.
শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমবার কোনো জয় পেয়েছে বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে ও টি২০ মিলিয়ে এই ভেন্যুতে ৯ ম্যাচ হারের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ জয়টি এসেছে ৬৮ রানের বড় ব্যবধানে। সেই জয় পাওয়ার জন্য অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে এবং টানা হারের বৃত্তে ঘুরতে হয়েছে। সম্প্রতি তিন ফরম্যাট মিলিয়ে টানা ৮ ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। সেখান থেকেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে আফগানদের বিপক্ষে চলমান ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা আনতে পেরেছে বাংলাদেশ। আজই সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে একই ভেন্যুতে। বাংলাদেশ সময় অনুসারে বিকেল ৪টায় মাঠে গড়াবে ম্যাচটি। জয়ের ধারায় ফেরার পর বাংলাদেশ দলও আত্মবিশ^াস ফিরে পেয়েছে এবং এবার সিরিজ জিততে আশাবাদী তারা। শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে জয়ের পর এমন প্রত্যয়ই জানিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন হয়েছে বাংলাদেশ দলের। ভারত সফর থেকে পরাজয়ের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছিল বাংলাদেশ দল। সেখানে ২ টেস্ট, ৩ টি২০ এবং পরবর্তীতে ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২ টেস্ট হেরেছেন শান্তরা একেবারে বিনা যুদ্ধে। এরপর শারজায় উজ্জীবিত আফগানিস্তানের কাছেও ৯২ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ ওয়ানডেতেও। অর্থাৎ ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ হয়ে যায় এতে। মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই বারবার হারছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শনিবার নিজেদের ফিরে পেয়েছে দল। বিশেষ করে ব্যাটাররাও বেশ বুঝেশুনে ব্যাট চালিয়েছেন। যদিও টপঅর্ডারে অধিনায়ক শান্ত ছাড়া বাকিরা উইকেটে থিতু হওয়ার পরও ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। সেই সমস্যাটা কাটিয়ে উঠতে পারলে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে জেতা সম্ভব হবে শান্তদের। দ্বিতীয় ওয়ানডে জয়ের পর তিনি নিজেই বলেছেন, ‘আমার মনে হয় খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। ক্রিকেট খেলাটা মোমেন্টামের ব্যাপার। মোমেন্টামের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অপেক্ষা বলব না, কষ্ট করছিলাম আসলে যেন আমরা মোমেন্টামটা পাই। আলহামদুলিল্লাহ আগের দিন আমরা যেরকম পরিকল্পনা করেছি সবাই সেটা মাঠে কাজে লাগিয়েছে। ১০০% দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এখানে আরও উন্নতির জায়গা আছে। যে পরিকল্পনা ছিল তার খুব কাছাকাছি সফল হতে পেরেছি।’
শান্ত নিজে দীর্ঘদিন ব্যাট হাতে ভালো কিছু করতে পারছিলেন না। ওয়ানডেতে তিনি বেশ ভালোই করেছেন অধিনায়ক হওয়ার পর, কিন্তু বাকি দুই ফরম্যাটে যাচ্ছেতাই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছেন। তিনি প্রথম ওয়ানডেতে ৪৭ রান করেছেন এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৭৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস উপহার দিয়ে দলকে জয়ের পুঁজি গড়তে বড় ভূমিকা রেখেছেন। সেজন্য ম্যান অব দ্য ম্যাচও হয়েছেন তিনি। তবে দীর্ঘ সময় তাওহিদ হৃদয় ভালো ইনিংস খেলতে পারছেন না। এছাড়া শরিফুল ইসলাম গত দুই ম্যাচে আহামরি কোনো বোলিং করতে পারেননি। সেজন্য আজকের ম্যাচে তাকে বসিয়ে নাহিদ রানাকে অভিষেক ক্যাপ দিতে পারে বাংলাদেশ দল। এ ছাড়া একাদশের বাকি জায়গাগুলো অপরিবর্তিতই থাকবে। সবার মধ্যে এখন আত্মবিশ^াস ফিরেছে। একটি জয় বদলে দিয়েছে ড্রেসিং রুমের পরিবেশ। এ বিষয়ে শান্ত বলেছেন, ‘কঠিন ছিল আসলে গত কয়েক ম্যাচে আমরা যেভাবে খেলছিলাম সব মিলে খুব একটা ভালো অবস্থানে ছিলাম না। যেভাবে সবাই কামব্যাক করেছে, বিশ্বাস রেখেছে যে আমরা ভালো করতে পারি। সবাই সবার প্রসেস ঠিক রেখেছে। আমরা যেরকম দল, সেরকম ভালো করছি না হয়ত তবে আমাদের যেরকম সামর্থ্য রয়েছে। আমাদের বোলিং বিভাগ আছে, আমরা যদি তাদের কম রানে আটকে দেই তাহলে তাড়া করার সেই সামর্থ্য রয়েছে। শুধু সেই আত্মবিশ্বাসটা দরকার, নিজেদের মধ্যে বিশ্বাসটা দরকার যে যে কোনো অবস্থা থেকে আমরা জিতব।’ আজ আরেকবার সেটি করে দেখাতে হবে বাংলাদেশ দলকে সিরিজ জয়ের জন্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে এই সিরিজ জয়টি অনেক বড় অনুপ্রেরণা হবে সেক্ষেত্রে। আফগানরাও অবশ্য জেতার জন্যই মাঠে নামবে। প্রথম ম্যাচ জেতার পর দ্বিতীয়টি হারলেও তাদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি।