ইতিহাস গড়া জয়ের আনন্দ কিউইদের
দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েও শেষ রক্ষা হলো না। দীর্ঘ ২৪ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হতে হলো ভারতকে। জয় থেকে ২৫ রান দূরে থেকে মেনে নিতে হলো হোয়াইটওয়াশের গ্লানি। অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার আগে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৩ টেস্টই হারল রোহিত শর্মার দল।
হ্যান্সি ক্রনিয়ের দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২০০০ সালে সর্বশেষ ঘরের মাঠে টেস্টে ধবলধোলাই হয়েছিল শচীন টেন্ডুলকারের ভারত। এরপর নিজের ঘরে হোয়াইটওয়াশ তো দূরের কথা, পরবর্তী দুই দশকেই কেবল একটি টেস্ট সিরিজ হারে। সেই হারের পর সময়ের হিসাবে এক যুগ এবং ১৮ সিরিজ অপরাজেয় ছিল রোহিত-কোহলিরা। সেই বৃত্ত তো ভেঙেছে–ই, দুই যুগ হোয়াইটওয়াশ না হওয়ার কীর্তিও তছনছ করে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
৩ দিনে শেষ হওয়া মুম্বাই টেস্টে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রবীন্দ্র জাদেজার ফাইফার ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ৪ উইকেটে ২৩৫ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তবে প্রথম দিনের শেষবেলায় বল হাতে নেমে ৮৪ রানের মধ্যেই সাজঘরে ফেরায় ভারতের ৪ ব্যাটারকে। এতে লিডের স্বপ্ন দেখলেও সেই স্বপ্ন পণ্ড হয় শুবমান গিল ও রিশভ পান্টের ব্যাটে। গিল ৯০ ও পান্ট ৬০ রান করে ম্যাচে ফেরান দলকে, শেষদিকে ওয়াশিংটন সুন্দরের ৩৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভারত পায় লিডের দেখা। ২৮ রানের লিড নিয়ে টিম ইন্ডিয়া অলআউট হয় ২৬৩ রানে। এজাজ প্যাটেল একাই শিকার করেন ৫ উইকেট।
লিডের বিপরীতে খেলতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয় হয় নিউজিল্যান্ডের। ক্রমশ ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন হতে থাকা উইকেটে ১৭৪ রানে গুটিয়ে যায় কিউইরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান আসে উইল ইয়াংয়ের ব্যাট থেকে। আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ায় নিউজিল্যান্ড ছিল আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর। তাই ১৪৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েই ভয়ংকর হয়ে ওঠে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাই টেস্টে মাঠে নামা নিউজিল্যান্ড।
রোহিত শর্মা ওয়ানডে মেজাজে খেলা শুরু করলেও ১১ রান করে তিনি বিদায় নেন দলীয় ১৩ রানে, তাতেই শুরু বিপর্যয়। দলীয় ২৯ রানের মধ্যে রোহিত ছাড়াও সাজঘরে শুবমান গিল, বিরাট কোহলি, যশস্বী জাইসওয়াল ও সরফরাজ খান।
এরপর রিশভ পান্ট ৫৭ বলে ৬৪ রানের ইনিংসে ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টা করলেও সেই আশায় গুঁড়েবালি হয় তিনি বিদায় নিলে। শেষপর্যন্ত ২৯.১ ওভারে ১২১ রানে গুটিয়ে যায় ভারত, নিউজিল্যান্ড জেতে ২৫ রানের ব্যবধানে। ভারতে এসে ভারতকে প্রথমবারের তিন ম্যাচের সিরিজে করে হোয়াইটওয়াশ। সফরকারী দলের পক্ষে এজাজ প্যাটেল ৬টি ও গ্লেন ফিলিপস ৩টি উইকেট শিকার করেন।
এই সিরিজের আগে ভারতের মাটিতে মাত্র ২টি টেস্টে জয় ছিল নিউজিল্যান্ডের। ১৯৬৯ সালে নাগপুরের পর ১৯৯৮ সালে ওয়াংখেড়ে টেস্টে জিতেছিল তারা। এমন অতীত নিয়ে ভারতের মাটিতে তাদেরই হোয়াইটওয়াশ করাটা বিস্ময়করই। তাও দলের সেরা ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকে ছাড়াই, ইনজুরির কারণে এ সিরিজে নেই সাবেক অধিনায়ক।
মিরাজ/এসআর