ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

এমন দিন আসবে, ভেবেছিলেন বাবর!

স্পোর্টস রিপোর্টার   

প্রকাশিত: ২১:৫২, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

এমন দিন আসবে, ভেবেছিলেন বাবর!

 বাদ পড়লেন পাকিস্তান তারকা ব্যাটসম্যান

পাকিস্তান তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেই সময়ের অন্যতেম সেরা ব্যাটসম্যান আবর আজম। অনেকেই তাকে বিরাট কোহলির সঙ্গে তুলনা করেন। সেই বাবরই ক্যারিয়ারে এই প্রথম অফ-ফর্মের কারণে দল থেকে বাদ পড়লেন। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কাছে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের কাছে লজ্জাজনক ভাবে হেরে গেছে পাকিস্তান। বুধবার মুলতানে শুরু দ্বিতীয় টেস্ট। সিরিজে টিকে থাকতে শান মাসুদের দলকে যেখানে জয়ের কোন বিকল্প নেই। এই টেস্টের জন্য খোলনচে বদলে স্কোয়াড ঘোষনা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বাবরের পাশাপশি দুই তারকা পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি আর নাসিম শাহও ছিটকে গেছেন। নতুন মুখ হাসিবউল্লাহ, মেহরান মুমতাজ।

২০২৩ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৯ টেস্টের ১৭ ইনিংস মিলিয়ে বাবর রান করেছেন ৩৫২, গড় মাত্র ২০.৭০। তাঁর বাদ পড়াটা তাই সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছিল। যদিও  সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিসিবি ‘বাদ দেওয়া’ শব্দযুগল ব্যবহার করেনি। তবে বাবরসহ অন্য যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের বাজে ফর্ম যে এই সিদ্ধান্তে একটা বড় ভূমিকা রেখেছে, সেটি বিবৃতিতে স্পষ্ট,‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু খেলোয়াড়ের সাম্প্রতিক ফর্ম ও ফিটনেস এবং ২০২৪-২৫ মৌসুমে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ সূচির কথা মাথায় রেখে নির্বাচকেরা বাবর আজম, নাসিম শাহ, সরফরাজ আহমেদ ও শাহিন আফ্রিদিকে বিশ্রাম দিয়েছে’

টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট উঁচিয়ে ধরতে বাবর আজম বোধ হয় ভুলেই গেছেন! এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে সর্বশেষ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। এরপর তো সময় কম হয়নি। দিনের হিসাবে ৬৫১ দিন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে সুযোগ এসেছিল। সেই সুযোগটাও কাজে লাগাতে পারেননি। মুলতানের ব্যাটিং–স্বর্গে ক্রিস ওকসের বলে আউট হয়েছেন ৩০ রান করে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাবরের খেলা শেষ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংসটি ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। করাচিতে করেছিলেন ১৬১ রান। এরপর যে কী হলো! সেই ইনিংসের পর এই সংস্করণে বাবর খেলেছেন ১৭ ইনিংস। যেখানে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস ৪১ রানের, অস্ট্রেলিয়া সফরে। এই ১৭ ইনিংসে বাবরের গড় মাত্র ২১.২৩। টেস্ট ক্যারিয়ারে এত দীর্ঘ সময়ে কখনোই ব্যাট না উঁচিয়ে থাকেননি বাবর। এর আগে ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে টানা ৭ ইনিংসে ফিফটি পাননি। কোথায় ৭ ইনিংস, কোথায় ১৭! ফিফটির খরায় ভোগা বাবর অবশ্য এই খারাপ সময়েও বেশির ভাগ ম্যাচেই ভালো শুরু পেয়েছেন। এই ১৭ ইনিংসের মধ্যে ১২ ইনিংসেই ২০ রানের বেশি করেছেন বাবর। অর্থাৎ তিনি শুরুটা পাচ্ছেন। তবে সেটা ধরতে রাখতে পারছেন না। তবে এমন খারাপ সময় কাটানোর পরও টেস্টে বাবরের গড় ৪৪.৩৫। এই বাজে সময়ের আগে টেস্টে বাবরের গড় ছিল প্রায় ৫০।

বাবরের বর্তমান গড়ের যেকোনো ব্যাটসম্যানকেই আসলে নির্দ্বিধায় ভালো বলা যায়। আর তাঁর এমন ভালো গড়ের মূল কারণে ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়টা।

২০১৯ সালের শুরু থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টেস্টে বাবরের গড় ছিল প্রায় ৬০। এই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় বাবরের গড় ৫০-এর বেশি—৫২.৫০। ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাবর ব্যাটিং করেছেন ৪৮ গড়ে, শ্রীলঙ্কার মাটিতে তো প্রায় ৭০ আর দেশের মাটিতে বাবর ব্যাটিং করেছেন ৭৫ গড়ে। এই সময়টায় বাবরের দারুণ পারফরম্যান্সের কারণেই মূলত বিরাট কোহলি, জো রুটদের সঙ্গে তাঁর তুলনার কথা উঠেছিল। তবে এখন বোধ হয় সে তুলনাটাই আর আসবে না!

মিরাজ/শহিদ

×