বৃহস্পতিবার সকালে দুবাই যাচ্ছেন জ্যোতিরা

আর মাত্র ৮ দিন। এরপরই মাঠে গড়াবে নারী টি২০ বিশ্বকাপ। ৩ অক্টোবর বিশ্বকাপ শুরুর প্রথম দিনেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তাদের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড নারী দল। এই বিশ্বকাপ খেলতে ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার বিমানে দুবাই রওনা হবে বাংলাদেশের মেয়েরা। মঙ্গলবার বিশ্বকাপ স্কোয়াডের আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন হয়েছে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদও ছিলেন। এই ফটোসেশন শেষে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি আসন্ন বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন ব্যক্ত করেছেন।

নারী টি২০ বিশ্বকাপের ৫টি আসরে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ দল। সবমিলিয়ে ২১ ম্যাচে জয় মাত্র দুটি। ২০১৪ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নেয়। সেবার ঘরের মাটিতে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ জিতেছে। এরপর বাকি ৪ আসরে কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি।

এবার ১০ বছর পর ঘরের মাটিতে আরেকটি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের জন্য নিরাপত্তা ইস্যুতে আইসিসি এটি নিয়ে গেছে আরব আমিরাতে। সেখানে ৩ অক্টোবর উদ্বোধনী ম্যাচে স্কটল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। আর সেই ম্যাচে জিতেই টি২০ বিশ্বকাপে টানা হারের ধারাবাহিকতা পাল্টাতে চায় বাংলাদেশের মেয়েরা।

ফটোসেশন শেষে বিশ্বকাপে নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। তিনি বলেছেন,‘’সেমিফাইনালে খেলতে হলে শুধু স্কটল্যান্ড নয়, বাকি তিনটা ম্যাচ থেকেও জিততে হবে। তেবে প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’

২০১৪ সালে প্রথমবার ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। সেবার গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি জয় পায়, তবে সবার নিচেই থাকে পয়েন্ট টেবিলের। এরপর নবম স্থান দখলের লড়াইয়ে আয়ারল্যান্ড নারী দলকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশের মেয়েরা। টি২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাফল্য বলতে এটুকুই। ২০১৬, ২০১৮. ২০২০ ও ২০২৩ সালের আসরের প্রতিটি প্রতিযোগিতায় ৪টি করে ম্যাচ খেলে কোনো জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশের মেয়েরা।

সবমিলিয়ে টি২০ বিশ্বকাপে গত চার আসরে জয় না পাওয়ায় এবার জ্যোতি বলেছেন,‘‘প্রথমত ম্যাচ জিততে চেষ্টা করব। ২০১৪ ছাড়া একটা বিশ্বকাপেও আমরা একটি ম্যাচও জিততে পারিনি। ভালো ক্রিকেট খেলেছি। তবে ভালো ক্রিকেট খেলার কোনও মানে নাই, যদি আপনি ম্যাচ জিততে না পারেন। প্রথমত চাই ম্যাচ জিততে। দ্বিতীয়ত যখন আমরা ফ্লো পাব, আমার কাছে মনে হয় আমাদের যে দল, অবশ্যই.. সেমিফাইনাল কে না খেলতে চায়।’’ 

এবার ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড ব্যতীত বাকি ৩ দলই কঠিন। ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলতে হবে। তাই চ্যালেঞ্জটা আরো বড়ই থাকছে। এরপরও সেমিতে যাওয়ার স্বপ্ন বাংলাদেশের মেয়েদের।

বাংলাদেশে মেয়েদের ক্রিকেট এগিয়ে নিতে হলে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ভালো কিছু করতে হবে। দলের উন্নতি নিয়ে জ্যোতি বলেছেন,‘‘আমরা জানি যে আমাদের ক্রিকেটটা যদি এক ধাপ এগিয়ে নিতে চাই, তাহলে বিশ্বকাপের চেয়ে বড় মঞ্চ আর হতে পারে না। ওখানে ভালো পারফর্ম্যান্স করলে শুধু আমরা না, যারা বাংলাদেশে ক্রিকেট খেলে, বাকি যে মেয়েরা যারা বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলতে চায় তাদের জন্য আমরা ভালো কিছু করতে চাই।’’

প্রস্তুতি হিসেবে এবার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা মেয়েরা কিছুদিন আগেই শ্রীলঙ্কা সফর করেছেন ‘এ’ দলের হয়ে। তবে সেখানে ব্যাটিং ব্যর্থতা বড় ধরণের চিন্তা সৃষ্টি করেছে। টি২০ ফরম্যাটে ভালো করতে হলে ব্যাটিংয়ে উন্নতির বিকল্প নেই। সেজন্য বিশ্বকাপের অফিসিয়াল দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। ২৮ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা ও ৩০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুবাইয়ে অবস্থিত আইসিসি একাডেমি মাঠের দুটি গ্রাউন্ডে খেলবে।