ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

কাবাডির নতুন কমিটি নিয়ে প্রশ্ন ...

প্রকাশিত: ১৯:৫১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

কাবাডির নতুন কমিটি নিয়ে প্রশ্ন ...

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি। অথচ বাস্তবে তার প্রতিফলন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। একদা এশিয়ান গেমসে নিয়মিত পদক পেত বাংলাদেশ জাতীয় কাবাডি দল। অথচ এই ডিসিপ্লিনে জাতীয় দল রীতিমতো দৈন্যতায় ভুগছে! 
গত ৫ আগষ্টে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দেশের পট-পরিবর্তনের পর খেলাটিকে সচল করতে একাট্টা হয়েছিলেন সাবেক তারকা কাবাডি খেলোয়াড়রা। কিন্তু আজগর আলী, আবদুল জলিল, জিয়াউর রহমানদের সেই স্বপ্ন অনেকটাই ধূসর হয়ে যাচ্ছে সদ্য ঘোষিত নতুন অ্যাডহক কমিটির রুপরেখা দেখে। বৃহস্পতিবার ঘোষিত ১৮ সদস্যের কমিটিতে মাত্র দু’জন খেলোয়াড় সুযোগ পেয়েছেন!

প্রত্যেকটি ডিসিপ্লিনে উন্নয়নের জন্য সাবেক খেলোয়াড়দের কমিটিতে আনার বিষয়ে জোর দিয়েছিলেন সার্চ কমিটির সদস্যরা, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা। কিন্তু কাবাডির ক্ষেত্রে হলো তার ঠিক বিপরীত! কাবাডির খেলোয়াড় না হয়েও একদা বিজ্ঞাপন সংগ্রহের কাজে ফেডারেশনে আসা এসএম নেওয়াজ সোহাগকেই করা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক! 

২০১৭ সালে অ্যাডটাচ বিজ্ঞাপনী সংস্থা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন সোহাগ। বছরে খেলা ছাড়াও ৫৩ লাখ টাকা করে ফেডারেশনের ফান্ডে দেওয়ার জন্য চুক্তিভুক্ত হয়েছিলেন তিনি। সেই হিসেবে গত সাত বছরে সাড়ে তিন কোটির এক টাকাও ফেডারেশনে দেননি তিনি! সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিদায়ী ডিআইজি হাবিবুর রহমানের বিশেষ আনুকূল্যে থাকা সোহাগ ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক এবং পরে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সদস্যও হয়েছিলেন। এখন হলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। আট  বছর ধরে দেশি কোচ বাদ দিয়ে বিদেশি কোচ রেখেছেন তিনি। ফলাফল শূন্য! এশিয়ান গেমস ও যুব বিশ্বকাপে ম্যানেজার হয়ে গেলেও পদক আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। 
বিজ্ঞাপনী সংস্থার আড়ালে ফেডারেশনে আধিপত্য বিস্তারের নেপথ্যে এখন সোহাগের লক্ষ্য এশিয়ান কাবাডি ও বিশ্ব কাবাডির দিকে।

সদ্য ঘোষিত এই কমিটি নিয়ে বিস্তর অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগে আরও জানা যায়, সার্চ কমিটি একরকম কমিটি দিলেও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আবার যখন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আসছে, তখন আরেক রকম হয়ে যাচ্ছে কমিটি। এভাবেই সার্চ কমিটির সুপারিশ বদলে যাচ্ছে কমিটি। অভিযোগে আরও জানা যায়, কাবাডিতে অভিজ্ঞ ও যোগ্য খেলোয়াড় ও সংগঠক থাকা সত্বেও এক পক্ষের দেওয়া কমিটিকেই শেষ পর্যন্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে ক্রীড়া পরিষদ। যেখানে জায়গা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতিদের। জায়গায় হয়েছে অযোগ্য সংগঠকদেরও। তাই একপক্ষের এই কমিটি দিয়ে কাবাডির দুর্দশা কাটবে না বলেই মনে করেন কাবাডি সংশ্লিষ্টরা। ফলে এর ভবিষ্যত নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। 
 

রুমেল খান

×