তালহার (বায়ে) অভিযোগ লিটনের (ডানে) বিরুদ্ধে
৬-১১ নভেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বেসবল ইউনাইটেড আরব ক্লাসিক চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ। যেখানে এশিয়ার নয়টি দেশ অংশ নেবে, যার মধ্রে আছে বাংলাদেশও।
তবে জাতীয় দলগঠনে রয়েছে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ডিজম্যানেজমেন্ট ও নানান অনিয়মের অভিযোগ। আর এমন অভিযোগ করেছেন তালহা জুবায়ের। যিনি সংগঠক ও কোচ। বাংলাদেশ জাতীয় বেসবল দল নিয়ে কাজ করেছেন। তার আছে আন্তর্জাতিক সনদ। তিনি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশ বেসবল-সফটবল এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটনের একক কর্তৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত শুধুমাত্র পুলিশ ক্লাবের উপর নির্ভরশীল তৈরি করে বাংলাদেশ বেসবলকে শুশুুমাত্র রাজারবাগ পুলিশ লাইন মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছে। এরই মাঝে কোনরকম প্রচার প্রজ্ঞাপন কিংবা ট্রায়াল ছাড়াই একরকম লোকচক্ষুর আড়ালে শুধুমাত্র পুলিশ খেলোয়াড়দের নিয়ে ভুয়া ডামি প্রশ্নবিদ্ধ জাতীয় দল গঠন করে আরব ক্লাসিক লীগে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে!’
তালহা আরও বলেন, ‘সংবিধান সম্পূর্ণরূপে লঙ্ঘন করে একটি জাতীয় দলগঠনে যে ক্রাইটেরিয়াসমূহ রয়েছে তার কোনটাই মানা হয়নি। বেসবলের সাথে সংশ্লিষ্ট সংগঠক লোকাল কোচেস, অফিসিয়াল সিলেকশন কমিটির সহযোগিতা ও কনসার্ন ছাড়াই সাধারণ সম্পাদকের একক সিদ্ধান্তে উক্ত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।
এহেন অন্যান্য দলের যোগ্য খেলোয়ার থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে প্রশিক্ষণে সম্পৃক্ত কিংবা এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে অবগত পর্যন্ত করা হয়নি। একজন জাপানি কোচ দ্বারা শুধুমাত্র পুলিশ ক্লাব দলের খেলোয়ারদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক খেলোয়াড়দের দ্বারা আসন্ন আরব লীগের জন্য বিতর্কিত এই লোক দেখানো দলগঠন করে।’
তালহা জানান, ‘একটি পরিপূর্ণ বেসবল দলে ২৫ খেলোয়াড় থাকে। এর মধ্যে ৯ মূল খেলোয়াড় মাঠে ব্যাটিং ও ফিল্ডিং করে এবং বাকি খেলোয়াড়রা গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্টিং পজিশনে থাকে। একটি দলে কমপক্ষে তিন পিচার এবং দুই অতিরিক্ত ক্যাচার থাকা আবশ্যক। সেখানে পুলিশ ক্লাব থেকে মাত্র ১২ জনের একটি দুর্বল স্কোয়াড করে লোক দেখানো ডামি দল তৈরি করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করাতে যাচ্ছে! তাছাড়া দলের সাথে লোকাল কোন কোচ,আম্পায়ার্স এমনকি দক্ষ ম্যানেজার সংযুক্ত করতে সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হয়েছে।’
সবশেষে তালহার অভিযোগ, ‘গঠনতন্ত্রের কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিজস্ব সুবিধা উদ্দেশ্য হাসিল এবং ব্যাক্তিগত লাভবানের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের অফিস অনুমোদন ছাড়াই কার্যনির্বাহী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত এবং দলের সঙ্গে পদ পজিশন দেখিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করান লিটন। এতে করে বিগত বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যায় আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে পারেনি জাতীয় দল, এমনকি বিদেশে চরমভাবে পরাজয়ের মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
কিছুদিন আগে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে সার্চ কমিটির সঙ্গে বেসবলের মিটিংয়ে ‘শুধু পুলিশ দল নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ জাতীয় বেসবল দল গঠন’ বিষয়ে জানতে চাইলে উপস্থিত সাধারণ সম্পাদক এবং জাপানি কোচ এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তৎক্ষণাৎ একটি বাহিনীর ক্লাব দল দ্বারা তৈরি তথাকথিত ডামি জাতীয় দলকে সবাই বর্জন করে।
দুর্নীতিবাজ অদক্ষ অসাধু এসব কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থেই জাতীয় এই এ্যাসোসিয়েশনকে পুঁজি করে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে একক ক্ষমতায় কুক্ষিগত করে বেসবলকে বাংলাদেশে জেলা, ক্লাব ও অন্যান্য দল তৈরিতে অপারগতা এবং তৃণমূল সর্বত্র প্রচার প্রসার হতে বিরত রেখে আসছে।
কোন খেলোয়াড় এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেই তাকে হুমকি ধামকি এবং নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হয়।’
রুমেল খান