সাকিব আল হাসান
সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় তারকাই শুধু নন, প্রায় দেড় যুগের ক্যারিয়ারে রেকের্ড-কীর্তিতে ভাস্বর এক নাম। যাঁদের ঘিরে এ দেশের অগনতি ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ বড় স্বপ্ন দেখেন, সাকিব তাদের অন্যতম। ২০০৭ সালে সেই প্রথম আসর থেকে রোহিত শর্মার সঙ্গে সবকটি (৯টি) টি২০ বিশ্বকাপে খেলা মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় সাকিব। তার কাছ থেকে এবার দলের প্রত্যাশা অনেক।
কিন্তু প্রথম দুটি ম্যাচেই ব্যর্থ তিনি। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে মাত্র ৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ১ ওভারে ৬ রান দেওয়ার পর তাকে আর বোলিংয়ে আনার সাহস পাননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত! এরপর ব্যাটিংয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৪ বলে ৩ রান করে আউট হয়েছেন বাজে শট খেলে। সাবেক ভারতীয় তারকা বিরেন্দর শেবাগের মতে, ‘এমন পারফর্ম্যান্সের পর সাকিবের আসলে লজ্জা হওয়া উচিত। দলের ভালোর জন্যেই তার সরে যাওয়া উচিত।’
এক লাইভ শোয়ে শেবাগ বলছেন, ‘ওকে (সাকিব) যদি অভিজ্ঞতার কারণেই দলে নেয়া হয়ে থাকে, সেটা কিছুই আজ (দ. আফ্রিকার বিপক্ষে) চোখে পড়েনি। তুমি যদি হুক বা পুল শট খেলতে না পার, তবে সেটা খেলতে যাও কেন? যেটা পার সেটাই খেল। কারণ দলের জন্য তোমার তখন ক্রিজে থাকা অনেক জরুরি।’ এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২-১এ সিরিজ হারের পর সাকিব বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য এটা ওয়েইক আপ কল!’
সেদিকে ইঙ্গিত করে শেবাগ যোগ করেন, ‘১৫ বছর খেলার পরও যদি ওয়েইক আপ কল দরকার হয়, তাহলে ভাবুন তো ও কেমন ঘুমিয়েছে!’ শেবাগ বলেন, ‘আমার মনে হয় টি২০তে সাকিবের সময় আরও অনেক আগেই ফুরিয়েছে। ও এত লম্বা সময় অধিনায়কত্ব করেছে, এত একজন সিনিয়র খেলোয়াড়, এরপর যদি ওর পরিসংখ্যান (চলতি বিশ্বকাপে) এমন হয়, ওর তো লজ্জা হওয়া উচিত। ওর নিজেরই বোঝা উচিত যে টি২০তে ও আর চলে না, সেটা বুঝে অবসের যাওয়া উচিত।’
এমনিতে অনেকদিন ধরে ব্যাট হাতে সাকিবের পারফর্ম্যান্স প্রত্যাশিত নয়। তবে বল হাতে সেটা পুষিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে সেটাও পারছেন না। দুই ম্যাচে ৪ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। সাকিবের মতো একজন যদি বল হাতে ৪ ওভারের কোটা পূরণ করতে না পারেন, তবে অধিনায়কের জন্যও কাজটা কঠিন হয়ে ওঠে।
সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘সাকিব আমাদের সেরা বোলার। তার ৪ ওভার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে অভিজ্ঞ বোলার। সে বছরের পর বছর ধরে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ অলরাউন্ডার। ফলে সে যদি ৪ ওভার বল করতে না পারে, তাহলে সেটা অবশ্যই সমস্যা।’ মাঠে সাকিবের এমন নির্বিষ উপস্থিতিতে বিরক্ত ভক্তরা। তাইতো স্লোগান তুলেছেন এবার অবসর চান তারা। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে অনেক দর্শকই বলেছেন, তারা অন্তত টি২০তে সাকিবকে আর দেখতে চান না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও, সাকিবকে এবার থামার বার্তা দিয়েছেন অনেক ভক্ত-সমর্থক। যদিও বিশ্বকাপ শুরু আগেই তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পরের বিশ্বকাপেও খেলতে চান! সে বিতর্ক সময়ের হাতে তোল থাক। আপাতত দলের চাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশনে বাকি দুই ম্যাচে জ্বলে উঠবেন সাকিব। বাংলাদেশও সাফল্যের সঙ্গে জায়গা করে নেবে সেরা আটে।