ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

আচমকা ঘোষণা দিলেন কাজী সালাউদ্দিন, তাবিথ আউয়াল হতে পারেন পরবর্তী বাফুফে সভাপতি

‘নির্বাচন করব না, এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’

রুমেল খান

প্রকাশিত: ০০:৪২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

‘নির্বাচন করব না, এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’

কাজী মো. সালাউদ্দিন

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সেই কবে লিখেছিলেন, ‘বিদ্রোহী রণক্লান্ত, আমি সেই দিন হব শান্ত।’ তেমনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনও বলতে পারেন, ‘আমি সালাউদ্দিন রণক্লান্ত, অবশেষে আজ হলাম শান্ত!’ ফিফার আইন তার পক্ষে থাকায় জোর গলায় ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি পদত্যাগ করবেন না, বরং বাফুফের নির্বাচনে আবারও অংশ নেবেন।

এও বলেছিলেন, নির্বাচন করাটা তার অধিকার এবং পারলে নির্বাচনে কেউ তাকে হারিয়ে দেখাক। তার এমন দৃঢ়প্রত্যয়ে ফুটবলপ্রেমীরা ধরেই নিয়েছিলেন সালাউদ্দিন আগামী ২৬ অক্টোবরে বহুল আলোচিত বাফুফের নির্বাচনে সভাপতি পদে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
কিন্তু শনিবার পাল্টে গেছে সব দৃশ্যপট।

সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাফুফে ভবনে ক্রীড়া সাংবাদিকদের ডেকে টানা চার মেয়াদে বাফুফের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা সালাউদ্দিন ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচন করবেন না তিনি (আওয়ামী সরকার পতনের পর বাফুফে ভবনে এই প্রথম এলেন তিনি)! এবং সেটা পারিবারিক কারণে। তবে ফুটবলপ্রেমীরা মনে করছেন কারণটা ভিন্ন।
এদিকে একইদিনে শোনা গেছে বাফুফে সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন সাবেক সহসভাপতি তাবিথ আউয়াল (২০১২ ও ২০১৬ সালে, ২০২০ সালে মহিউদ্দিন আহমেদ মহির কাছে হেরে যান)। একটি সূত্রে জানা গেছে, আজ রবিবার এ নিয়ে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করবেন তাবিথ। আরও জানা গেছে, তাবিথের বিপক্ষে কোনো প্রার্থী থাকছেন না।

আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে বাফুফে সভাপতি পদে পুনরায় নির্বাচন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন সালাউদ্দিন। সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বাফুফে ভবনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার কথা ঘোষণা দেন। এর আগে বিকেলে আকস্মিক এক সংবাদ সম্মেলন ডাকেন চার মেয়াদের বাফুফে সভাপতি। সেই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘২৬ অক্টোবর নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করব না। আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত আপনাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিলাম।’
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের পদত্যাগ বা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে সাবেক ফুটবলার ও নানা শ্রেণি আন্দোলন-প্রতিবাদ করছিল। কোনো চাপে এই সিদ্ধান্ত কি না, এই বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। অথচ এক মাস আগেও সালাউদ্দিন আবারও নির্বাচন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন।

সালাউদ্দিন আরও বলেন, ‘কোনো কনফিউশন যাতে না হয় এজন্য (আগেভাগে) ঘোষণা। দীর্ঘদিন আপনাদের (সাংবাদিকদের) সঙ্গে নানা বিষয় আন্ডারস্ট্যান্ডিং-মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে। এটা চলার পথে হতেই পারে। আমি কিছু মনে রাখব না, আশা করি আপনারাও রাখবেন না।’
সবশেষে বাফুফে বস বলেন, ‘চার টার্ম বাফুফে সভাপতি হিসেবে কাজ করেছি। এজন্য আমি সৌভাগ্যবান।

কিছুদিন আগে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এজন্য ভালো লাগা কাজ করছে। আগামীতে ফুটবল ও বাফুফের পথ শুভ হোক, এই কামনা করি।’ তবে বিদায়বেলায় সালাউদ্দিনের আক্ষেপ- তার আমলে বাংলাদেশ সিনিয়র সাফ জিততে পারেনি।
২৬ অক্টোবর নির্বাচন পেছানোর দাবি করেছিল বাফুফে। যদিও ফিফা এই আবেদন নাকচ করে জানিয়ে দিয়েছে ২৬ তারিখেই নির্বাচন করতে হবে। 
সালাউদ্দিন ২০০৮ সালে সাবেক সেনা কর্মকর্তা আমিন আহমেদ চৌধুরীকে ৬২-৪৯ ভোটে, ২০১২ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ২০১৬ সালে কামরুল ইসলাম খান পোটনকে ৮৩-৫০ ভোটে এবং ২০২০ সালে তৎকালীন সহসভাপতি বাদল রায়কে ৯৪-৪০ ভোটে হারিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থির ওপর সবসময় নজর রাখছে ফিফা ও এএফসি। ফিফা তার সংস্থাগুলোতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের ব্যাপারে খুবই কঠোর, সেটাও বাফুফেকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছে।

×