হ্যারি ব্রুকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি
হ্যারি ব্রুকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে উপযুক্ত জবাব দিচ্ছে ইংল্যান্ড। গ্লেন ফিলিপসের (৫৮*) হাফ সেঞ্চুরি আর কেন উইলিয়ামসনের (৯৩) সেঞ্চুরির আক্ষেপ সঙ্গী করে প্রথম ইনিংসে ৩৪৮ রানের ‘চ্যালেঞ্জিং’ স্কোর গড়ে অলআউট হয়েছিল কিউইরা। জবাবে ৫ উইকেটে ৩১৯ রান তুলে শুক্রবার দ্বিতীয় দিন শেষ করা সফরকারীরা পিছিয়ে মাত্র ২৯ রানে। স্বাগতিক ফিল্ডারদের বদান্যতায় চার-চারবার লাইফ পেয়েছেন ব্রুক; তাতে কি, ক্যাচ মিস তো খেলারই অংশ!
সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন হার্ডহিটার এ উইলোবাজ। ১৬৩ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ১৩২ রানে। ৩৭ রান নিয়ে তার সঙ্গে আছেন অধিনায়ক বেন স্টোকস। প্রায় সাড়ে তিনশ’ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে নেমে অতিথিদের ভালোই চেপে ধরেছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু ক্যাচ মিসের মহড়ায় আলগা হয়েছে ফাঁস। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইংলিশরা এখন লিড নেওয়ার পথে।
২২ টেস্টের ক্যারিয়ারে ব্রুকের সপ্তম সেঞ্চুরি এটি, এর মধ্যে দেশের বাইরেই ৬টি। নিউজিল্যান্ডে তিন টেস্টে দুটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে তার গড় এখন ১১৫.২৫! তার ইনিংস শেষ হতে পারত অনেক আগেই। সুযোগ তিনি দিয়েছেন বারবার। বেঁচে গেছেন ১৮, ৪১, ৭০ ও ১০৬ রানে। ছয়ে নেমে অলিভার পোপ করেছেন ৯৮ বলে ৭৭। ব্যতিক্রমী হিসেবে তিনিই জীবন পাননি। বরং অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ নিয়ে তাকে ফিরিয়েছেন গ্লেন ফিলিপস। তবে ২৩ রানে জীবন পেয়ে ৪৬ রান করেছেন বেন ডাকেট। ৩০ রানে রক্ষা পেয়ে ৩৭ রানে অপরাজিত রয়ে গেছেন বেন স্টোকস।
কিউই অধিনায়ক টম লাথাম একাই ছেড়েছেন তিনটি ক্যাচ। একটি করে ক্যাচ ছেড়েছেন ফিলিপস, ডেভন কনওয়ে ও কিপার টম ব্লান্ডেল। সকালে ৮ উইকেটে ৩১৯ রান নিয়ে দিন শুরু করে নিউ জিল্যান্ড। ৮ ওভারে ২৯ রান যোগ করে শেষ হয় তাদের ইনিংস। ৪ উইকেট নিয়েছেন ব্রাইডন কার্স। মেঘলা আকাশের নিচে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ডও বিপাকে পড়ে যায়। সবুজাভ উইকেটে বেশ মুভমেন্ট আদায় করে নেন কিউই পেসাররা। দলীয় ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারায় ইংলিশরা। জ্যাক ক্রাউলি, জ্যাকব বেথেল ও জো রুট আউট হন ০, ১০ ও ০ রানে।
১৫০তম টেস্ট খেলতে নামা রুট নাথান স্মিথের করা স্টাম্পের বল টেনে এনে বোল্ড হন। অসাধারণ ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হলেন ৩৯ ইনিংস পর। ৭১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকছে ইংল্যান্ড। ক্যাচগুলো না ছাড়লে বিপদ আরও বাড়ত। এত সুযোগ ব্রুকের মতো ব্যাটসম্যান তো কাজে লাগাবেনই! তিনি ফিফটি করেন ৬৫ বলে। টেস্ট ক্রিকেটে ২ হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি। ইনিংসের হিসেবে এই মাইলফলকে টেস্ট ইতিহাসের অষ্টম দ্রুততম তিনি (৩৬ ইনিংস)। তবে বলের হিসেবে তিনি দ্বিতীয় দ্রুততম। ২ হাজার ৩০০ বল খেলেই ২ হাজার রান হলো তার। সতীর্থ বেন ডাকেটের লেগেছিল ২ হাজার ২৯৩ বল। তিন দফায় জীবন পেয়ে ব্রুকের শতরান আসে ১২৩ বলে।
সেঞ্চুরির পরপর আরেকবার বেঁচে যান তিনি। পোপের সেই সৌভাগ্য হয়নি। টিম সাউদির বলে কাট করেছিলেন, দারুণ গতিতে ছুটে যাচ্ছিল বল। গালিতে চোখের পলকে অনেকটা লাফিয়ে পুরো শরীর শূন্যে ভেসে এক হাতে অবিশ্বাস্য রিফ্লেক্সে ক্যাচ নেন ফিলিপস। থামে ১৮৮ বলে ১৫১ রানে রানের জুটি।