ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

টি ২০তে সর্বোচ্চ রান ও বড় জয়ের বিশ্বরেকর্ড

গাম্বিয়াকে রেকর্ডের মালা পরিয়ে ক্রিকেট শেখালো জিম্বাবুয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার  

প্রকাশিত: ২১:৪৫, ২৩ অক্টোবর ২০২৪; আপডেট: ২১:৪৯, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

গাম্বিয়াকে রেকর্ডের মালা পরিয়ে ক্রিকেট শেখালো জিম্বাবুয়ে

৩৩ বলে সেঞ্চুরি করেছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা

‘আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যকার ম্যাচের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমরা মানি না’- বিশ্ব ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠিত ও এলিট দেশগুলোর ক্রিকেটাররা এমন দাবী তুলতেই পারেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দলীয় এবং ব্যক্তিগত রেকর্ডগুলো যে এখন সবই তাদের দখলে চলে যাচ্ছে! আর দ্বৈরথটা যদি হয় আঞ্চলিক ও টেস্ট খেলুড়ে দেশের, তবে কী হতে পারে, সেটিই দেখল বিশ্ব ক্রিকেট।   

আগামী টি২০ বিশ্বকাপের আফ্রিকার উপ-আঞ্চলিক বাছাইপর্বে ৪ উইকেটে ৩৪৪ রান তুলে গাম্বিয়াকে ২৯০ রানে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। আন্তর্জাতিক টি২০তে দুই ক্ষেত্রেই যা নতুন বিশ্বরেকর্ড। বুধবার নাইরোবিতে রেকর্ড বন্যার এ ম্যাচে  অগ্রণী ভূমিকা অধিনায়ক সিকান্দার রাজার। ৩৩ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ৪৩ বলে ১৫ ছক্কা ও ৭ চারে অপরাজিত ১৩৩ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন তিনি।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৪৪ রান করে জিম্বাবুয়ে। স্বীকৃত টি২০তে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটিই। গত বছরের সেপ্টেম্বরে চীনের হাংজুতে এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ২০ ওভারে ৩১৪ রান করেছিল নেপাল। স্বীকৃত কিংবা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এতদিন সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল সেটিই। তাদের ছাড়িয়ে এবার নতুন চূড়ায় উঠল জিম্বাবুয়ে।

জিম্বাবুয়ের ইনিংসে এদিন ছক্কা হয়েছে মোট ২৭টি। এটিও স্বীকৃত টি২০তে রেকর্ড। মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপালের ২৬ ছক্কা ছিল আগের সর্বোচ্চ। ছক্কা ও চার মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের ইনিংসের ৫৭ বাউন্ডারিও রেকর্ড। কিছুদিন আগে হায়দরাবাদে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের ৪৭ বাউন্ডারি ছিল আগের রেকর্ড। রাজার ১৫ ছক্কা আন্তর্জাতিক টি২০তে এক ইনিংসে যৌথভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ। আর তার ৩৩ বলে সেঞ্চুরি আন্তর্জাতিক টি২০তে যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম। 

গত ফেব্রুয়ারিতে নেপালের বিপক্ষে ৩৩ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন নামিবিয়ার ইয়ান নিকোল লফটি-ইটন। পরে জুনে তাকে ছাড়িয়ে সাইপ্রাসের বিপক্ষে ২৭ বলে সেঞ্চুরি করে নতুন রেকর্ড গড়েন এস্তোনিয়ার সাহিল চৌহান। ওই ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৮ ছক্কার কীর্তিও গড়েন তিনি।

চলতি বাছাইয়ে প্রথম ম্যাচে সিশেলসের বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ে করে ৫ উইকেটে ২৮৬ রান। তখন পর্যন্ত টি২০তে যা ছিল তাদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। পরের ম্যাচে মোজাম্বিককে ৫৬ রানে গুটিয়ে তারা ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় পাঁচ ওভারেই। তৃতীয় ম্যাচে রুয়ান্ডার বিপক্ষে ২৪০ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে তারা গুটিয়ে দেয় ৯১ রানে। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে সেদিন ১৮ রানে ৫ উইকেট নেন রাজা। পরের ম্যাচে তিনি ঝড় তুললেন ব্যাট হাতে।

নেইরোবিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বেনেট ও মারুমানির ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় জিম্বাবুয়ে। পাওয়ার প্লেতে তারা করে ১ উইকেটে ১০৩ রান। আন্তর্জাতিক টি২০তে পাওয়ার প্লেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ এটি। গত মাসে এডিনবরায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে রান তাড়ায় প্রথম ৬ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার ১১৩ রান সর্বোচ্চ। মারুমানি ফিফটি করেন স্রেফ ১৩ বলে। জিম্বাবুয়ের হয়ে দ্রুততম ও সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি২০তে যৌথভাবে তৃতীয় দ্রুততম ফিফটি এটি।

৯ চার ও ৪ ছক্কায় ১৯ বলে ৬২ রান করে ষষ্ঠ ওভারে বিদায় নেন মারুমানি। তিনে নেমে ৫ বলে ১২ রান করে ফেরেন ডিওন মায়ার্স। বেনেট ২৬ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় করেন ৫০ রান। পাঁচে নেমে ১১ বলে ২৫ রান করেন রায়ান বার্ল। চারে নামা রাজার পঞ্চাশ ছুঁতে লাগে ২০ বল। পরের ১৩ বলে তিনি পূর্ণ করেন শতক। এই সংস্করণে জিম্বাবুয়ের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হলেন রাজা। কদিন আগে রুয়ান্ডার বিপক্ষে ডিওন মায়ার্সের ৯৬ ছিল আগের সর্বোচ্চ।

ছয় নম্বরে নেমে ১৭ বলে ৫ ছক্কা ও ৩ চারে ৫৩ রানে অপরাজিত রয়ে যান ক্লাইভ মাডান্ডে। পঞ্চম উইকেটে তিনি ও রাজা মিলে ১৪১ রানের জুটি গড়েন কেবল ৪০ বলে। সবচেয়ে বেশি ঝড় বয়ে যায় গাম্বিয়ার পেসার মুসা জোবারতেহর ওপর দিয়ে। ৪ ওভারে তিনি দেন ৯৩ রান। আন্তর্জাতিক টি২০তে সবচেয়ে খরুচে বোলিং এটি। বিব্রতকর এই রেকর্ড থেকে তিনি মুক্তি দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার কাসুন রাজিথাকে। ২০১৯ সালে অ্যাডিলেইডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রাজিথা ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ৭৫ রান।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় স্রেফ ৫৪ রানে গুটিয়ে যায় গাম্বিয়া। জিম্বাবুয়ে পায় ২৯০ রানের জয়। আন্তর্জাতিক টি২০তেরানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয় এটি। হাংজুর সেই ম্যাচে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপালের ২৭৩ রানে জয় ছিল আগের রেকর্ড।

মিরাজ/ এসআর

×