বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও ক্যারিবীয় অধিনায়ক হাইলি ম্যাথুজ
২০১৪ সালে নিজেদের প্রথম বিশ^কাপ অংশগ্রহণেই চমক দেখানো পারফর্ম্যান্স ছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের। গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে পরে নবম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছে সেবার। কিন্তু এরপর টানা ৪ আসরে কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি। কিন্তু কোনোবারই গ্রুপ পর্ব পেরোতে না পারা বাংলাদেশের মেয়েরা এবার সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে বিশ^কাপ যাত্রা করেন। সেই পালে হাওয়া দেয় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করার কারণে।
তবে ইংল্যান্ড নারী দলকে বাগে পেয়েও হারাতে না পারার আক্ষেপ দ্বিতীয় ম্যাচে। আজ ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আরেক সাবেক বিশ^চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারী ক্রিকেট দলের বিপক্ষে নামছে বাংলাদেশের মেয়েরা। রাত ৮টায় শারজায় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে জেতার লক্ষ্যেই নামবে বাংলাদেশ। হেরে গেলে সেমির স্বপ্ন ম্লান হয়ে যাবে। একই পরিস্থিতি ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও। তারাও যে করেই হোক জিততে চায় এই ম্যাচটি।
এখন পর্যন্ত ‘বি’ গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা নারী ক্রিকেট দল ৩ ম্যাচের দুটিতে জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। আর ইংলিশ মেয়েরা সমান পয়েন্ট পেয়েছে দুই ম্যাচে এবং দুই অবস্থান করছে। এরপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশের অবস্থান। উভয় দল দুটি করে ম্যাচ খেলে একটি করে জিতেছে এবং আরেকটিতে হেরেছে। তাই সেমিতে যাওয়ার জন্য আজ দুই দলের লড়াইয়ে বিজয়ীরা ভালোভাবেই টিকে থাকবে সেমিতে ওঠার রেসে।
পরাজিতদের সম্ভাবনা শেষ না হলেও তা ক্ষীণ হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত বিশ^কাপের বাইরে কখনোই ক্যারিবীয় মেয়েদের বিপক্ষে টি২০ খেলেনি বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের আসরে সিলেটে ৩৬ রানে, ২০১৬ সালে চেন্নাইয়ে ৪৯ রানে এবং ২০১৮ সালের আসরে প্রভিডেন্সে ৬০ রানে হেরেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। অর্থাৎ কোনো ম্যাচেই বিন্দুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার আরেকটি ভিন্ন মাঠ ও পরিবেশে দুই দলের সাক্ষাৎ ৬ বছর পর। এই মাঠে এবার তেমন রান হচ্ছে না। তাই ব্যাটিংয়ে যারা তুলনামূলকভাবে ভালো করছে তারাই জয়ের হাসি হাসতে পারছে।
লো-স্কোরিং ম্যাচে ব্যাটারদের থাকে বড় পরীক্ষা। সেই পরীক্ষাতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও ক্যারিবীয় নারীরা সমানে-সমান। ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজ মেয়েরা প্রথম টি২০ হেরেছে গত আসরের রানার্সআপ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০ উইকেটে। পরের ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। আর বাংলাদেশ স্কট মেয়েদের ১৬ রানে হারিয়ে ১০ বছর পর বিশ^কাপ মঞ্চে জয়ের মুখ দেখে। আর ২০০৯ সালের বিশ^চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ১১৮ রানের মধ্যে আটতে রাখতে পারলেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২১ রানে হেরে যায়। এবার তাই ব্যাটিংয়ে উন্নতির দিকেই দৃষ্টি বাংলাদেশের। একই চিন্তা ক্যারিবীয়দেরও।
তবে সেমিতে ওঠার জন্য এই ম্যাচ জিততে চায় বাংলাদেশের মেয়েরা। এ বিষয়ে সহঅধিনায়ক নাহিদা আক্তার বলেছেন, ‘যেহেতু আমরা সেমিফাইনাল খেলতে চাই, সেহেতু এই দুটি ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। পরের ম্যাচ আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। আমরা এই ম্যাচে মনোযোগ দিচ্ছি যে, কীভাবে জিততে পারি।’ সেই লক্ষ্য নিয়ে নামার জন্য ইংলিশ মেয়েদের কাছে হারের আক্ষেপ ভুলতে ৪ দিন সময় পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এবার মাঠে নেমে ব্যাটে-বলে জ¦লে ওঠার অপেক্ষা।