চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে উইকেট শিকার উদ্যাপন করছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা
সিরিজের দ্বিতীয় টি২০ যেন প্রথম ম্যাচেরই অনুরূপ। রবিবারও সাগরিকায় বাংলাদেশী বোলারদের দাপটে ৪২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। এরপর ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে তা-ব চালিয়েছেন জনাথন ক্যাম্পবেল। সাবেক অধিনায়ক অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের পুত্র তিনি। বাঁহাতি এ মিডলঅর্ডারের ২৪ বলে ৪৫ ও ব্রায়ান বেনেটের ২৯ বলে অপরাজিত ৪৪ রানে শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে সফরকারীরা। ষষ্ঠ উইকেটে ৭৩ রানের ঝড়ো জুটি গড়েছেন এ দুজন। তাই চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শেষ পর্যন্ত বেশ লড়াকু সংগ্রহই পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১৩৮ রান তোলে তারা।
ব্যক্তিগত ২ রানে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন সাতে নামা জনাথন। জিম্বাবুয়ের দলীয় রান তখন ৫ উইকেটে ৪৪। কিন্তু শেখ মেহেদি হাসানের বলে ওঠা সেই ক্যাচটি নিতে পারেননি জাকের আলী অনিক। উইকেটটা বাংলাদেশ দল পেয়ে গেলে ম্যাচের পরিস্থিতি অন্যরকমই হতো। জিম্বাবুয়ের জন্য কঠিন হয়ে যেত চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহে পৌঁছা। কারণ আগের ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাট করা ওয়েলিংটন মাসাকাদজা মাথায় আঘাত লাগার কারণে এদিন ছিটকে গেছেন। ব্যর্থ শন উইলিয়ামসের জায়গায় ঠাঁই পেয়েছেন ক্যাম্পবেল। ইনিংসের ১১তম ওভারে ব্যাট হাতে নামেন জিম্বাবুয়ের হয়ে ৭৮তম টি২০ ক্যাপ পাওয়া এ বাঁহাতি।
সাতে নেমেছেন তিনি। এদিনও টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ বিপর্যস্ত হয়েছে জিম্বাবুয়ে। ৪ ওভার শেষে মাত্র ১৫ রান করতেই ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানি (২) সাজঘরে ফিরেছেন। শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, শেখ মেহেদি ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন প্রথম থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। তবে জয়লর্ড গাম্বি ৩০ বলে ১৪ চারে ১৭ ও ক্রেইগ আরভিনের ১৬ বলে ১ চারে করা ১৩ রানে ১ উইকেটে ৩০ রানে পৌঁছে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু পরবর্তী ১২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে তারা। রিশাদ হোসেনের লেগস্পিনে দশম ওভারে সিকান্দার রাজা (৩) ও ক্লাইভ মাদান্দে (০) সাজঘরে ফেরেন। এরপর জীবন পেয়ে ঝড় তোলেন ক্যাম্পবেল। তিনি বেনেটের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৭৩ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৪৩ বল থেকে।
শরিফুলের ১৩তম ওভারে ১২, রিশাদের ১৬তম ওভারে ১৪ ও সাইফউদ্দিনের ১৭তম ওভারে ১৩ রান তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়েকে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ার পথ দেখান ক্যাম্পবেল ও বেনেট। তাদের ব্যাটিং দাপট ও মাঝ সময়ে বাংলাদেশী বোলারদের আলগা বোলিংয়ে ১২ থেকে ১৭ এই ৬ ওভারে ৬৩ রান যোগ করে জিম্বাবুয়ে। তবে অর্ধশতকের দিকে এগোতে থাকা বাঁহাতি ক্যাম্পবেল ১৮তম ওভারে শরিফুলের বলে তুলে মারতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ২৪ বলে ৪ চার, ৩ ছক্কায় ৪৫ রান করে। তবে শেষ পর্যন্ত বেনেট টিকে ছিলেন এবং শেষ ওভারে সাইফউদ্দিনের অগোছালো বোলিংকে তুলাধুনা করে ১৮ রান তুলে নেন। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৮ রানের লড়াকু পুঁজি পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। বেনেট ২৯ বলে ২ চার, ৩ ছক্কায় ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তাসকিন ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ২টি এবং রিশাদ ৪ ওভারে ৩৩ রানে ২টি করে উইকেট নেন। এদিনও বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে শেখ মেহেদি ১ উইকেট নিয়েছেন ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচায়। শরিফুলও নিজেকে ফিরে পেয়েছেন এবং ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন। তবে ধারাবাহিকতা রাখতে পারেননি সাইফউদ্দিন ২ ওভারে ৬ রান দিলেও পরের ২ ওভারে ৩১ রান খরচা করেছেন।