অলিম্পিক লরেল অ্যাওয়ার্ড নিচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস
একটা সময় মহান শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখান থেকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে নিয়ে অসাধারণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গ্রামীণ ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তিনি। তিনি আবার দারুণ খেলাপ্রমীও।
সেই মানুষটি এখন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে পথচলা শুরু করেছেন ৮৪ বছর বয়সী ইউনূস। এমন খেলাপ্রেমী একজন সরকারপ্রধান হওয়ায় বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন লাভবান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে আগে থেকেই সম্পৃক্ততা আছে ড. ইউনূসের। চলমান প্যারিস অলিম্পিকের তিনি শুভেচ্ছা দূত। সেখান থেকেই বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে এসে সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস মিলান কর্টিনা শীতকালীন অলিম্পিক ও ইউনূস স্পোর্টস হাবের মধ্যে অংশীদারত্ব চূড়ান্ত করতে ইতালির ভেনিস ও মিলানও সফর করেন।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০২১ সালের জুলাই মাসে অলিম্পিক লরেল অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। সে সময় জাপানের রাজধানী টোকিওতে অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাকে এ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়। তখন পর্যন্ত অলিম্পিক লরেল অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূস। খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শান্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি দিতে ২০১৬ সালে এই অ্যাওয়ার্ডের প্রবর্তন করা হয়।
২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ড. ইউনূস। অলিম্পিক লরেল ট্রফি পাওয়ার পর ড. ইউনূস বলেছিলেন, অলিম্পিক লরেল পেয়ে আমি সত্যি সম্মানিত ও অভিভূত। ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) খেলাধুলার সামাজিক দিকটিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে। আপনারা ক্রীড়াবিদেরা বিশ্বকে বদলে দিতে নেতৃত্ব দিতে পারেন। বিশ্বের তিনটি বিষয় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে কাজ করতে পারেন আপনারা।
কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারেন; দারিদ্র্যের অবসান ঘটাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত করা শূন্যে নামিয়ে আনতে পারেন, সবার মধ্যে উদ্যোক্তার শক্তি ছড়িয়ে দিয়ে বেকারত্বের হার শূন্যে নামিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। খেলাধুলার মাধ্যমে আরও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়তে অলিম্পিকের মিশনের সাফল্য কামনা করছি আমি। সবার জন্য শুভকামনা। এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এটি আমার কাছে বিশেষ কিছু। সবাইকে ধন্যবাদ।
ড. ইউনূসের আগে অলিম্পিক লরেল অ্যাওয়ার্ড পান কেনিয়ার সাবেক ক্রীড়াবিদ কিপশোগে কেইনো। কেনিয়ার শিশুদের জন্য স্কুল, নিরাপদ আবাসন ও খেলাধুলার প্রশিক্ষণ দেওয়ায় তাকে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। কেইনো কেনিয়ার অলিম্পিক কমিটির প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ড. ইউনূস বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হওয়ায় এখন দেশের ক্রীড়াঙ্গন আরও চাঙ্গা হওয়ার আশা করছেন দেশের মানুষ।