ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১

পাকিস্তানকে হারিয়ে আজই শেষ চার নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ

রুমেল খান

প্রকাশিত: ০০:২১, ২০ অক্টোবর ২০২৪

পাকিস্তানকে হারিয়ে আজই শেষ চার নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ

পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগে ঝালিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশের মেয়েরা

স্বল্প দলের বা তিন দলের ছোট গ্রুপে থাকলে একটা সুবিধা আছে। সেটা হচ্ছে একটা ম্যাচ জিতলেই সেমিফাইনালে নাম লেখানোর সুযোগ পাওয়া যায়। আজ রবিবার বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সামনে উপস্থিত হয়েছে সেই সুযোগ। সেটা হলো আজ সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ম্যাচে তারা যদি পাকিস্তানকে হারাতে পারে, তাহলে এক ম্যাচ বাকি রেখেই সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালের টিকিট কাটতে পারবে। 
আর এই লক্ষ্যপূরণে বাংলার বাঘিনীরা বেশ এগিয়েই আছে প্রতিপক্ষ দলের চেয়ে। কেননা সাফের সর্বশেষ (২০২২) আসরে তারা পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছিল। এ ছাড়া সামগ্রিক মুখোমুখি লড়াইয়েও লাল-সবুজ বাহিনী শতভাগ জয়ের নিরিখে এগিয়ে (২ ম্যাচের প্রতিটিতেই জয়)। 
এবারের সাফে অংশ নিচ্ছে সাত দেশ। বাংলাদেশের এ-গ্রুপে আছে তিন দল। তাই বি-গ্রুপের চেয়ে এই গ্রুপের দলগুলোর জন্য তুলনামূলক সহজ শেষ চার নিশ্চিত করা। তবে এর উল্টোটাও কিন্তু সত্যি। কেননা এক ম্যাচ হেরে গেলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা কঠিন। তেমনটাই ঘটেছে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে (গত ১৭ অক্টোবর) ভারতের কাছে ৫-২ গোলে হেরে অনেকটাই বিদায়ের পথে আছে তারা। তবে আজ যদি তারা বাংলাদেশকে পরাভূত করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশকে তাদের পরের ম্যাচে ‘মাস্ট উইন’-এর জন্য মোকাবিলা করতে হবে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে। আজকের ম্যাচটি পাকিস্তানের জন্য প্রতিশোধের ম্যাচও বটে।

ফলে বাংলাদেশকে সতর্কভাবেই খেলতে হবে। কোনোমতেই দুর্বল ভাবা চলবে না প্রতিপক্ষকে। কেননা পাকিস্তান তাদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হারলেই অসাধারণ খেলেছে। যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশের কোচিং ম্যানেজমেন্টকে। ফলে পিটার বাটলারকে আজ বুঝেশুনেই দলকে সেভাবেই খেলাতে হবে। 
এ-গ্রুপে ৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ভারত। এক ম্যাচ খেলেও পয়েন্টশূন্য পাকিস্তান। বাংলাদেশ আজ প্রথম নামতে যাচ্ছে মাঠে। তাই তিন দলেরই এখনো সুযোগ আছে সেমিফাইনালে যাবার। প্রথম ম্যাচ ভালো করতে পারলে বাংলাদেশের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবারও সুযোগ আছে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, ‘পাকিস্তান ও ভারতের গত ম্যাচ যদি দেখে থাকেন দেখবেন পাকিস্তান টিম গতবার যেটা ছিল তার থেকে অনেক অনেক বেটার। ভারতের সঙ্গেও তারা চেষ্টা করেছে সমানতালে খেলার। আমার কাছে মনে হয়েছে পাকিস্তানের গতবারের টিমের সঙ্গে এবারের টিমের বিস্তর ফারাক রয়েছে। সহজ হবে না। আমাদের জন্যও অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। চেষ্টা থাকবে অবশ্যই, যেহেতু প্রথম ম্যাচটা জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে। তাই জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামব।’
সাবিনা ছাড়া দলে সেরকম অভিজ্ঞ ফুটবলার আর নেই। এটা কি দলের জন্য মাইনাস পয়েন্ট? সাবিনা বলেন, ‘প্রভাব আসলে পড়বে না। স্বপ্না এবং বিশেষত আঁখির কন্ট্রিবিউশনটা ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য অপরিহার্য। যেহেতু তারা নেই, নতুন কিছু ফুটবলার আছে, এটা তাদের জন্য সুযোগ ওদের জায়গায় নিজেদের অবস্থান পাকা করার। সবকিছু মিলিয়ে তাদের আমরা মিস করব। তবে মনে হয় না তাদের না থাকার অভাবটা মাঠে বোঝা যাবে।’
শিরোপা ধরে রাখার বিষয়ে সাবিনার ভাষ্য, ‘এটা বলা সম্ভব না। গতকাল ভুটান এবং নেপালের ম্যাচ যদি দেখেন, ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে। এখানে সবকিছুই আনপ্রেডিক্টেবল হচ্ছে। আমার মনে হয় সাউথ এশিয়ায় যে টিমগুলোই আছে খুব সহজভাবে এবার ট্রফিটা কেউ নিতে পারবে না।’
গ্রুপ সেরা হওয়ার ক্ষেত্রে গোল ব্যবধান নিয়ে সাবিনার ভাবনা, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে গোল বের করা। নিজেদের জায়গাটা নিশ্চিত করা। স্টেপ বাই স্টেপ অবশ্যই লক্ষ্য তো থাকবেই। সেফ জোনে তো সবাই থাকতে চাইবে। সেদিক দিয়ে আমাদের ও পরিকল্পনা থাকবে যদি সুযোগ পাই, সেগুলো যেন মিস না হয়। প্রতিটা প্লেয়ারের জন্য আমাদের সেটাই বার্তা থাকবে।’
সবশেষে সাবিনা বলেন, ‘আমিও চাই এবং বিশ্বাস করি পাকিস্তান কঠিন লড়াই করবে। দেওয়াও উচিত আসলে। দিন শেষে প্রতিটি টিম বেটার হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়লে খেলোয়াড়দের উন্নতি হয়। এই জায়গাটা আমার মনে হয় তাদের সঙ্গে আমাদের একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে।’

×