একের পর এক স্বর্ণপদক জিতেই চলেছেন লিও মারশা
প্যারিস আলিম্পিকে নিত্যনতুন কীর্তি গড়ছেন লিও মারশা। একের পর এক ভেঙে চলেছেন মার্কিন কিংবদন্তি মাইকেল ফেলপসের রেকর্ড! ফরাসি পোস্টার বয়ের সাঁতার দেখতে লা ডিফেন্স অ্যারেনায় ছুটে আসছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও। প্রেসিডেন্টকে হতাশ করেননি মারশা। এবার ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলে আলিম্পিক রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জিতলেন। এ নিয়ে চলতি অলিম্পিকে ব্যক্তিগত চার ইভেন্টে অংশ নিয়ে চারটিতেই বাজিমাত করলেন ফ্রান্সের সোনার ছেলে।
শুধু তাই নয়, সবই অলিম্পিকের রেডর্ক লিখলেন নতুন করে! ২০০ মিটার মিডলে স্বর্ণ জিততে ১ মিনিট ৫৪.০৬ সেকেন্ড সময় নিয়েছেন ২২ বছর বয়সী এই তারকা। ২০০৮ বেজিং অলিম্পিকে ১ মিনিট ৫৪.২৩ সেকেন্ডে আগের রেকর্ডটি ছিল ফেলপেসর। মারশার পেছনে থেকে গ্রেট ব্রিটেনের ডানকান স্কট (১ মিনিট ৫৫.৩১ সেকেন্ড) রৌপ্য, আর ব্রোঞ্জ জিতেছেন চীনের শুন ওয়াং (১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড)।
ফেলপস ও আরেক মার্কিন গ্রেট মার্ক স্পিটজের (১৯৭২ অলিম্পিকে) পর তৃতীয় সাঁতারু হিসেবে অলিম্পিকের এক আসরে চারটি ব্যক্তিগত স্বর্ণ জয়ের কীর্তি ছুঁয়েছেন ফ্রান্সের মারশা। ইতিহাসের পাতায় তাদের সঙ্গী হলেন মারশা। দুই কিংবদন্তির সঙ্গে এই তরুণের তুলনাও তাই শুরু হয়ে গেছে। চলতি আসরে ২০০ মিটার মিডলের আগে ২০০ মিটার বাটারফ্লাই, ২০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোক ও ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে এবার সোনার পদক গলায় ঝুলিয়েছেন তিনি। প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে, তবে ফেলপস ও স্পিৎজের সঙ্গে তুলনায় মারশার মনে অন্যরকম রোমাঞ্চের লুকোচুরি।
নিজের অর্জন তার কাছে যেন অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে, ‘এটা পাগলামি। এই মানুষগুলো কিংবদন্তি, নিজেদের খেলায় তারা কিংবদন্তি। এই মানুষের সঙ্গে তুলনা আমার কাছে স্রেফ পাগলাটে বিষয়। আমার মনে হয় না, এটা আমি এখন উপলব্ধি করতে পারব। হয়তো কয়েকদিন পর বুঝতে পারব।’ ফেলপসের কোচ ছিলেন বব বোম্যান, এখন তিনি মারশার কোচ। তার মনে হচ্ছে, ফেলপসের সঙ্গে মারশার তুলনা যথাযথ, ‘মাইকেলের রেকর্ডের পাশে মারশার বসাটা প্রমাণ করে যে, সেও সেই বিরল মানুষের একজন, যারা বেশি চাপের মুখে আরও ভালো পারফর্ম করে। অনেক গ্রেট সাঁতারু আছে, নিশ্চিতভাবেই মারশা তাদের একজন।’
এদিকে ছেলেদের ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইলে ২১.২৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে স্বর্ণ জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ার ক্যামেরন ম্যাকেবয়। গ্রেট ব্রিটেনের বেঞ্জমিন প্রাউড রৌপ্য ও ফ্রান্সের ফ্লোরেন্ত মানাউদু ব্রোঞ্জ নিশ্চিত করেন। মেয়েদের ২০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকের স্বর্ণও যায় অস্ট্রেলিয়ার ঘরে। ২ মিনিট ৩.৭৩ সেকেন্ড নিয়ে নতুন অলিম্পিক রেকর্ড গড়েন কাইলি ম্যাককিওন। তার পেছনে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রেগান স্মিথ (রৌপ্য) ও কানাডার কাইলি মেস (ব্রোঞ্জ)। তবে সর্বোপরি প্যারিস অলিম্পিকে সাঁতারে চলছে অস্ট্রেলিয়ানদের দাপট।
চলতি আসরে সাঁতারে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭টি স্বর্ণ জিতে নিয়েছে দেশটি। ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকের পর এবার ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকেও বাজিমাত করেছেন ম্যাককিওন। আগের দিনই মেয়েদের ৪ গুণিতক ২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে স্বর্ণজয়ী দলেও ছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে এবারের অলিম্পিকে অস্ট্রেলিয়ার সাত স্বর্ণের তিনটিতেই নিজের নামটি খোদাই করে নিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এ সেনসেশন। সাঁতারে সমান ৪টি করে স্বর্ণ জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স। ফ্রান্সের চার স্বর্ণই এসেছে মারশার হাত ধরে। আয়োজকদের মোট পদক ৬টি। ১টি করে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ। তবে সাঁতারে সর্বোচ্চ ২১ পদক যুক্তরাষ্ট্রের, রৌপ্য ১১ ও ব্রোঞ্জ ৬। ১৩ পদক অস্ট্রেলিয়ার, ৭ স্বর্ণের সঙ্গ রৌপ্য ৫ ও ব্রোঞ্জ ১।