.
সতীর্থদের কাঁধে ইমরুল কায়েস, তাকে নিয়ে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেট প্রদক্ষিণ করছেন দলের সবাই। বাউন্ডারি লাইনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে হলো দলের ফটোসেশন, এগিয়ে আসলেন বোর্ড (বিসিবি) কর্তা থেকে শুরু করে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটাররা। সবাই মিলে উদ্যাপন করলেন ইমরুলের লাল বলের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর শেষ মুহূর্তটি। জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন, ২০১৯ সালে ভারত সফরে, কলকাতায় গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্টে। সেই ম্যাচের পর আর কোনো ফরম্যাটেই বাংলাদেশের জার্সিতে সুযোগ হয়নি। লম্বা সময় জাতীয় দলের বাইরে থাকা বাঁহাতি ওপেনার এবার টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিজের শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচটি খেলে ফেললেন ৩৭ বছর বয়সি ইমরুল। বিদায় বেলায় আবেগে ভাসলেন। সিক্ত হলেন সতীর্থদের ভালোবাসায়।
ইমরুলের বিদায়ের দিনে জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) ঢাকা বিভাগের কাছে তার দল খুলনা বিভাগ হেরে গেছে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। তিনি আউট হয়েছেন ১৬ ও ১ রান করে। তাতে কী। আগে থেকেই ঘোষণা ছিল, এটিই তার শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। মাঠে নামার সময় দেয়া হয়েছে স্মারক, ব্যাটিংয়ে নামার সময় প্রতিপক্ষ এবং নিজ দলের খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে দুবার আলাদা করে পেয়েছেন গার্ড অফ অনার। এমনকি ম্যাচ শেষে কাঁধে নিয়ে ঘোরানো হয়েছে স্টেডিয়াম। বাংলাদেশের অন্য কোন ক্রিকেটারের বিদায় বেলায় জোটেনি এতটা সুখ! ভক্তরা বলেন, জাতীয় দলে অবহেলার শিকার হয়েছেন, বিশ্লেষকদের মতে অবশ্য, প্রতিভার সঠিক বাস্তবায়ন করতে পারেননি, তবে আফসোস নেই ইমরুলের, ‘আমার হয়তো আরও ভালো টেস্ট ক্যারিয়ার হতে পারত। তবে যেটা হয়নি সেটা নিয়ে এখন আর আফসোস মনে করি না। যা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ্?।’ বলেন তিনি। কিছুটা শান্ত স্বভাবের এ ক্রিকেটার এরপর যোগ করেন, ‘২০০৬ সালে যখন আমার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়, আমি চিন্তা করিনি যে বাংলাদেশ দলের হয়ে এতগুলো টেস্ট খেলতে পারব। আর সব শেষে এখন যেভাবে বিদায় নিলাম, আমি খুব খুশি যে বাংলাদেশের হয়ে ৩৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পেরেছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।’
বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করাই ইমরুলের বড় প্রাপ্তি, ‘এক টেস্ট হোক পঞ্চাশ টেস্ট বা একশ টেস্ট খেলেন, বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করাই বড়। প্রায় ১০-১২ বছর দলের সঙ্গে থেকেছি, খেলেছি বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন দেশে। এটা আমার জন্য অনেক গর্বের। চেষ্টা করেছি ব্যাটিং করে হোক বা কিপিং করে হোক, দলের প্রয়োজনে অবদান রাখতে।’