ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

‘ব্যাপারটা হজম হতে দু-একদিন লাগবে হয়তো’

স্পোর্টস রিপোর্টার    

প্রকাশিত: ২২:১২, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

‘ব্যাপারটা হজম হতে দু-একদিন লাগবে হয়তো’

১০৩ বলে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বোয়েসের বিশ্বরেকর্ড

‘ব্যাপারটা হজম হতে দু-একদিন লাগবে হয়তো’- প্রতিক্রিয়া চ্যাড বোয়েসের। হবেই বা না কেন? এই মাত্রই যে তিনি ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মাঠ ছাড়লেন। লিস্ট-এ ক্রিকেটে নিজের শততম ম্যাচ, ৩২ বছর বয়সি কিউিই ব্যাটারের জন্য এমনিতেই উপলক্ষটা ছিল স্পেশাল। সেটি আরও স্মরণীয় করে রাখলেন বোয়েস। 

নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া  টুর্নামেন্ট ফোর্ড ট্রফিতে বুধবার ক্যান্টারবুরির হয়ে এই কীর্তি গড়েছেন বোয়েস। ক্রাইস্টচার্চে ওটাগোর বিপক্ষে ১০৩ বলে তিনি পা রাখেন দুইশতে। ২৭ চার ও ৭ ছক্কায় সাজানো তার ইতিহাস গড়া ইনিংসটি শেষ হয় ১১০ বলে ২০৫ রান করে। ৫০ ওভারের স্বীকৃত ক্রিকেটে দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির আগের রেকর্ড ছিল ১১৪ বলে। যৌথভাবে যেটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেড ও ভারতের নারায়ন জগদিসানের।

২০২১ সালে অ্যাডিলেইডে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১২৭ বলে ২৩০ রানের ইনিংস খেলার পথে রেকর্ডটি গড়েছিলেন হেড। পরের বছর ভিজায় হাজারে ট্রফিতে অরুণাচলের বিপক্ষে তামিলনাড়ুর হয়ে ১৪১ বলে ২৭৭ রানের ইনিংসের পথে সেই রেকর্ড স্পর্শ করেন জগদিসান। হেড তখন ভেঙে দিয়েছিলেন নিজেরই রেকর্ড। ২০১৫ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়েই ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিশতক করেছিলেন তিনি স্রেফ ১১৭ বলে। সেটি এখন আছে রেকর্ডের তিনে।

বোয়েস এবার সবাইকে পেছনে ফেললেন অনেকটা ব্যবধানেই। আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হিসেবে কিছুটা পরিচিতি তার বরাবরই ছিল। তবে খুব বড় ইনিংস খেলতে পারেননি আগে সেভাবে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার আগের সাত সেঞ্চুরিতে সর্বোচ্চ ছিল ১২৬। সেই তিনিই এবার চমকে দিলেন। হ্যাগলি ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ক্যান্টারবুরি শূন্য রানেই হারায় অভিজ্ঞ ওপেনার হেনরি নিকোলসকে। তবে বোয়েসের ব্যাট উত্তাল ছিল শুরু থেকেই। ম্যাচের প্রথম ওভারেই চারটি বাউন্ডারিতে ছুটতে শুরু করেন তিনি। তাকে থামাতে পারেননি কেউ।

ফিফটি করেন তিনি ২৬ বলে। একই গতিতে ছুটে শতরানে পৌঁছে যান ৫৩ বল খেলে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রান আসে ৮৪। সেখানে রিস মারিউর অবদান ছিল কেবল ২৮ বলে ১০। চতুর্থ উইকেটে ৯৫ রানের জুটিতে কোল ম্যাককনকির রান ছিল ৪০ বলে ২৭। কিন্তু আরেক প্রান্তে বোয়েসের ব্যাটে রান আসতে থাকে ঝড়ের গতিতে। শতরান থেকে দুইশতে যেতে বোয়েসের লাগে ৫০ বল। ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি ৩৪তম ওভারে। একটু পরে তিনি যখন বিদায় নেন, দলের ২৭৬ রানের মধ্যে ২০৬ রানই তার।

তিনি ছাড়া পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি দলের আর কেউ। আট নম্বরে নেমে ৪৬ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন জ্যাকারি ফোকস। ৫০ ওভারে ৩৪৩ রান তোলে ক্যান্টারবুরি। এর মধ্যেও ৫০ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন ওটাগোর মিডিয়াম পেসার ম্যাথু বেকন। রান তাড়ায় সামান্যতম লড়াইও করতে পারেনি ওটাগো। ২৪.৫ ওভারেই ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ক্যান্টারবুরি জয় পায় ২৪০ রানে।

নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ৬ ওয়ানডে ও ১১ টি২০ খেলেছেন বোয়েস। সবশেষটি গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফরে।

রেকর্ড গড়ে উচ্ছ্বসিত বোয়েস বললেন, ‘ব্যাপারটা হজম হতে দু-একদিন লাগবে হয়তো। তবে অবশ্যই আজকে হ্যাগলিতে দিনটি ছিল দুর্দান্ত এবং বিশেষ কিচু করার ভালো উপলক্ষ। এই ধরণের কিছু সাধারণত সহজাতভাবেই হয়ে যায়। পরিকল্পনা করে বা চেষ্টা করে এসব হয় না। আমি খুশি যে দিনটি আমার ছিল। শুরুটা খুব ভালো করতে পেরেছিলাম। এরপর স্রেফ একই ছন্দে ছুটে গেছি। যেহেতু এটা কাজে লাগছিল, তাই লাগাম দেওয়ার চেষ্টা করিনি, শুধু চেয়েছি আরও দ্রুততায় ছুটে যেতে।’

মিরাজ/ এসআর

×