বোলারদের সাফল্য ম্লান হযেছে ব্যাটিং ব্যর্থতায়, বড় হার বাংলাদেশের
অফস্পিনার মোহাম্মদ গজনফর ও লেগস্পিনার রশিদ খানের ঘূর্ণিতে বেসামাল হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। গজনফর ৬ উইকেট নেন। আর তাতেই শারজায় প্রথম ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের কাছে ৯২ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। শারজায় ঐতিহাসিক ৩০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে আগে ব্যাট করে আফগানিস্তান ৪৯.৪ ওভারে ২৩৫ রান করে। জবাবে ৩৪.৩ ওভারে ওভারে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
টস জিতে আগে ব্যাটিং নেয় আফগানিস্তান। শুরুতেই তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমানের পেসে বিপর্যস্ত হয়েছে আফগান ব্যাটিং লাইন এবং ৩৫ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে তারা। অভিষেক ক্যাপ পাওয়া বাঁহাতি ওপেনার সেদিকউল্লাহ অটল ৩০ বলে ৩ চারে ২১ রান করেন।
গুলবাদিন নাইব ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি পঞ্চম উইকেটে ৩৬ রান যোগ করেন। গুলবাদিন ৩২ বলে ৩ চারে ২২ রানে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হন। ৭১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন হাশমত ও মোহাম্মদ নবি। দু’জন ষষ্ঠ উইকেটে ১০৪ রানের জুটি গড়ে আফগানিস্তানকে সম্মানজনক পুঁজিতে পৌঁছার ভিত গড়ে দেন।
হাশমত দারুন সতর্কতার সাথে ব্যাট চালিয়ে ৯২ বলে ২ চারে ৫২ রানে মুস্তাফিজের পেসে বোল্ড হন। কিন্তু এরপর নবি মাত্র ৭৯ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন এবং নানজেয়ালিয়া খরোত ২৮ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
এরপরও ২ বল বাকি থাকতে আফগানিস্তানের ইনিংস ২৩৫ রানে গুটিয়ে যায়। ৪টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।
জবাব দিতে নেমে দলীয় ১২ রানেই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের (৩) উইকেট হারায় বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৩ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ভালো অবস্থানেই রাখেন।
দেখেশুনে ভালো খেলতে থাকা সৌম্য ৪৫ বলে ৬ চারে ৩৩ রানে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের শিকার হন। এরপরও শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজ তৃতীয় উইকেটে ৫৫ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে জয়ের পথ তৈরি করে দেন।
কিন্তু এরপরই ঘটেছে ছন্দপতন। মোহাম্মদ নবির অফস্পিনে শান্ত ৬৮ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৪৭ রানে সাজঘরে ফেরেন। কিছুক্ষণ পর গজনফর তার ভেল্কি দেখান। মিরাজ ৫১ বলে ১ ছক্কায় ২৮ রান করে বিদায় নেন তার শিকার হয়ে।
এরপর আর কেউ গজনফর ও রশিদের ঘূর্ণি ছোবলে উইকেটে দাঁড়াতেই পারেননি। মাত্র ৮ রানে পরবর্তী ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তাওহিদ হৃদয় (১১), মুশফিকুর রহিম ১, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২, রিশাদ হোসেন ১, তাসকিন ০, শরিফুল ১ রানে সাজঘরে ফিরেছেন তাদের স্পিনে নাজেহাল হয়ে।
শেষ পর্যন্ত জয়ের পথে থাকা বাংলাদেশের ইনিংস ৩৪.৩ ওভারে ১৪৩ রানেই গুটিয়ে যায়। গজনফর প্রথমবার ক্যারিয়ারে ৫ উইকেটের দেখা পান। তিনি মাত্র ৬.৩ ওভারে ১ মেডেনে ২৬ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন। আফগানিস্তানের পক্ষে এটি ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সেরা বোলিং।
রশিদ খান ২০১৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮.৪ ওভারে ১ মেডেনে ১৮ রান দিয়ে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। সেটিই এখন পর্যন্ত আফগানদের পক্ষে ওয়ানডেতে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। এরপরই গজনফর।
৯২ রানের বিশাল হারে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ল বাংলাদেশ।
মামুন/ রিয়াদ