.
দশম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) যখন শুরু হয়েছে একই সময়ে বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ আসরও চলেছে। তাই ক্রিকেট বিশ্বের সেরা তারকাদের উপস্থিতি ছিল অনিয়মিত। বড় তারকারা যাওয়া-আসার মধ্যে থাকায় স্বল্প সংখ্যক ম্যাচ খেলেছেন। অনেকে শেষ মুহূর্তে এসে গুটিকয়েক ম্যাচ খেলেছেন। তাই ব্যাট-বলের পারফরম্যান্সে এবার বিদেশী ক্রিকেটারদের চেয়ে দেশী তারকাদের দাপট। বিপিএলের প্রাথমিক রাউন্ড শেষ হয়েছে শুক্রবার। এই রাউন্ড রবিন লিগ পর্ব শেষে ব্যাটারদের মধ্যে বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল ১২ ইনিংসে ৩৯১ রান করে সবার ওপরে। শীর্ষ ১০ রান সংগ্রহকারীর মধ্যে বিদেশী মাত্র দুজন। একই অবস্থা বোলিং পারফরম্যান্সেও। ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম শীর্ষে। সেরা ১০ বোলারের তালিকায় একজনই মাত্র বিদেশী। আর অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সবাইকে ছাড়িয়ে সাকিব আল হাসান। এ বাঁহাতি ব্যাটিংয়ে মাত্র ৯ ইনিংসে ২৪৯ রান করেছেন ও ১১ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়েছেন। সার্বিকভাবে ৫৯৬.০৩ ইমপ্যাক্ট নিয়ে আসরের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে অন্যদের চেয়ে বেশ এগিয়ে সাকিব।
বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ নওয়াজ, খুশদিল শাহ, ইফতিখার আহমেদ, ফাহিম আশরাফ, রিজা হেনড্রিকস, উইল জ্যাকস, জিমি নিশাম, ইমরান তাহির, কাইল মেয়ার্স, শাই হোপ, জনসন চার্লস, জ্যাসন হোল্ডার, আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারাইন, রোস্টন চেস, মোহাম্মদ ওয়াসিম, মঈন আলী, ব্র্যান্ডন কিং, ওয়েইন পারনেল, দাসুন শানাকা, দানুষ্কা গুণাথিলকা, ম্যাথু ফোর্ড, দুনিথ ভেল্লালাগে, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, উসমান কাদির, ওবেদ ম্যাককয়, রেমন রেইফার, আমের জামাল, ইব্রাহিম জাদরান, মোহাম্মদ নবি, সাইম আইয়ুব, কার্টিস ক্যাম্ফার, রোমারিও শেফার্ড, অ্যালেক্স হেলস, শোয়েব মালিক, আভিস্কা ফার্নান্দো ছাড়াও সম্প্রতি আলোচিত দুই অস্ট্রেলিয়ান তারকা অ্যালেক্স রস ও টম ব্রুস এবার বিপিএল খেলেছেন। অধিকাংশই ৪-৫ ম্যাচের বেশি খেলার সুযোগ পাননি অন্যান্য টি২০ আসরে ও আন্তর্জাতিক ব্যস্ততার জন্য। তাই বিদেশীদের মধ্যে ব্যাটিংয়ে সেরা সর্বাধিক ১১ ম্যাচ খেলা দুর্দান্ত ঢাকার অজি তারকা রস ৪ ফিফটিতে ৩৫২ রান করেছেন ৩৯.১১ গড়ে ও ১৩৪.৮৬ স্ট্রাইক রেটে। তার অবস্থান চারে। ১২ ম্যাচে ৩২.৫৯ গড় ও ১২৬.১২ স্ট্রাইক রেটে দুই ফিফটিতে ৩৯১ রান করে সেরা বাঁহাতি ওপেনার তামিম। তাওহিদ হৃদয় ৩৮.৩ গড় ও ১৪৯.৬ স্ট্রাইক রেটে ১ সেঞ্চুরি ও ১ হাফ সেঞ্চুরিতে ৩৮৩ রান করে দ্বিতীয়। উভয়ে ১২ ইনিংস ব্যাট করেছেন। ১১ ইনিংসে তানজিদ হাসান তামিম ৩৪.৭২ গড় ও ১৩৬.৪২ স্ট্রাইক রেটে ৩৮২ রান করে তৃতীয় অবস্থানে। মুশফিকুর রহিম ১২ ইনিংসে ৩১৪ রান করে পঞ্চম ও নাইম শেখ ১২ ইনিংসে ৩১০ রান করে ছয়ে আছেন। ব্রুস মাত্র আট ইনিংসে ৫২.২ গড় ও ১২৬.৬৯ স্ট্রাইক রেটে ২৫৬ রান করে দশে এবং বাবর ছয় ইনিংসে ৫০.২ গড়ে ২৫১ রান করে ১১তম। তাওহিদ, তানজিদ ও জ্যাকস সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। তানজিদের ১১৬ রানের ইনিংস এবার ব্যক্তিগত সেরা। সর্বাধিক ২০টি করে ছক্কা হাঁকিয়েছেন তাওহিদ ও তানজিদ।
বোলিংয়ে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ১২ ম্যাচে ২২, সাকিব ১১ ম্যাচে ১৭, শেখ মেহেদি হাসান ১২ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়ে শীর্ষ তিনে। চার নম্বরে ওমানের পেসার বিলাল খান ১২ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে। সেরা দশে আর কোনো বিদেশী বোলার নেই। ১২ ম্যাচে বোলিং করে তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ ১৩টি করে উইকেট নিয়ে পরের অবস্থানে। আর ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সেরা হওয়ার দৌড়ে সাকিব। ১৭ উইকেট নিয়ে ও ২৪৯ রান করে তার পারফরম্যান্সের সার্বিক ইমপ্যাক্ট ৫৯৬.০৩। সিলেটের ইংলিশ অলরাউন্ডার বেনি হাওয়েল ২২৯ রান ও ১০ উইকেট শিকার করে ৫৩৮.২৪ ইমপ্যাক্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় স্থানে শরিফুল ৪৯৮.১৮ ইমপ্যাক্ট নিয়ে। তাই সাকিবের সেরা হওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ জানানোর কেউ নেই। কারণ হাওয়েল ও শরিফুলের দল বিদায় নিয়েছে। সেরা বোলিং বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনির ১২ রানে ৫ উইকেট। এ ছাড়া শুধু তাহির ও জামাল ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন।