ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১

আবারও সাফ জয় বাঘিনীদের !

প্রকাশিত: ২১:১৬, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

আবারও সাফ জয় বাঘিনীদের !

আবার সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আবারও বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব। এবারও বাংলাদেশের শিকার সেই নেপাল। ফাইনালে ২–১ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। শুরুতে মনিকা চাকমার গোল। এরপর সমতা ফেরায় নেপাল। তবে শেষ দিকে ঋতুপর্ণার দারুণ এক গোলে শিরোপা নিশ্চিত করেন সাবিনারা।

সপ্তমবারের চেষ্টায়ও হলো না। গোলশূণ্য প্রথমার্ধের পর চার মিনিটের ব্যবধানে দুদলই পেয়েছিল গোলের দেখা। ৫২ মিনিটে প্রথমে মনিকা চাকমার গোলে লিট নেয় বাংলাদেশ। এর চার মিনিটর আমিশা কারকির গোলে সমতায় ফিরেছিল স্বাগতিক নেপাল। তবে ৮১ মিনিটে ঋতুপর্নার অসাধারণ গোলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ওমেন্স সাফের শিরোপা জিতে নেয় বাংলাদেশ। ২০২২ সালে এই নেপালকেই হারিয়ে প্রথম শিরোপা উৎসবে মেতেছিল লাল-সবুজের সৈনিকেরা। 

ক্রসবারের বাধা পড়ে গিয়েছিল প্রথমার্ধ। দুই দলেরই একটি করে শট ঠেকিয়ে দেয় পোস্ট। প্রথমার্ধ থাকে গোলশূণ্য। দশরথ রঙ্গশালায় বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া ফাইনালের প্রথমভাগে কাউকেই এগিয়ে রাখা যাবে না। দু’দলই গোলের সুযোগ পেয়েছে এবং হারিয়েছে। বাংলাদেশ ৪-৩-৩ আক্রমনাত্মক ফরম্যাশনে খেললেও নেপাল খেলছে কিছুটা রক্ষণাত্মক কৌশলে। তারা সাবিত্রা ভান্ডারিকে আক্রমণের দায়িত্বে রেখে খেলতে চেয়েছে কাউন্টার-অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল।

ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের। নেপাল ডিফেন্ডার গীতা রানা গোলকিক করতে গিয়ে পিছলে পড়ে বল তহুরার পায়ের তুলে দিয়েছিলেন। তহুরা সুযোগ পেয়ে শটও নিয়েছিলেন। তবে পোস্টে লেগে তা ফিরে আসে। পরে তহুরার হেড সহজেই আয়ত্বে নেন নেপাল কিপার অনিলা সুব্বা। ১০ মিনিটে ভাগ্য সহায় হয় বাংলাদেশের। এবার সাবিত্রা ভান্ডারির কাটব্যাকে বক্সের বাইরে থেকে আমিশা কারকির ডান পায়ের শট ক্রসবারে লেগে ফিরলে নেপালকে হতাশ হতে হয়। ম্যাচের ২৮ মিনিটে ভান্ডারির আড়াআড়ি পাস খুঁজে পেয়েছিল আমিশাকে। তবে বল আয়ত্বে নিতে দেরী করে ফেলেন। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে নেপাল কিপারের ক্লিয়ারেন্স ভালো জায়গায় পেয়েও পোস্টে রাখতে পারেননি মনিকা চাকমা।

বিরতি থেকে ফিরে বাংলাদেশ তাদের খেলায় পরিবর্তন আনেনি। মাঝমাঠের প্রাধান্য রেখে তারা আক্রমনে উঠেছে। ৫২ মিনিটে মনিকা চাকমার অসাধারণ ফিনিশে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। নেপালের এক ডিফেন্ডাররে ভুল পাস পেয়ে সাবিনাকে বাড়িয়েছিলেন মারিয়া। সেটা ক্লিয়ার করতে গিয়ে মনিকার পায়ে তুলে দেন আরেক নেপাল ডিফেন্ডার। মার্কারকে ছিটকে ফেলে আগুয়ান কিপারকে পরাস্ত করে কোনাকুণি শটে বল পোস্টে জমা করেন মনিকা। চার মিনিট পর ডিফেন্ডারদের অসতর্কতার সুযোগ নিয়ে নেপালকে ম্যাচে ফেরান আমিশা কারকি। প্রিতি রায় ডিফেন্সচেড়া থ্রু দিয়েছিলেন। মাসুরা সেটা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বল পেয়ে একা হয়ে পড়া বাংলাদেশ কিপার রূপনাকে সহজেই পরাস্ত করেন আমিশা।

৬১ মিনিটে সাবিত্রা ভান্ডারি বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠেছিলেন। মার্কার আফিদা তাকে ধরে রাখতে পারেননি। অনেকটা এগিয়ে আড়াআড়ি ক্রসও ফেলেছিলেন। তবে সেটা জালে রাখতে নেপালের কেউ ছিল না। ৬৮ মিনিটে ঋতুর আড়াআড়ি পাস বক্সের বাইরে পেয়ে মারিয়া বাঁ পায়ে শট নিয়েছিলেন। তবে নেপাল কিপার অনিলা সুব্বা বাঁ দিকে ঝাপিয়ে তা কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন। ৭৮ মিনিটে শামসুন্নাহার গোলের সেরা সুযোগ নষ্ট করেন। বাঁ দিক থেকে ঋতুর ক্রসে হাত ছোঁয়া দূরত্ব থেকে ঠিকঠাক হেড করতে পারেননি তিনি। তবে ৮১ মিনিটে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ঋতুপর্নার গোলে লিড নেয় বাংলাদেশ। শামসুন্নাহার সিনিয়রের থ্রো-ইন আয়ত্বে নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমনে উঠে বাঁ পায়ের ক্রস নিয়েছিলেন ঋতু। নেপাল কিপার তা ক্লিয়ার করতে ঝাপিয়েছিলেন। তবে তার গ্লাভস ছুয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে প্রবেশ করলে এ মুহূর্তে থমকে যায় দশরথের গ্যালারি। দশরথে আবারও ইতিহাস গড়ে সেরার মুকূট নিজেদের কাছেই রেখে দেয় বাংলাদেশের মেয়েরা।

 

শিহাব উদ্দিন

×