উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চলতি মৌসুমের শুরুটা খুব বাজে হয়েছিল বার্সেলোনার। ফরাসি ক্লাব মোনাকোর কাছে প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে হেরেছিল হ্যান্সি ফ্লিকের দল। তবে সেই হারের পরই যেন জ্বলে উঠতে শুরু করে কাতালান ক্লাবটি। ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্টে ইয়ং বয়েজ, বায়ার্ন মিউনিখের পর রেড স্টার বেলগ্রেডকেও রীতিমতো উড়িয়ে দেয় বার্সেলোনা। বুধবার হ্যান্সি ফ্লিকের দল ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করে বেলগ্রেডকে।
এর ফলে ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে টানা তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে চার কিংবা তারও বেশি বার বল জড়ানোর রেকর্ড গড়ে বার্সেলোনা। যা ৬৪ বছরের মধ্যে কাতালান ক্লাবটির প্রথম ঘটনা। এর আগে স্পেনের জায়ান্ট ক্লাবটি এমন কীর্তি গড়েছিল ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে। দীর্ঘ সাড়ে ছয় দশক পর আবারও সেই রেকর্ডের পুনরাবৃত্তি করে ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্টে নিজেদের ফিরে আসার বার্তাটাও যেন দারুনভাবে দিয়ে রাখলেন হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
২০১৫ সালে সর্বশেষ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বার্সেলোনা। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ এক দশক। কিন্তু শিরোপার দেখা আর মেলেনি কাতালান সমর্থকদের। এবার তাই বড় স্বপ্ন নিয়েই মিশন শুরু করে ইয়ামাল-লেভানডোস্কি-রাফিনহাদের নিয়ে গড়া তরুণ আর অভিজ্ঞদের মিশেলে দুর্দান্ত দলটি। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শুরুতেই মোনাকোর কাছে ২-১ গোলে হেরে বসে বার্সেলোনা।
তবে দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দোন্ডপ্রতাপে ঘুরে দাঁড়ায় কাতালান ক্লাবটি। ইয়ং বয়েজের জালে গুনে গুনে পাঁচবার বল জড়ায় বার্সেলোনা। সেই ম্যাচে ৫-০ গোলে জয়ের পর জার্মান জায়ান্ট বায়ার্নের বিপক্ষেও অপ্রতিরোধ্য ফ্লিকের দল। এই ম্যাচে তারা ৪-১ গোলে পরাজিত করে বায়ার্ন মিউনিখকে। বুধবার রেড স্টার বেলগ্রেডের বিপক্ষে ম্যাচেও নিজেদের পার্থক্যটা বুঝিয়ে দেয় বার্সেলোনা।
যদিওবা রেড স্টার বেলগ্রেডের মাঠে ম্যাচ শুরুর ৩ মিনিটেই গোল হজম করে বসেছিল বার্সা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অফসাইডে সেই গোল বাতিল করা হয়। তবে ১৩ মিনিটেই প্রথম গোলের স্বাদ পায় বার্সা। ইনিগো মার্টিনেজের গোলে লিড পায় বার্সা। কিন্তু ম্যাচের ২৭ মিনিটেই রেড স্টার বেলগ্রেডকে সমতায় ফেরান সিলাস এমভুমপার। তবে বিরতির আগে ৪৩ মিনিটে রাফিনহার অ্যাসিস্ট থেকে গোল করে বার্সেলোনাকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন রবার্ট লেভানডোস্কি।
বিরতির পর জ্বলে উঠে কাতালান ক্লাবটি। ৫৩ মিনিটে জুলস কুন্দে ডান পাশ থেকে বক্সের সামনে এমনভাবে বল বাড়ান, যেখানে লেভাকে শুধু দাঁড়িয়ে থেকে শরীরটা গোলমুখী করে গায়ে লাগাতে হয়েছে। আর এটা উয়েফার প্রতিযোগিতায় বার্সার ৭০০তম। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লেভানডোস্কির ৯৯তম গোল।
বার্সেলোনা পরে আরও দুটি গোল পায় জুলস কুন্দের দুর্দান্ত অ্যাসিস্ট থেকে। ফরাসি এই রাইট ব্যাকের অ্যাসিস্টে ৫৫ মিনিটে গোলদাতার খাতায় নাম লেখান ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনহা। আর ৭৪ মিনিটে ফারমিন লোপেজ। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে মিলসনের সৌজন্যে আরেকটি গোল শোধ করে বেলগ্রেড। ফলে ৫-২ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।
অন্যদিকে প্যারিসে ১৪ মিনিটে পিএসজি লিড নিলেও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে হেরে যায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে। এদিন হেরে গেছে আর্সেনালও। ইন্টার মিলানের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় মাইকেল আর্তেতার দল। অ্যাস্টন ভিলার জয়রথ থামিয়ে চমকে দিয়েছে ক্লাব ব্রাগে। তবে হ্যারি কেনের অ্যাসিস্ট থেকে জামাল মুসিয়ালার একমাত্র গোলে বেনফিকাকে হারিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বায়ার্ন মিউনিখ।
মোস্তফা/ জাফরান