ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১

ব্যাটিংয়ে উন্নতির তাগিদ টাইগার কোচের

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:৩৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ব্যাটিংয়ে উন্নতির তাগিদ টাইগার কোচের

দ্বিতীয় টেস্ট সামনে রেখে বুধবার ভারতের কানপুরে অনুশীলনে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা

চেন্নাইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্টে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ দল। এর পেছনে মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতাই দায়ী। অধিকাংশ ব্যাটার উইকেটে থিতু হওয়ার পর সাজঘরে ফিরেছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রথম টেস্টের পর থেকেই বেশ জোরেশোরে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচও এ নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন এই ব্যর্থতার জন্য মূলত ব্যাটারদের মনোভাবেই সমস্যা। তাই এবার কানপুরে আসন্ন দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিং উন্নতির দিকেই দৃষ্টি দিচ্ছে বাংলাদেশ।

বুধবার অনুশীলনেও সেটি দেখা গেছে। আঙুলের ইনজুরিতে পড়া সাকিব আল হাসানও অনুশীলন করেছেন। প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে দাবি করেছেন এ বাঁহাতি অলরাউন্ডারের খেলা নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা আপাতত নেই। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় হাতুরুও ব্যাটিংয়ে ভালো করার ওপরই জোর দিয়েছেন। তবে কানপুরে ভিন্নরকম চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। চেন্নাইয়ে লাল মাটির উইকেট থাকলেও এবার কালো মাটির উইকেটে স্পিন লড়াই হবে। 
সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের পেসাররা দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। তৃতীয় দিন বিকেল ও চতুর্থ দিন স্পিনারাও সহায়তা পেয়েছেন। কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়াম ভিন্ন আচরণের। সেখানে কালো মাটির উইকেট। আসন্ন টেস্টের জন্য ৩টি উইকেট প্রস্তুত করা হচ্ছে। সম্ভাবনা প্রবল মাঠের ৫ নম্বর উইকেটে খেলা হওয়ার। চিরচেনা কালো মাটির উইকেটে এবার চিরাচরিত নিয়মে সফরকারী বাংলাদেশকে স্পিন সহায়ক উইকেটেই কুপোকাত করার কৌশল নিতে যাচ্ছে ভারত।

এই মাঠে বল কিছুটা ধীর গতিতে ব্যাটারদের কাছে যায় এবং বাউন্সও তেমন থাকে না। দেখেশুনে খেলতে পারলে অবশ্য এখানে বেশ ভালো রান করাও যাবে। তবে রবিচন্দ্রন অশি^ন, রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে যদি তৃতীয় কোনো স্পিনার হিসেবে অক্ষর প্যাটেল কিংবা কুলদীপ যাদব যদি আসেন সেটি বাংলাদেশী ব্যাটারদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এ বিষয়ে হাতুরুসিংহে বলেছেন, ‘আমরাও আমাদের দেশে খেলা হলে প্রতিপক্ষ অনুযায়ী স্পিন কন্ডিশন সাজাই।

প্রতিপক্ষের শক্তি, নিজেদের শক্তি, প্রতিপক্ষের দুর্বলতা এসবের ওপর নির্ভর করে উইকেট তৈরি করা হয়। উপমহাদেশ বলে শুধু স্পিন নয়, চাইলে পেস নির্ভর উইকেটও তৈরি করা যায়। পিচ একটু দেখেছি। মাঠকর্মীরা দুটি পিচ তৈরি করছে। কোনটা বেছে নেওয়া হবে জানি না। কাল এসে হয়তো দেখতে হবে।’
বাংলাদেশের টপঅর্ডারে ৪ বাঁহাতি আছেন এবং মিডলঅর্ডারে আরেকজন বাঁহাতি আছেন। এত বেশি বাঁহাতির আধিক্য থাকার কারণে প্রতিপক্ষ দলের জন্য পরিকল্পনা করা সহজ হয়ে যায়। তবে বিষয়টি নিয়ে হাতুরু বলেছেন, ‘আমাদের মনে হয় এটাই আমাদের সেরা কম্বিনেশন, হোক ডানহাতি বা বাঁহাতি। একাদশে পরিবর্তন নির্ভর করছে কাল (আজ ম্যাচের আগের দিন) উইকেট দেখার ওপর।’ কানপুরে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ ভারত এখানে ৪১ বছর অপরাজিত।

এখানে ২৩ টেস্টে তাদের ৭ জয়, ৩ হারের পাশাপাশি আছে ১৩ ড্র। বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই, কিন্তু ব্যাটিংয়েই ভালো করা জরুরি। হাতুরু বলেছেন, ‘ভালো শুরুর পর ওরা আউট হয়ে যাচ্ছে এটা নিয়ে আমরা একটু চিন্তিত। তারা ভালো করতে মুখিয়ে আছে। গত ম্যাচে আমরা আমাদের মেধা ও সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। ভালো শুরু পেলে ইনিংস বড় করতে হবে। তা হচ্ছে না, এটাই দুশ্চিন্তার বিষয়। টেস্ট ক্রিকেটে কেউ ৩০ বল খেলে ফেললে উইকেটে থেকে যাওয়া জরুরি।

কীভাবে প্রতিরোধ গড়তে হবে ভারতের এই দল তা ভালো করেই জানে। তাই আমাদের দীর্ঘ সময় ভালো ব্যাট করতে হবে। নতুন বল নিয়ে ওপেনাররা আমাদের চেয়েও বেশি ভাবছে। তারা ভালো  আছে। আশা করছি এবার আরও ভালো করবে।’ চোখের সমস্যায় দীর্ঘদিন ব্যাটিংয়ে ঝামেলা হচ্ছে সাকিবের। চেন্নাইয়ে আঙুলে ব্যথা পাওয়ার কারণে বোলিংও করতে পারেননি। তবে ২ দিনের পর্যবেক্ষণ শেষে বুধবার অনুশীলন করেছেন।

তাকে নিয়ে হাতুরু বলেছেন, ‘সাকিবকে নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আমি ফিজিও কিংবা কারও কাছ থেকে এ বিষয়ে কিছু শুনিনি। আমি তার পারফর্ম্যান্স নিয়ে হতাশ নই, গোটা দলের পারফর্ম্যান্স আরও ভালো হতে পারত। আমি নিশ্চিত সেও এটা জানে যে, আরও ভালো পারফর্ম করতে পারে। তার সামর্থ্য আমরা সবাই জানি।’

×