অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে উইকেট লাভের পর বাংলাদেশের যুবাদের আনন্দ-উল্লাস
পুরনো-নতুনের সমন্বয়ে প্রতিশ্রুতিশীল একটি দল। গতবার এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলকে নিয়ে তাই এবারও স্বপ্নটা বড়। সেই স্বপ্নের শুরুটা হয়েছে জয় দিয়ে। অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম যুব ওয়ানডে অভিষেকেই হাঁকিয়েছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। শুক্রবার দুবাইয়ে তার ১০৩ রানের দারুণ ইনিংসে ভর দিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে।
বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের শুভ সূচনা হয়েছে আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৪৫ রানে হারিয়ে। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৮ রান তোলে। পরে বাংলাদেশী বোলারদের দারুণ নৈপুণ্যে আফগানিস্তানের যুবারা ৪৭.৫ ওভারে ১৮৩ রানেই গুটিয়ে যায়। এদিন ১১তম যুব এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই জিতেছে বাংলাদেশ। শারজায় হওয়া অপর ম্যাচে নেপাল অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৫৫ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
আগের এশিয়া কাপ খেলা ৫ জন ছিলেন। সঙ্গে অধিনায়ক আজিজুলসহ ৬ জনের যুব ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে। সেই দল নিয়ে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আফগান যুবাদের দলেও ৮ জনের অভিষেক হয়েছে এদিন। ওপেনার জাওয়াদ আবরার (০) সাজঘরে ফেরেন প্রথম ওভারেই। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে হাল ধরেন কালাম সিদ্দিকী এলিন ও অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। উভয়ে অর্ধশতক হাঁকান। কালাম ১১০ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে ৬৬ রানে বিদায় নিলে ১৪২ রানের বিশাল জুটি ভাঙে। দ্বিতীয় উইকেটে হওয়া এই বড় জুটিতেই লড়াইয়ের পুঁজি গড়ার ভিত পায় বাংলাদেশের যুবারা।
যদিও পরের দিকে ব্যাটাররা ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু অধিনায়ক আজিজুল একাই আফগান বোলারদের হতাশা উপহার দিয়েছেন। তিনি যুব ওয়ানডে অভিষেকেই পেয়ে যান সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের যুব ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরির গৌরব দেখান তিনি। ১৩৩ বলে ৮ চার, ৪ ছক্কায় ১০৩ রানে যখন ৪৭তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন তখন দলের রান দুইশ’ পেরিয়েছে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৮ রান করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আফগানিস্তানের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন আব্দুল আজিজ, নুরিস্তানী ওমরজাই ও খাতির স্ট্যানিকজাই।
জবাব দিতে নেমে প্রথম থেকেই বাংলাদেশী বোলারদের তোপে রান তুলতে হিমশিম খেয়েছে আফগানিস্তানের ব্যাটাররা। নবম ওভারে দলীয় ২১ রানে উজাইরউল্লাহ নিয়াজাই মারুফ মৃধার পেসে সাজঘরে ফেরেন ১৯ বলে ৮ রান করে। এরপর মাহবুব খান ও ফয়সাল খান ৪৫ রানের জুটি গড়ে আফগানদের বিপদ কাটানোর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তবে রানের গতি বাড়াতে পারেননি তারা। রাফি উজ্জামান রাফির বলে ৫৩ বলে মাত্র ১৬ রান করে বিদায় নেন মাহবুব। তৃতীয় উইকেটে ফয়সাল ও নাসির খান ৫০ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন। আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল তখনো জয়ের আশায় ছিল। কিন্তু ৫৮ বলে ৬ চার, ১ ছয়ে ৫৮ রান করে ফয়সাল সাজঘরে ফেরেন আল ফাহাদের পেসে এলবিডব্লিউ হয়ে। এরপর আর কেউ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
পরের দিকে নাসির খান ৬০ বলে ১ চারে ৩৪, বরকত ইব্রাহিমজাই ৩৮ বলে ১ চারে ১৯ ও নাজিফউল্লাহ আমিরী ১৯ বলে ৩ চারে ১৭ রান করেন। কিন্তু বাকিরা দাঁড়াতেই পারেননি। রান তোলার চাপে শেষ ৬টি উইকেট আফগান যুবারা হারিয়েছে মাত্র ২৪ রানে। শেষ পর্যন্ত ৪৭.৫ ওভারে ১৮৩ রানে গুটিয়ে যায় আফগানরা। পেসার ইকবাল হোসেন ইমন ও আল ফাহাদ ৩টি করে এবং মারুফ ২টি উইকেট নেন।