ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১

কে হচ্ছেন বাফুফে সভাপতি? 

প্রকাশিত: ১৮:০১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কে হচ্ছেন বাফুফে সভাপতি? 

বাফুফে সভাপতি পদে লড়াই হতে পারে ইমরুল ও তাবিথের মধ্যে।

এখনো পর্যন্ত প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা না রাখলেও ফুটবল সংগঠক ইমরুল হাসান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নতুন সভাপতি হচ্ছেন, তা নিয়ে আলোচনা বেড়েছে ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন আরেক সংগঠক তরফদার মো। রুহুল আমিন ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল মিন্টু তনয় তাবিথ আওয়ালের (যিনি বাফুফের দুইবারের সাবেক সহসভাপতি) নাম শোনা গেছে। তরফদার ও তাবিথ উভয়েই প্রার্থী হবেন, তেমন ঘোষণাও দিয়েছেন ইতোমধ্যে। 

এদিকে, ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা ইতোমধ্যেই তরফদারকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। ফলশ্রুতিতে আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে দেশের ক্লাব ফুটবলে সাফল্যের বিচারে আধিপত্য বিস্তার করা বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসানের সাথে তাবিথ আওয়ালের মধ্যেই লড়াই হতে যাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। 

অন্যদিকে সোমবারের (৩০ সেপ্টেম্বর) মধ্যে ১৩৯ জনের মনোনীত কাউন্সিলরদের নাম ক্লাব, জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন ও সংস্থাগুলো কর্তৃক বাফুফের কাছে স্ব স্ব সংগঠনের প্রতিনিধির নাম প্রেরণ করার কথা।

সূত্র মতে, কেউ কেউ দাবী করছে-কাউন্সিলরদের সংখ্যা এবার হবে মোট ১৪৩ জনের। অভিযোগ উঠেছে, বাফুফে কর্তৃক সারা দেশে সংস্থাগুলোর কাছে আইনি মোতাবেক পত্র প্রদান না করে পছন্দমতো ব্যক্তিকে বিভিন্ন সংস্থার কাউন্সিলর করে আনার জন্য জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। একটি প্রভাবশালী পক্ষ সেই কাজটি করছেন। গেল দিনে বাফুফে কার্যালয়ে সেই চিত্র দেখা গেছে। যারা মুলত এই মুহূর্তে বাফুফের দাফতরিক কাজগুলো করছেন, তারাই এই প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত আছেন, তেমন দাবী করেছেন বাফুফে কার্যালয়ে আগত সংগঠকেরা। যাদের অনেকেই কাউন্সিলর, কিংবা কাউন্সিলর হতে চান।  

এই ইস্যুতে ২৯ সেপ্টেম্বর বাফুফে কর্মকর্তাদের সাথে আগত অভিলাষী কাউন্সিলরদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে!   
উল্লেখ্য, আগামী ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন। ১৪৩ জন কাউন্সিলরদের ভোটেই বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচিত হবে।  

লক্ষ্যনীয় দিক হলো, কাউন্সিলর হিসেবে দেশের অধিকাংশ পর্যায়ে তখনকার সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত ব্যক্তিবর্গ ছিলেন। এখন অনেক কাউন্সিলরই পলাতক। যার কারণে একটি পক্ষ সেই সুযোগ নিতে চাচ্ছে। নতুন নতুন কাউন্সিলরের নাম বাড়ছে। হাতে হাতেও কৌশলে দেয়া হচ্ছে বাকফে কর্তৃক চূড়ান্ত হওয়া কতিপয় কাউন্সিলরের তালিকা। যার দরুন ধরে নেয়া হচ্ছে যে, কাজী মো। সালাহউদ্দীনের বিগত সময়ের প্যানেলই তাবিথ আওয়ালের সম্ভাব্য অনাগত প্যানেল। দুই একটি ব্যতিক্রম ছাড়া এমন বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। 

বিশ্বস্ত সূত্র দাবি করছে যে, তাবিথ আওয়ালের সাথে সালাহউদ্দিনের উষ্ণ সম্পর্ক থাকায় এমনটি ঘটেছে। কেউ কেউ বলছেন, তাবিথ সভাপতি হতে পারলে সালাহউদ্দীনের বিগত সময়ের দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার থাকবেন না তাবিথ!

সঙ্গত পরিপ্রেক্ষিতে তাবিথ শেষ মুহূর্তে বর্তমান সরকার ও ছাত্র সমাজের আস্থা ও বিশ্বাস হারাতে পারেন বলে মনে করার সুযোগ আছে। কারণ, তিনি সালাহউদ্দিনের বিগত সময়ের প্যানেল নিয়েই কাজ করছেন বলে গুজব আছে। 
বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে দেশের জনমানুষ স্বপ্ন দেখেও আশাহত। এক সময় আবাহনী ও মোহামেডানের ফুটবল যুদ্ধ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লেও প্রচলিত আছে যে, বাফুফে সঠিকভাবে দেশের ফুটবলকে পরিচালনা করতে পারেনি। দক্ষ, পেশাদার ও সৎ নেতৃত্বের অভাবে বাংলাদেশ সাফ ফুটবলে ধারাবাহিক সাফল্য পায়নি। এশিয়ায় জায়গা করে নেয়া তো অনেক দূরে! 

প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় গেল অর্ধযুগে এশিয়ান ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে বারবার করে অংশ নিয়ে বসুন্ধরা কিংস নিজেদের নামটি এশিয়ার উঁচু স্তরে নিয়ে যেতে পেরেছে। এমনকি সর্বকালের সেরা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর আল নাসেরের সাথেও এক দুই বছরে সাক্ষাৎ তথা প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বসুন্ধরা কিংসের! সেক্ষেত্রে অনেকের মতে- সেই ক্লাবটির অদম্য সত্তা ও নেতা ইমরুল হাসান বাফুফের সভাপতি হলে মন্দ হয় না। তেমন মত রাখছেন বর্তমান ও সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা। যদিও তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে। কারণ, তাদের কেউ কেউ আবার আসন্ন নির্বাচনের কাউন্সিলরও বটে।

সার্বিক প্রেক্ষাপটের আলোকে অনেকের মতে-তরফদার নির্বাচন থেকে পুনরায় সরে যেতে পারেন। লড়াই শেষ মুহূর্তে তাবিথ আওয়াল করবেন। কিন্তু তিনি কি ইমরুলকে হারাতে পারবেন? অতীত সাক্ষ্য দিচ্ছে, তিনি বাফুফে নির্বাচনে সহসভাপতির নির্বাচন করেও হেরে বসেছিলেন (২০২০ নির্বাচনে)।

 

রুমেল খান/এম হাসান

×