বিমানবন্দরে বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সাফ জয়ী মেয়েদের
চট্টগ্রামে ২২ বছর আগে ঢাকার দুঃসহ স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। ২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সেবার ইনিংস ও ৩১০ রানে হেরেছে তারা। বাংলাদেশ দল প্রথম ইনিংসে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ক্যারিবীয়রা ৫৩৬ রান করে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ থামে ১৩৯ রানে। সেই দীর্ঘ সময় পর এবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ইনিংস ও ২৭৩ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ফলে দুই টেস্টের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে।
ম্যাচের তৃতীয় দিনেই টানা দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত করে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের ৬ উইকেটে ৫৭৫ রানের জবাবে এদিন লাঞ্চ বিরতির কিছু পরেই কাগিসো রাবাদার পেস তোপে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থামে ১৫৯ রানে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে কেশব মহারাজ ও সেনুরান মুথুসামির স্পিন দাপটে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪৩ রানে। একদিনেই ১৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয় পায়।
ম্যাচের দ্বিতীয় দিনই বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬ উইকেটে ৫৭৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে সফরকারীরা এবং বাংলাদেশ দিনশেষে করে ৪ উইকেটে ৩৮। সেখান থেকে তৃতীয় দিন সকালে রাবাদার পেসে আউট হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত ৯, মেহেদি হাসান মিরাজ ১ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন শূন্য। ক্যারিয়ারে ১৬তম ৫ উইকেট শিকারের গৌরব দেখান রাবাদা। মাঝে ডেন প্যাটারসন সাজঘরে পাঠান মুশফিকুর রহিমকে শূন্য রানে। তাই চরম বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ ৪৮ রানে ৮ উইকেট খুইয়ে।
এরপরই মুমিনুল-তাইজুল নবম উইকেটে ১০৩ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন। নবম উইকেটে এটি বাংলাদেশের টেস্টে চতুর্থ সেরা জুটি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেরা। এর আগে ২০০৮ সালে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ব্লুমফন্টেইনে ৬০ রানের নবম উইকেট জুটি গড়েন মুশফিক ও শাহাদাত হোসেন। মুমিনুল ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটি হাঁকান। তিনি শেষ পর্যন্ত ১১২ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ৮২ রানে সাজঘরে ফেরেন। তাইজুলও ৯৫ বলে ১ চারে ৩০ রানে বিদায় নেন।
রাবাদা ৫টি এবং কেশব মহারাজ ও ডেন প্যাটারসন ২টি করে উইকেট নেন। ১৫৯ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ৪১৬ রানে পিছিয়ে থেকে ফলোঅনে পড়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে নেমেও বিপর্যস্ত হয়েছে। টপঅর্ডারদের ব্যর্থতায় ৪৭ রানেই বিদায় নেন শীর্ষ ৫ ব্যাটার। এবার দুই স্পিনার সেনুরান মুথুসামি ও কেশব মহারাজের ঘূর্ণিতে বেসামাল হয়েছে বাংলাদেশ।
কিছুক্ষণ লড়াই চালিয়ে শান্তও ৫৫ বলে ৪ চার, ১ ছয়ে ৩৬ রানে বিদায় নেন। পরে অভিষিক্ত উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৬৪ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় করেন ২৯ এবং শেষদিকে হাসান মাহমুদ দুর্দান্ত ব্যাটিং করে টি২০ মেজাজে ৩০ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষ পর্যন্ত ১৪৩ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস।
মহারাজ ৫টি ও মুথুসামি ৪টি উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রান করা টনি ডি জর্জি হন ম্যাচসেরা। আর দুই টেস্টে ১৪ উইকেট নিয়ে সিরিজের সেরা খেলোয়াড় কাগিসো রাবাদা। এটাই টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় জয়। এর আগেও তাদের সবচেয়ে বড় জয়টি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই। ২০১৭ সালে ব্লুমফন্টেইনে তারা বাংলাদেশকে ইনিংস ও ২৫৪ রানে হারিয়েছিল। চট্টগ্রাম টেস্টের এই হারে ২ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুরে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৭ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ।