ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১

শিরোপা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর বাংলার বাঘিনীরা

রুমেল খান

প্রকাশিত: ০০:০২, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

শিরোপা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর বাংলার বাঘিনীরা

নেপালে অনুশীলনে বাংলাদেশের তিন তারকা বাঁ থেকে আফঈদা খন্দকার, অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও মাসুরা পারভীন

বিষয়টি বেশ ইন্টারেস্টিং। ২০২২ এবং ২০২৪ সালের সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বেশ কিছু ফ্যাক্টর যেন চোখে পড়ছে। গত আসরের মতো এবারও একই গ্রুপে ছিল বাংলাদেশ-ভারত এবং নেপাল-ভুটান। গতবারের মতো এবারও গ্রুপ ম্যাচে ভারতকে হারানোর পথে গুনে গুনে তিন গোল দিয়েছে বাংলাদেশ। গতবারের মতো এবারও সেমিফাইনালে বাংলাদেশ হারিয়েছে ভুটানকে এবং নেপাল হারিয়েছে ভারতকে। সবচেয়ে বড় কথা, গতবারের মতো এবারও আসরটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে! এবং গতবারের মতো এবারও ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ-নেপাল।
গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত সবকিছু মিলে গেছে। শুধু ফাইনালেরই বাকি। যারা বাংলাদেশের ফুটবল ভক্ত-সমর্থক-অনুরাগী, তারা মনেপ্রাণে চাচ্ছেন সেটাও যেন মিলে যায়। তাহলে সাফল্য ও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে পারবে পিটার বাটলারের শিষ্যরা। এজন্য আর মাত্র এক জয় দূরে বাংলার বাঘিনীরা। 
আগামীকাল বুধবার স্বাগতিক ও হিমালয়ের দেশের কন্যাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাঠে নামবে বঙ্গকন্যারা। এজন্য অনুশীলনে তারা বেশ সিরিয়াস। ঝরাচ্ছে ঘাম। কোচের সঙ্গে সিনিয়র ফুটবলারদের ঝামেলা থাকলেও আপাতত সেগুলোকে একপাশে সরিয়ে রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠিন সংকল্প বাস্তবায়নে তৎপর সবাই। সোমবারের অনুশীলন শেষে গণমাধ্যমে, কথা বলেন বাংলাদেশ ডিফেন্ডার আফঈদা খন্দকার। তিনি বলেন, ‘যেভাবে খেলে আসছি নেপালের সঙ্গে এর আগেও... বাংলাদেশে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলেছি, এশিয়ান গেমসেও খেলেছি। ভা-ারি আপু (সাবিত্রা ভা-ারি), তিনিও খেলেছেন আমাদের বিরুদ্ধে। তাদের সঙ্গে যেভাবে ম্যাচগুলো খেলেছি, এবারও সেভাবেই ঠান্ডা মাথায় খেলার চেষ্টা করব। উত্তেজনা থাকতেই পারে মাঠের ভেতরে, দর্শক সমর্থনও থাকবে তাদের পক্ষে। কিন্তু আমাদের মাথা গরম করা যাবে না।’ 
দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচে ভারতের সঙ্গে খেলতে গিয়ে লাল কার্ড পেয়ে মাঠ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন নেপাল ফরোয়ার্ড রেখা পাউদেল। তিনি এই আসরে দলের হয়ে টপ স্কোরার (৭ গোল)। ফাইনালে তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না। এতে কতটা সুবিধা পাবে বাংলাদেশ? এই প্রশ্নের জবাবে আফঈদা বলেন, ‘হ্যাঁ, এতে একটু হলেও স্বস্তির জায়গা পাব। কারণ দুজন (আরেকজন ফরোয়ার্ড সাবিত্রা ভান্ডারি) থাকলে বেশি প্রেসার পড়ত আমাদের ওপর। দুজনের একজন না থাকায় আমাদের জন্য একটু স্বস্তিরই বটে।’
ফাইনালে দর্শক সমর্থন থাকবে নেপালের দিকে। এ নিয়ে আফঈদার ভাষ্য, ‘আমরা মনে করব নেপালের সাপোর্টাররাও আমাদের সাপোর্টার। এটা চাপ নেওয়ার কোনো বিষয় না।’ 
সর্বশেষ ২০২২ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও এই একই ভেন্যুতে একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচে অবতীর্ণ হয়েছিল লাল-সবুজ বাহিনী। নতুন ইতিহাস রচনা করতে কিংবা আগের সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে বাংলার বাঘিনীরা মাত্র এক ধাপ দূরে আছে। এ প্রসঙ্গে আফঈদার প্রতিক্রিয়া, ‘ইতিহাস রচনা আপুরা গতবারই করেছে। এবার আমাদের তা ধরে রাখার পালা। আমরা অবশ্যই আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলার চেষ্টা করবো। যেন ভালো খেলতে পারি, এজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। আমরা ইনশাল্লাহ চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়েই বাংলাদেশে ফিরব।’
সর্বশেষ আঈফদা বলেন, ‘সব টিমই মোটামুটি ভালোই খেলেছে। আশাকরি নেপালও ভালো খেলবে এবং আমরা সেভাবেই মাঠে নামব।’
বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু বলেন, ‘এনিমি তো এনিমিই। সেটা ভারত বা নেপাল যেই হোক না কেন। আর আমরা ধরেই নিয়েছিলাম এই দুই দলের মধ্যে থেকে এক দল ফাইনালে আমাদের প্রতিপক্ষ হবে।’ ফাইনালে সাবিত্রা ভা-ারি কতটা চ্যালেঞ্জ হতে পারে বাংলাদেশের জন্য? লিটুর জবাব, ‘এর আগে আমরা সাবিত্রার খেলা দেখেছি। আমরা তাকে মোটেও খাটো করে দেখছি না। অনেক ভালো এবং অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। আমাদের পরিকল্পনা থাকবে তাকে মার্ক করার। তো আমরা ওই ভাবেই খেলব।’ 

×