ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১

ফাইনালে ভারত না ইংল্যান্ড, ফয়সালা আজ

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৬ জুন ২০২৪

ফাইনালে ভারত না ইংল্যান্ড, ফয়সালা আজ

ভারতের বিরুদ্ধে সেমিতে জিতে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে খেলার আশা ইংল্যান্ডের

বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত কোনো ম্যাচ হারেনি ভারত। গ্রুপ-পর্বে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান কিছুটা ফাইট দিলেও চার ম্যাচের তিনটিতেই জয় পায় রোহিত শর্মার দল, বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচ। সুপার এইটে এসে রীতিমতো আগুনে পারফর্ম্যান্স মোড়লদের। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দাপুটে জয়ে গ্রুপÑ১এর শীর্ষে থেকে সেমিতে উঠে আসে ভারত। অন্যদিকে গ্রুপ-পর্ব থেকে বাদ পড়তে পড়তেও বেঁচে যায় ইংল্যান্ড।

চার ম্যাচে দুই জয় ও এক পরিত্যক্ত ম্যাচের পয়েন্ট সঙ্গী করে রান রেটে স্কটল্যান্ডকে পেছনে ফেলে জস বাটলারের দল। সুপার এইটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেলেও মাঝে হারে দক্ষিণ আফ্রিকা কাছে। দলীয় পারফর্ম্যান্স, ব্যাটিং-বোলিংয়ে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের বিচারে এগিয়ে ভারত। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন, তখন নির্ভার হওয়ার সুযোগ নেই।

অস্ট্রেলিয়ায় ২০২২ বিশ্বকাপের সেমিতে এই ইংল্যান্ডের কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিল রোহিতের দল। এবারও ফাইনালের টিকিটের লড়াইয়ে মুখোমুখি দুই দল। গায়ানার প্রভিডিয়েন্স স্টেডিয়ামে আজ ‘হাইভোল্টেজ’ দ্বিতীয় সেমিফাইনাল শুরু বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায়।
সুপার এইটে ভারত শেষ ম্যাচটা খেলে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। যেটিকে বলা হচ্ছিল আসরের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন রোহিত। অধিনায়কের ৪১ বলে ৭ চার ও ৮ ছক্কায় ৯২ রানের টর্নেডো ইনিংসের সৌজন্যে ৫ উইকেটে ২০৫ রানের বড় স্কোর গড়ার পর অস্ট্রেলিয়াকে ১৮১/৭Ñএ থামিয়ে ২৪ রানের সহজ জয় পায় ভারত। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবং তার আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে এই অসিদের কাছে হারতে হয়েছিল রোহিতদের।

ভারতীয় সমর্থকদের মধ্যে একটা হাইপ তৈরি হয়েছে,‘অস্ট্রেলিয়ার হিসাব মেটানো হয়ে গেছে, এবার ইংল্যান্ডের পালা!’ যদি তাই হয় তবে ২০০৭ প্রথম টি২০ বিশ্বকাপের পর নবম আসরে এসে শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথটা প্রশস্ত হয়ে যাবে। কারণ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তান যেই আসুক, বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। ভক্তদের মাঝে হাইপ উঠলেও রোহিত কিন্তু কুল,‘ সেমিফাইনাল নিয়ে আমার আলাদা কিছু করতে চাইছি না। যে ক্রিকেট খেলছি, সেটাই খেলে যাব।

সবাইকে বলেছি, খোল মনে খেলতে, চাপ না নিতে, কে প্রতিপক্ষ সেটি দেখার দরকার নেই। আমরা এখন পর্যন্ত যেমন খেলে আসছি, তেমন খেললেই সফল হব।’ সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচে দুর্বল যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১০ উইকেটের বিশাল জয়ের দিনে জস বাটলারও খেলেছেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। 
১১৫ রানের লক্ষ্য ইংল্যান্ড পেরিয়ে গেছে ৯.৪ ওভারে, কোনো উইকেট না হারিয়ে। মাত্র ৩৮ বলে ৬ চার ও ৭ ছক্কায় ৮৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক। তার আগে প্রথম ইংলিশ্যান হিসেবে টি২০তে হ্যাটট্রিক করেন ক্রিস জর্ডান। ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানের কথা বললে, আসরে এ পর্যন্ত ভারতের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ৬ ম্যাচে করেছেন ১৯১ রান। হাফ সেঞ্চুরি ২টি। চার ১৬ ও ছক্কা ১৩টি। ইংল্যান্ডের হয়ে ১ হাফ সেঞ্চুরিতে বাটলারও করেছেন ঠিক ১৯১ রান। চার ১৮ ও ছক্কা ১০টি।

ইংল্যান্ডের হয়ে আরেক ওপেনার ফিল সল্ট করেছেন ১৮৩ রান। ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪৯ রান সূর্যকুমার যাদবের। তবে একাধিক ছোট ক্যামিওতে ভিন্ন ভিন্ন ম্যাচে দৃশ্যপট বদলে দিচ্ছেন ঋষভ পন্থ, শিভম দুবে আর হার্দিক পান্ডিয়াও। বোলিংয়ে দূরন্ত-দূর্বার দুই পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ ও আর্শ্বদীপ সিং। ১৫ উইকেট নিয়ে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিকারি বাঁহাতি আর্শ্বদীপ। বুমরাহ নিয়েছেন ১১ উইকেট। উইন্ডিজে সুপার এইট পর্বে স্পিনাররাও রং ছড়াচ্ছেন।

আছেন চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব ও দুই বাঁহাতি অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা ও অক্ষর প্যাটেল। অন্যদিকে বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের প্রধান দুই অস্ত্র পেসার জোফরা আর্চার ও লেগস্পিনার আদিল রশিদ। দুজনেই নিয়েছেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯টি করে উইকেট। আলোচনায় স্যাম কুরান, মঈন আলীর মতো অলরাউন্ডার।
আন্তর্জাতিক টি২০তে এ পর্যন্ত দুই দল মোট ২৩বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের জয় ১২ ম্যাচে, ইংল্যান্ডের ১১টিতে। শেষ ৫ ম্যাচের ৩টিতে জিতেছে ভারত, শেষ ২টিতে ইংল্যান্ড। এছাড়া টি২০ বিশ্বকাপে ৪ দেখায় সমান ২টি করে জয় দুই দলের। ২০০৭ সালে প্রথম টি২০ বিশ্বকাপে ১৮ রানে জিতেছিল ভারত। এরপর ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের জয় ৩ রানে। ২০১২ সালে ভারতের জয় ৯০ রানে। ২০২২ সালের সেমিতে ইংল্যান্ডের জয় ১০ উইকেটে।

×