ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১

সাকিবের বিষয়টি এড়িয়ে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দিতে চান

ক্রিকেটেই পুরো মনোযোগ সিমন্সের

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২৩, ২০ অক্টোবর ২০২৪

ক্রিকেটেই পুরো মনোযোগ সিমন্সের

কাল থেকে শুরু দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে ফিল সিমন্সের মনোযোগী ছাত্রের ভূমিকায় শান্ত-মুশফিকরা

গত ৭ বছরে পঞ্চমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ পরিবর্তন হয়েছে। তবে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে দায়িত্বটা নিয়েছেন ফিল সিমন্স। চান্দিকা হাতুরুসিংহেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণার সময়ই তাকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি জানান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। তার আগে পর্যন্ত হাতুরুর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন সেটি বোঝা যায়নি। কোচ হিসেবে নাম ঘোষণার ১৫/১৬ ঘণ্টা পরেই বাংলাদেশে আসেন সিমন্স।

তবে ৩ দিন কেটে যাওয়ার পর শনিবার দুপুরে তিনি প্রথমবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হওয়া সংবাদ সম্মেলনে এসেই বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ওঠা প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, যারা স্কোয়াডে আছে তাদের নিয়েই ভালো কিছু বের করে আনতে চান। তরুণদের গড়ে তুলে সাফল্য আনতে পুরোপুরি মনোযোগ ক্রিকেটে দিতে চান তিনি এবং সেই সঙ্গে ক্রিকেটাররাও যাতে ক্রিকেট নিয়েই ভাবে সেটি নিশ্চিত করতে চান। 
বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কাজ করার আগ্রহ এর আগে দুইবার দেখিয়েছেন সিমন্স। ২০১৭ সালে হাতুরু আকস্মিক পদত্যাগের পর রিচার্ড পাইবাসসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে বিসিবিতে এসে সাক্ষাৎকার ও নিজের পরিকল্পনার প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন তিনি। তবে স্টিভ রোডস হন কোচ। ২০১৯ সালে রোডস বিদায় নিলে তখনো আবেদন করেন সিমন্স, কিন্তু দায়িত্ব পান রাসেল ডমিঙ্গো। এবার হাতুরুকে সরিয়ে তাকেই নেওয়া হয়েছে এবং প্রস্তাবটা এবার বিসিবি দিয়েছে। এ বিষয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘আজ (শনিবার)?

তাহলে দেড় সপ্তাহ আগে প্রস্তাব পেয়েছি। আগে তো চাকরি পাইনি, কীভাবে বলব এখানে অনুভূতির ভিন্নতা কতটুকু? দুর্ভাগ্যবশত তখন আমি চাকরিটা পাইনি।’ সর্বশেষ ৭ বছরে বাংলাদেশের প্রধান কোচ পদে ৫ পরিবর্তন এসেছে। কোচের পদ খুব একটা সহজ নয় এখানে। এ বিষয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক কোচের প্রতিটি চাকরিই হট সিট। বাংলাদেশে কাজটা হয়তো কঠিন। আমার কাজ হলো ছেলেরা যাতে নিজের মতো খেলতে পারে, উপভোগ করে। খেলার জন্য তাদের প্রস্তুত করা। গত ২ দিন চমৎকার গেছে।’ খুব কম সময় পাচ্ছেন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুই টেস্ট শুরুর আগে কাজ করার।

সেজন্য দ্রুতই মাঠে নেমেছে এবং অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তসহ সব ক্রিকেটারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এ বিষয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘আমি ক্যাপ্টেন শান্তর সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করেছি তার দল নিয়ে ভাবনা। সে কি করতে চায়, তাকে নিয়ে দলের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছি। তার পরিকল্পনা কি সেসব নিয়েই আলোচনা করেছি।’
খুব বেশি কাজের বাইরে থাকার সুযোগ পাবেন না সিমন্স। হাতুরুকে ছাঁটাইয়ের পেছনে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ছুটি নেওয়ার অভিযোগও অন্যতম। এ বিষয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘এখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমাদের সিরিজ। এরপর আমরা আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলে ক্যারিবিয়ানে যাব। তারপর হয়তো কিছুটা সময় থাকবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে সেটি। যে সময় পাব তখন ভাবা যাবে কি করব। তার আগে যে ব্যস্ততা আছে সেটা নিয়েই কাজ করে যেতে চাই।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সম্প্রতিই পাকিস্তান ও ভারত সফরের ম্যাচগুলো পর্যক্ষেণ করেছেন সিমন্স।

এরপর তরুণদের নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি আগ্রহী হয়েছি তরুণ খেলোয়াড়ের সামর্থ্য দেখে। প্রথমত, আমি তরুণদের গড়ে তুলতে চাই। পাশাপাশি এখানে টেস্ট ও ওয়ানডে সংস্করণে কাজ করার সুযোগও আছে। সবমিলিয়ে আমার এখানে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল না।’ সিমন্স এখন সবকিছু পেছনে ফেলে ক্রিকেট মনোযোগ দিচ্ছেন। সাফল্যও আসবে সামর্থ্য অনুসারে খেলতে পারলে সেটিই মনে করছেন তিনি, ‘আমরা সামনের কয়েকটা টেস্ট জিততে পারলে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা জাগবে।

সব অভিজ্ঞতাই আমাকে ছেলেদের সোমবারের জন্য তৈরি করতে সাহায্য করবে। আফগানিস্তান আমাকে ভাষা জটিলতার চ্যালেঞ্জ সামলে কাজ করা শিখিয়েছে। আয়ারল্যান্ডে কাজ করে বুঝেছি কীভাবে তরুণদের গড়ে তুলতে হয়। সব কিছুই এখানে কাজে দেবে। কঠোর পরিশ্রম করলে ফল আসবে। গত দুই দিনে ছেলেদের মধ্যে সেটা দেখেছি। এই ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে, দক্ষতা ও ফিটনেস নিয়ে।’ সাকিব আল হাসানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার নেই এবার।

তার খেলার বিষয়টি নিয়ে অনেক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সেসব নিয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘ভালো দিক হচ্ছে, আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। আমার প্রথম ব্যাপার হচ্ছে ক্রিকেট। আমার সামনে যে স্কোয়াড আছে, তাদের সোমবারের জন্য প্রস্তুত করা। ক্রিকেটের বাইরের সব দ্বিধা দূরে রেখে আমরা ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে চাই।’

×