.
১৯৭৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে যাত্রা শুরু মালদ্বীপের। এই ৪৫ বছরে তারা এ পর্যন্ত যে ২২২টি ম্যাচ খেলেছে, তার মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। লাল-সবুজ বাহিনীর বিরুদ্ধে তারা ১৯৮৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ... এই ৪০ বছরে যে ১৯টি ম্যাচ খেলেছে, তার মধ্যে ৭টি ম্যাচে জিতেছে, আর ৮টি ম্যাচে হেরেছে। বাকি ৪টি ম্যাচে ড্র করেছে।
১৬৩ ফিফা র্যাঙ্কিংধারী ও ‘রেড ¯œ্যাপার্স’ খ্যাত হাজার দ্বীপের দেশটির জন্য সপ্তম ও সর্বশেষ জয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা ১৮৫ ফিফা র্যাঙ্কিংধারী ও ‘দ্য বেঙ্গল টাইগার্স’ খ্যাত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাদের সপ্তম জয়টি ছিল তাদেরই মাটিতে প্রথম জয়। আর এই জয়টি এসেছে গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায়। নভেম্বরের উইন্ডোর ফিফা টায়ার-১ ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারায় স্বাগতিক দলকে। মালদ্বীপের আরেকটি কৃতিত্ব হলোÑ গত প্রায় ১৩ মাস তার কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলেনি। তারপরও দুর্দান্ত খেলে প্রতিপক্ষকে লজ্জার হার উপহার দেয় তারা। আজ শনিবার একই ভেন্যুতে একই প্রতিপক্ষে বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ও শেষ আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হবে তারা। ম্যাচটি যথারীতি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। এই ম্যাচে আজ সফরকারী মালদ্বীপকে হারিয়ে স্বভাবতই প্রতিশোধ নিতে চাইবে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের হারের হতাশার স্মৃতি ভুলে নিজেদের ভুলগুলো শুধরে যে কোনো মূল্যে এই ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়তে চায় জাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা।
প্রীতি ম্যাচ হলেও যেহেতু এই ম্যাচ দুটি ফিফা টায়ার ওয়ানের অন্তর্ভুক্ত, তাই ম্যাচের ফলাফলের প্রভাব পড়বে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে। এই দুই প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল জিতে র্যাঙ্কিংয়ের উন্নতি করা। কিন্তু প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়া সম্ভব হয়নি। তাই আজ নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ঘরের মাঠের শেষ ম্যাচটা জিততে চায় বাংলাদেশ। এ ছাড়া এই ম্যাচ দুটি দিয়ে এশিয়ান কাপের প্রস্তুতিও সেরে নিতে চাইছে বাংলাদেশ দল। আগামী ৯ ডিসেম্বর এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২০২৫ সালের মার্চ, জুন ও সেপ্টেম্বর উইন্ডোতে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক তপু বর্মণ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এএফসির বাছাইয়ে ভালো করা, নিশ্চিতভাবে সেটা করতে হলে এখানে সেরাটা দিতে হবে। প্রথম ম্যাচে আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিতে চেষ্টা করেছি। এই ম্যাচে জয় দিয়েই আমরা বছরটা শেষ করতে চাই।’
বাংলাদেশ কোচ জাভিয়ের ক্যাবরেরা বলেন, ‘আমি চাই ছেলেরা সমর্থকদের জন্য খেলুক, দায়িত্ব নিয়ে খেলুক এবং আরও ভাল পারফরম্যান্স করুক। গত ম্যাচে অনেকগুলো সুযোগ এসেছিল। কিন্তু আমরা সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। হারলেও ম্যাচ আমরা ভালো খেলেছি। শুধু গোলটাই পাইনি।’
যদিও র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ থেকে ২২ ধাপ এগিয়ে মালদ্বীপ। তবে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ দর্শক সমর্থন-আবহাওয়ার সুযোগ পাবে (যদিও প্রথম ম্যাচে তার ফায়দা নিতে পারেনি)। তারপরও প্রতিপক্ষ দলকে সমীহ করেই বুধবার ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন মোরসালিন-রাকিবরা। কিন্তু তুলনামূলক বেশি আক্রমণ করেও কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পাননি তারা।
মিতুলদের হারে দেশবাসী মুষড়ে পড়লেও নবনির্বাচিত বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল মুষড়ে পড়েননি। বরং ম্যাচের পরদিন দেখা করেছেন বাংলাদেশ দলের ফুটবলারদের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে সকালের নাস্তা করেছেন। অনুপ্রাণিত করেছেন ভালো খেলার। বলেছেন আগের ম্যাচের হারের কথা ভুলে গিয়ে স্বাভাবিক ফুটবল খেলার। এখন দেখার বিষয়, তাবিথের মাধ্যমে উজ্জীবিত হয়ে আজ তপুরা কি মালদ্বীপকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিতে পারেন কি না।