ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু আজ

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:১৩, ৩ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু আজ

নবম নারী টি২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আজ স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলবে বাংলাদেশের মেয়েরা।

মরুর দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় বাংলাদেশ-স্কটল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে নারী টি২০ বিশ্বকাপের নবম আসরের পর্দা উঠছে আজ। টাইগ্রেসরা যে কিছুটা বিষণœ মনে শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে পা রাখছে, দেশ ছাড়ার আগেই সেটি জানিয়েছিলেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। কারণ ১০ বছর পর ফের মেয়েদের টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা-শঙ্কায় শেষ মুহূর্তে টুর্নামেন্ট আমিরাতে সরিয়ে নেয় আইসিসি।

২০১৪ থেকে পাঁচটি টি২০ বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে শেষ চার আসরে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি মেয়েরা। এবার সে হতাশা দূর করে সেমির লক্ষ্য সেট করেছেন জ্যোতি। এজন্য প্রথম ম্যাচে জয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহ্যবাহী শারজায় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটায়। একই ভেন্যুতে রাত আটটায় দিনের আরেক ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা।
মেয়েদের টি২০ বিশ্বকাপ শুরু ২০০৯ সালে। ২০১৪ সালের চতুর্থ আসরে আয়োজক হওয়ার সুবাদে প্রথমবার অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। টানা পাঁচটি টি২০ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মেয়েদের অর্জন বলতে সেই প্রথমবার শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ড নারী দলের বিপক্ষে পাওয়া দুটি জয়, ‘আমি নিজেও চারটি বিশ্বকাপ খেলেছি, এখন পর্যন্ত একটা ম্যাচ জিততে পারিনি। অবশ্যই এবার বিশ্বকাপে আমার ব্যক্তিগতভাবে যেমন লক্ষ্য, তেমনি গোটা দলেরই লক্ষ্য যেন আমরা একটা ম্যাচ জিতে শুরু করতে পারি।’ বলছিলেন জ্যোতি।

আর শুরুটা জয় দিয়ে হলে সেমিফাইনালের স্বপ্নই বা কেন নয়! অধিনায়কের বক্তব্যে প্রচ্ছন্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে সে আশাও, ‘প্রতিটি ম্যাচের আগে যদি ওই দলের প্রতি বেশি মনোযোগ দিই এবং আমরা যদি ম্যাচ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি, আমাদের জন্য ভালো হবে। আমরা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে এসেছি টি২০তে (তাদের দেশে)। তাদের বিপক্ষে আমাদের ভালো স্মৃতি আছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের বরাবরই শুধু বিশ্বকাপে দেখা হয় এবং খুব কম খেলা হয়। বলা যায় নতুন প্রতিপক্ষ, ওদের জন্যও কিন্তু কঠিন হতে পারে।

শারজায় খেলা, আমাদের স্পিন ভালো। যে কোনো কিছুই হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘প্রথম লক্ষ্য থাকবে ম্যাচ জেতা। এরপর যখন আমরা ছন্দ পাব, সেই ছন্দেই, ...সেমিফাইনাল কে না খেলতে চায়! আমাদেরও লক্ষ্য থাকবে তেমন কিছু করা।’ বাংলাদেশের মেয়েদের ক্রিকেটকে পরের ধাপে নিতে বড় মঞ্চে বড় কিছু করার বিকল্প দেখেন না নিগার, ‘বাকি যে মেয়েরা, বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলতে চায় বা স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশের হয়ে বড় কিছু করবে, তাদের জন্যও আমরা ভালো কিছু করতে চাই।’ 
আমিরাতে এবার মোট ১০টি দল শিরোপার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছে। এর মধ্যে এ-গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বি-গ্রুপে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শারজাহ ও দুবাইয়ে গ্রুপ পর্ব ও নক-আউট মিলিয়ে মোট ম্যাচ ২৩টি। দুই গ্রুপের সেরা দুটি করে দল খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে। দুটি সেমিফাইনাল ১৭ ও ১৮ অক্টোবর। দুবাইয়ে ফাইনাল ২০ অক্টোবর।

আগের নয় আসরে রেকর্ড ছয় বারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া! ২০২৩ সালে সর্বশেষ আসরের ফাইনালে আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিয়ে হেক্সা-মিশন পূর্ণ করে তারা। স্কটল্যান্ড এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মেয়েদের বিপক্ষে চারটি টি২০ ম্যাচ খেলে সবটিতেই হেরেছে। তাদের বিপক্ষে জয়টা যেন অবধারিত। তবে অধিনায়ক জ্যোতি, অভিজ্ঞ ক্রিকেটার জাহানারা আলমসহ অন্যরাও বলেছেন, এমন নয় যে স্কটল্যান্ড খুব সহজ প্রতিপক্ষ হবে আর তাদের বিপক্ষে খেলা মানেই জয়।

স্কটল্যান্ডকেও কষ্ট করেই হারাতে হবে এবং সেই কষ্টটা অন্যদের সঙ্গেও করতে হবে। জ্যোতির ভাষায়, ‘যদি আমরা নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারি, তবে শুধু স্কটল্যান্ড নয় অন্য দলের বিপক্ষেও জিততে পারব।’ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বড় ভরসা অধিনায়ক-উইকেটরক্ষক জ্যোতি। ওপেনিংয়ে মুর্শিদা খাতুন, মিডল অর্ডারে সুবহানা মশতারিরও ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে। আছেন তিন স্পিনিং-অলরাউন্ডার রাবেয়া খান, দিশা বিশ্বাস এবং ঋতু মনি।

পেস আক্রমণে অভিজ্ঞ জাহানারা আলম ও সেনসেশনাল মারুফা আক্তার। শারজার স্পিনিং-কন্ডিশনে বাঁহাতি নাহিদা আক্তার, লেগস্পিনার ফাহিমা খাতুনের সঙ্গে তিন অলরাউন্ডার ভাইটাল রোল প্লে করবেন। নিজেদের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় বাড়তি প্রেরণা জ্যোতিদের।

×