ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সেরা গোলরক্ষকই ডাক পান না জাতীয় দলে!

প্রকাশিত: ১৪:৫৭, ২১ নভেম্বর ২০২৪

সেরা গোলরক্ষকই ডাক পান না জাতীয় দলে!

গোলরক্ষক আহসান হাবিব বিপু। ছবি: সংগৃহীত

গত মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সেরা পারফর্মারদের পুরস্কৃত করেছে বাফুফে। বাফুফের বিচারে সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ এফসিতে খেলা আহসান হাবিব বিপু। লিগে যিনি সেরা তিনি স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় দলে থাকবেন। অথচ বিপু মার্চ-নভেম্বর উইন্ডো কোনো সময়ই জাতীয় দলে ডাক পাননি। 

 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতারই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিল না। বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটি সেরা খেলোয়াড়, সর্বোচ্চ গোলদাতা, সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার প্রদান করে উৎসাহ ও আকর্ষণ সৃষ্টির পাশাপাশি বিতর্কের জন্মও দিয়েছে। বিশেষ করে গোলরক্ষক মনোনয়নে জাতীয় দল চরম প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে পড়েছে। 

সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুর কাছে বিষয়টি দ্বান্দ্বিক সংকটের মতো লাগছে বলে জানান।তিনি বলেন, ‘লিগের পারফরম্যান্স দেখে জাতীয় দল গঠন হয়। একজন লিগের সেরা পারফর্মার অবশ্যই জাতীয় দলে থাকবেন। আবার জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়া একজন সেরা হতে পারে না।’ 

বাস্তবিক অর্থে বিপুকে সেরা মনোনয়নের মাধ্যমে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ অথবা বাফুফের বিচারকমন্ডলীর মধ্যে এক পক্ষের ভুল স্পষ্ট। কারণ জাতীয় দলেই ডাক না পাওয়া একজন লিগে সেরা গোলরক্ষক হতে পারেন না আবার তিনি যদি আসলেই সেরা গোলরক্ষক হন তাহলে জাতীয় দলে না ডেকে কোচরা ভুল করেছেন। 

আহসান হাবিব বিপু ঘরোয়া ফুটবলে বেশ পরিচিত গোলরক্ষক। ঢাকা মোহামেডানের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন। পুলিশ এফসিতেও নিয়মিত খেলেছেন। সবারই স্বপ্ন থাকে দেশের জার্সিতে খেলার। খেলা তো দূরে কথা, বিপু ডাকই পান না। লিগের সেরা গোলরক্ষক হওয়ার পর তার ডাক না পাওয়ার বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে জোরেশোরে। এ নিয়ে তার মন্তব্য খানিকটা আক্ষেপ জোড়ানো, ‘লিগের সেরার স্বীকৃতি পেয়ে ভালো লাগছে। জাতীয় দলের বিষয়টি সম্পূর্ণ কোচের। হয়তো কোচের দৃষ্টিতে আমি যোগ্য নই।’ 

বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটির পক্ষ থেকে সেরা ফুটবলার, গোলরক্ষক নির্বাচন করা হলে গতকাল অনুষ্ঠানের পরপরই বিচারক প্যানেলে কারা আছেন বিষয়টি জানতে চাইলে লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ও ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান বিষয়টি খোলাসা করেননি। ফলে কারা-কোন আঙ্গিকে সেরাদের বেছে নিয়েছেন এই প্রশ্নের উত্তর অজানাই রয়ে গেছে।

জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলার ও সাবেক গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য্য যখন কোচ ছিলেন একাডেমী নিয়েও কাজ করেছেন। আসিফ, মাহিনের মতো তরুণ গোলরক্ষক উঠে এসেছিল। গত বছর থেকে গোলরক্ষক কোচ নিয়ে বাফুফে উদাসীন। হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার পছন্দ অনুযায়ী স্প্যানিশ মিগেল এই বছর কাজ করেছেন গোলরক্ষক কোচ হিসেবে। জাতীয় দল ডাকার পর অনুশীলনে এসেছেন আবার খেলা শেষে ফিরেছেন। অথচ তিনি বছরব্যাপী গোলরক্ষকদের পারফরম্যান্স স্বচক্ষে দেখেন না।

বিপ্লব ভট্টাচার্য্য আরেকটি বিষয় সামনে এনেছেন। তার মতে, ‘গোলরক্ষকের প্রকৃত পারফরম্যান্স যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজন গোলরক্ষক কোচ। যিনি ক্লাবের সকল গোলরক্ষকের তথ্য ও পারফরম্যান্স নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন। বাংলাদেশ জাতীয় দলে স্থায়ী গোলরক্ষক কোচই নেই।’ 

এই বিষয়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান সহকারী কোচ হাসান আল মামুন বলেন, ‘এটা আসলেই সত্যি জাতীয় দলে একজন স্থায়ী গোলরক্ষক কোচ দরকার। কোচিং স্টাফের পক্ষ থেকে ফেডারেশনের ম্যানেজম্যান্টের কাছে আমাদের স্থায়ী গোলরক্ষক নিয়োগের অনুরোধ থাকবে।’

সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর উইন্ডোতে স্প্যানিশ গোলরক্ষক কোচ ছিলেন না। সেপ্টেম্বরে ভুটানে বসুন্ধরার গোলরক্ষক কোচ নুরুজ্জামান নয়ন ও নভেম্বর উইন্ডোতে রুপ্না চাকমাদের কোচ উজ্জ্বল ছিলেন জাতীয় দলের দায়িত্বে। ফুটবলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পজিশন গোলরক্ষক। সেই গোলরক্ষক কোচ এখনো অস্থায়ী।

তাবিব

×