.
পাকিস্তান- বিশ্ব ক্রিকেটে বড় ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ এক নাম। যাদের নিয়ে পূর্বানুমান অসম্ভব। ঘরের মাটিতে বাংলাদেশের কাছে টেস্ট হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ২-১এ সিরিজ জিতেছিল শান মাসুদের দল। এবার ইতিহাস গড়লেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। রবিবার পার্থে শেষ ওয়ানডেতে ৮ উইকেটের বড় জয়ের পথে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দীর্ঘ ২২ বছর পর সিরিজ জিতল পাকিস্তান। ওয়ানডে ও টি২০ বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর নেতৃত্ব ছাড়েন বড় তারকা বাবর আজম। ভীষণ চাপের মধ্যেই অগোছালো দল নিয়ে প্রথম মিশনেই অবিস্মরণীয় সাফল্য পেলেন রিজওয়ান। শাহীন শাহ আফ্রিদি ও হারিস রউফের পেস-তা-বের মুখে ৩১.৫ ওভারে মাত্র ১৪১ রানে অলআউট হয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ২৬.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। ম্যাচে ২ ও সিরিজে ১০ উইকেট নিয়ে ম্যাচ ও সিরিজসেরা রউফ।
অস্ট্রেলিয়ার মাঠে পাকিস্তান এর আগে সর্বশেষ ২০০২ সালে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল। সেবার প্রথম ম্যাচ হারের পর শোয়েব আখতারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পরের দুই ম্যাচ জিতেছিল তারা। দুই দশকের বেশি সময় পর এবার শোয়েবের ভূমিকায় যেন হারিস রউফ। তিনিও শেষ দুই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে দলের সিরিজ জয়ের নায়ক। সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে ম্যাথু শর্ট ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট নিয়ে রউফই জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই সিরিজে পাকিস্তানের পেসাররা উইকেট নিয়েছেন ২৬টি, যা পাকিস্তানের হয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বোচ্চ। রউফ উইকেট নিয়েছেন ১০টি। তাঁকে সঙ্গ দিয়েছেন অন্য পেসাররাÑ আফ্রিদি নিয়েছেন ৮টি, নাসিম শাহ ৫টি, হাসনাইন ৩টি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে ৪০ উইকেটই নিয়েছিলেন পাকিস্তানের স্পিনাররা। এবার অস্ট্রেলিয়া সিরিজে সব উইকেটই নিলেন পেসাররা। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে এদিন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেছেন আটে নামা শন অ্যাবট। রউফ-আফ্রিদিদের পেস তা-বের মুখে ছয়জন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। এই ম্যাচ তো বটেই, এই সিরিজেই অস্ট্রেলিয়ার কোনো ফিফটি নেই! দলটির ওয়ানডে ইতিহাসে কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে এমন ঘটনা এটাই প্রথম। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হলেও ঘোষণা অনুযায়ী এ দিন বিশ্রামে রাখা হয়েছে স্টিভেন স্মিথ, মারনাস লাবুশেন, প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউডদের।
জীবনে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিতে নেমে জশ ইংলিস করেছেন ৭ রান। মার্কাস স্টয়নিসের ব্যাট থেকে এসেছে ৮ রান। আর ম্যাক্সওয়েল মেরেছেন ডাক। এই সিরিজে হারিস রউফের ৯টি বল খেলেছেন ম্যাক্সওয়েল। আউট হয়েছেন ৩ বারই। অ্যাবটের ৩০-এর সঙ্গে শেষের দিকের ব্যাটসম্যানের অবদানে অস্ট্রেলিয়া ১৪০ রান করতে পেরেছে। অ্যাবট সপ্তম উইকেট জুটিতে জাম্পার সঙ্গে ৩০ রান ও অষ্টম উইকেট জুটিতে স্পেনসার জনসনের সঙ্গে ২২ রান যোগ করেন। এই জুটি দুটি না হলে রান আরও কমও হতে পারত। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানের হয়ে সাইম আইয়ুব ৪২, আব্দুল্লাহ শফিক ৩৭, বাবর অপরাজিত ২৮ ও রিজওয়ান করেন অপরাজিত ৩০ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি উইকেটই নিয়েছেন পেসার ল্যান্স মরিস। এবার তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ, ব্রিসবেনে প্রথমটি বৃহস্পতিবার।