.
সাফল্য না পেলে সম্মাননা পাওয়া যায় না। তবে সফলতা পাওয়া ব্যক্তি বা দলের সবাই যদি হন আর্থিকভাবে অসচ্ছল, তাহলে তাকে বা তাদের সম্মাননা দেয়ার সময় আশাতীত পরিমাণে আর্থিক পুরস্কার দেওয়াটাই সমীচীন। কিন্তু অতীতে দেখা গেছে- বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল কোন শিরোপা বা সাফল্য কুড়িয়ে নেওয়ার পর কিছু প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, সংগঠন বা উচ্চ পর্যায়ের কোন সরকারি কর্মকর্তা হয় তাদের আর্থিক পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি টাকাও দেননি, নয়তো পুরস্কার হিসেবে দিয়েছেন শুকনো ফুলের তোড়া ও নিম্নমানের ক্রেস্ট! এটা এক ধরনের প্রতারণার শামিলই বটে! এমন কান্ড করে সেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলো বিনামূল্যে কোটি টাকার মিডিয়া কাভারেজ নিয়ে লাভবান হয়েছে।
যাহোক, সেসব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর থেকে টনক নড়ে দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। তারা একপ্রকার নিয়ম করে দেয়, কেউ নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা-সম্মাননা জানাতে চাইলে তাদের অবশ্যই আশাতীত আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে এবং দেওয়ার আগে অবশ্যই সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
বাফুফের হুঁশিয়ারিতে কাজ হয়েছে। এখন বাংলার বাঘিনীরা কোনো সাফল্য পেলে তাদের সম্মাননা হিসেবে নিশ্চিতভাবেই টাকা দেওয়া হয়। এই যেমন বৃহস্পতিবারও দেওয়া হলো। সাফজয়ী বাংলার বাঘিনীরা এদিন আরেকটি একটি সম্মাননা লাভ করেন। আর সেটা তাদের দিয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংক। ব্যাংকটি তাদের কার্যালয়ে নারী খেলোয়াড়দের পাশাপাশি কোচ, কর্মকর্তাদের আর্থিক পুরস্কার প্রদান করে। এ সময় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল এবং কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে বাংলাদেশের স্কোয়াডে ছিলেন ২৩ খেলোয়াড়। তারা প্রত্যেকে ৩ লাখ এবং কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তারা এক লাখ করে টাকা পান। ফুটবলারদের তিন লাখের মধ্যে এক লাখ টাকা নগদ চেক বাকি দুই লাখ টাকা উচ্চ সুদে স্থায়ী আমানত করা হয়েছে। আর্থিক পুরস্কার ছাড়াও নারী ফুটবলারদের আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ডও দেয়া হয়েছে।
সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও বাফুফে সদস্য ছাইদ হাসান কানন নারী ফুটবলারদের এই সম্মাননার জন্য প্রয়োজনীয় সমন্বয় করেছেন। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সাবিনারা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে ১ কোটি টাকা পুরস্কার ইতোমধ্যে পেয়েছেন। এরপর পেলেন এই ব্যাংকের পুরস্কার। বিসিবি ২০ লাখ ও বাফুফে দেড় কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।