ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

ভারত সফরে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় টি২০ বুধবার, দিল্লি  পৌঁছেছেন শান্ত-মিরাজরা  

ব্যাটিং নিয়েই যত দুশ্চিন্তা  

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ৮ অক্টোবর ২০২৪

ব্যাটিং নিয়েই যত দুশ্চিন্তা  

বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্মরণীয় যত সাফল্য তার বেশিরভাগই এসেছে বোলারদের হাত ধরে, বিপরীতে ব্যাটিংয়ের গল্পটা কেবলই হতাশার। ভারত সফরেও সেই একই দৃশ্য। দুই টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর প্রথম টি২০তেও পাত্তা পায়নি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। চেন্নাইয়ে ১৪৯ ও ২৩৪ রানের পর কানপুর টেস্টে ২৩৩ ও ১৪৬। ফরম্যাট বদলায় কিন্তু ব্যাটিংয়ের করুণ চিত্রটা বদলায় না। গোয়ালিয়রে প্রথম টি২০তে মাত্র ১২৭ রানে গুটিয়ে গিয়ে হার ৭ উইকেটে। সাত নম্বরে নেমে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩৫ রান মেহেদি হাসান মিরাজের।

দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি ছয় ব্যাটসম্যান। অথচ বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, ঋষভ পন্থদের ছাড়া ভারতের এই দলের অন্যদের চেয়ে লিটন দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা অভিজ্ঞতায় ঢের এগিয়ে। টি২০তে দলীয় দুইশ’ রানের জামানায় নিয়মিত দেড় শও করতে পারছে না বাংলাদেশ। কেন? কারণ খুঁজছেন অধিনায়ক। 
‘আমি যদি গত ১০ বছর দেখি, আমরা এ রকমই ব্যাটিং করে যাচ্ছি। মাঝেমধ্যে হয়তো ভালো ব্যাটিং করি।’ বলছিলেন শান্ত। ২০২০ সালের পর থেকে হিসাব করলে ৮৫ টি২০ খেলে মাত্র ১০ বার দলীয় স্কোর ১৭০ পার করতে পারে বাংলাদেশ। ২০০ রান পার করে ৩ বার। সেই তিনবারে অবশ্য প্রতিপক্ষ ছিল আয়ারল্যান্ডও জিম্বাবুয়ে। এ ছাড়া আইরিশদের বিপক্ষে দুইবার ২০০ পার করে। দুটোই ২০২৩ সালের মার্চে। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দলীয় ২০০ রান এসেছিল ২০২০ সালে। এরপর থেকে টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের স্কোর যতবারই ১৭০ পেরিয়েছে তাতে প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে আর শ্রীলঙ্কা। ২০২১ সালে বাংলাদেশ খেলেছে ২৭টি টি২০। তার মধ্যে টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে কেবল ২বার ১৭০ এর বেশি স্কোর এসেছে।

একবার প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, অন্যবার শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপের ম্যাচে লঙ্কানদের বিপক্ষে করা ১৭১ রানের দলীয় সংগ্রহ অবশ্য বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতাতে পারেনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছিল ১৯১ রান। অন্য ইনিংসটি পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। সেটাও বিশ্বকাপের মঞ্চে। ‘এটার জন্য আমরা ঘরের মাঠে যখন অনুশীলন করি, তখন উইকেটের পরিবর্তন...কিছু না কিছু একটা পরিবর্তন আনতে হবে। ঘরের মাঠে ১৪০-১৫০ রানের উইকেটই হয়। ব্যাটসম্যানরা ওই রানটা কীভাবে করতে হয়, সেটা জানে।

কিন্তু আমরা জানি না কীভাবে ১৮০ করা যায়। ওই ধরনের উইকেট অনুশীলন করলে হয়তো আমাদের আরেকটু উন্নতি হবে। তবে আমি শুধু উইকেটের দোষ দেব না। এখানে মানসিক অনেক ব্যাপার থাকে।’ বলছিলেন অধিনায়ক।  টি২০তে বাংলাদেশের পারফর্ম্যান্স খারাপের দিকে যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অবশ্য নিজেদের এত খারাপ দল বলতে রাজি নন শান্ত, ‘খারাপ হয়েছে যে সেটাও বলব না। আমার মনে হয় যে, এর থেকে আমরা ভালো দল। শেষ অনেকদিন ধরে এই সংস্করণে আমরা ভালো পারফর্ম্যান্স করছি না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না আমরা এত খারাপ দল।’ ভারত সফরে টি২০ সিরিজ শুরুর দিন দুয়েক আগে শান্ত জানিয়েছিলেন, এখান থেকেই ক্রিকেটারদের মাঝে ভিন্ন এক অ্যাপ্রোচের দেখা মিলবে। সেটার ছিঁটেফোঁটা অবশ্য দেখা গেছে ইনিংসের প্রথম ওভার থেকেই। আর্শদীপ সিংকে প্রথম স্লিপ এবং থার্ডম্যানের মাঝ দিয়ে চার মারার পরের বলেই বাউন্ডারির জন্য উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন লিটন। তবে টপ এজড হয়ে তাকে উইকেট দিতে হয়েছে। চাপের মুখে ছক্কার আশায় খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তো নিজের খেলা দ্বিতীয় বলেই কভারের ওপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ফিরেছেন ১ রানে।

জাকের আলী অনিক কিংবা রিশাদ হোসেনের ব্যাটিংয়েও ছিল সেটার ছাপ। নতুন অ্যাপ্রোচ আর ইন্টেন্টে খেলতে গিয়ে ১২৭ রানে অলআউট! সেটাও শান্ত আর মিরাজের ১১০ ছুঁইছুঁই স্ট্রাইক রেটে। এই হচ্ছে পজিটিভি অ্যাপ্রোচের নমুনা, ‘আমি যে অ্যাপ্রোচের কথা বলেছিলাম, সে জন্য ব্যাটিংয়ে ভালো শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা ভালো হলে কাজটা সহজ হয়ে যায়। যারা ওখানে ভালো খেলছে, তাদের দায়িত্ব নিতে হবে।’  

×