিই।
এদিকে মিতব্যয়ী বোলিংয়ে ইতিহাস গড়েছেন ক্যারিবিয়ান পেসার জেডেন সিলস (১৫.৫-১০-৫-৪)। বোলিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটাও মন্দ হয়নি। ১ উইকেটে ৭০ রান তুলতে উইন্ডিজকে খেলতে হয়েছে ৩৭ ওভার। মিকাইল লুইসকে ফিরিয়েছেন নাহিদ রানা। ভাগ্য পক্ষে থাকলে উইকেট পেতে পারতেন হাসান মাহমুদ আর তাসকিন আহমেদও।
১৩৭ বলে ৫ চার ও ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রান করে শামারা জোসেফের বলে উইকেটের পেছনে জাশুয়া দ্য সিলভাকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় সাদমানের ২০৭ মিনিটের লড়াই। ‘প্রথম ম্যাচে একটু অসুস্থ ছিলাম। এই ম্যাচের আগে প্রস্তুতি অনেক ভালো নেওয়ার চেষ্টা করেছি, যাতে দলকে ভালো একটা শুরু এনে দিতে পারি। নিজের সেরাটা দিয়েছি, চেষ্টা করেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আরও বড় করতে পারিনি (ইনিংস)। বড় করতে পারলে দলের জন্য আরও ভালো হতো। আশা করব, পরের ইনিংসে আরও ভালো করতে পারব।’ দিন শেষে বলছিলেন এ ওপেনার।
অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান। ১৩০ মিনিট ক্রিজে থেকে ৬৬ বলে তাইজুল ইসলামের ১৬ রানের ইনিংসটিও ছিল বেশ সংগ্রামী। তাইজুল ফেরার পরই শেষ ৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৭১.৫ ওভারে ১৬৪ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। মন্থর দিনে দুই দলের ৭৮.৫ ওভারে রান ওঠে কেবল ১৬৫। সকালে শামার জোসেফের দুর্দান্ত এক স্পেল ভেঙে দেয় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের মেরুদ-। ইনিংসজুড়ে অসাধারণ বোলিং করে বাংলাদেশকে চাপে রাখেন সিলস। ইনিংস শেষে তার বোলিং ফিগার অবিশ্বাস্য, ১৫.৫-১০-৫-৪! ইনিংসে অন্তত ১৫ ওভার বোলিং করা পেসারদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং এটিই।
সিলসের ইকোনমি ০.৩১৬। একবিংশ শতাব্দীর টেস্টে এক ইনিংসে এটাই সবচেয়ে কিপ্টে বোলিং। এর আগে এই রেকর্ডের মালিক ছিলেন উমেশ যাদব। ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২১ ওভারের স্পেলে ভারতীয় পেসারের ইকোনমি ছিলো ০.৪২৯। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অবশ্য সিলসের এই বোলিং ফিগার বেশ পিছিয়ে। শীর্ষে রমেশচন্দ্র নাদকার্নি। ১৯৬৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভার প্রতি মাত্র ০.১৫ রান করে দিয়েছিলেন এই ভারতীয় স্পিনার।
৩২ ওভার বল করে মেডেন নিয়েছিলেন ২৭টি। রান দিয়েছিলেন মাত্র ৫। নাদকার্নি তালিকার তিনেও আছেন। দুইয়ে আছেন সিলসেরই দেশের কিংবদন্তি স্যার গ্যারি সোবার্স। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার ১৯৫৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ১৪ ওভার বল করে ১১টিই মেডেন আদায় করেছিলেন!