ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

ওয়ানডে ক্রিকেটে কোহলির স্মরণীয় ৫ ব্যাটিং ইনিংস

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ১২ নভেম্বর ২০২৩

ওয়ানডে ক্রিকেটে কোহলির স্মরণীয় ৫ ব্যাটিং ইনিংস

ভারতের সুপারস্টার ব্যাটার বিরাট কোহলি।

ভারতের ব্যাটিং সুপারস্টার বিরাট কোহলি গত ৫ নভেম্বর কলকাতায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ম্যাচে তার স্বদেশী গ্রেট শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯টি ওডিআই সেঞ্চুরির সর্বকালের রেকর্ডের সমকক্ষতা অর্জন করেন। আর আজ (১২ নভেম্বর) বেঙ্গালুরুতে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৫১ রান করে চলমান আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান স্কোরারদের মধ্যে শীর্ষে চলে গেছেন। তার এখন এখন ৫৯৪।
এএফপি স্পোর্ট ওয়ানডেতে তার আগের পাঁচটি স্মরণীয় ইনিংস নিয়ে আলোকপাত করেছে। 

* প্রথম শতক (২৪ ডিসেম্বর, ২০০৯) : কোহলির ওয়ানডে অভিষেক ২০০৭ সালে, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। এবং পরের বছর কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ১৪তম ওয়ানডেতে প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন। কাকতালীয়ভাবে তার প্রতিপক্ষ সেই শ্রীলঙ্কাই! ২১ বছর বয়সী কোহলি ততদিনে বিশেষ প্রতিভা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। বীরেন্দর শেবাগ, টেন্ডুলকার এবং গৌতম গম্ভীরের পরে চার নম্বরে ব্যাট করতে এসেছিলেন। ওই ম্যাচে তিনি ১০৭ রান করেন এবং গম্ভীরের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ২২৪ রানের জুটি গড়েন। গম্ভীর অপরাজিত ১৫০ রান করেছিলেন এবং ম্যাচসেরা হয়েছিলেন। ভারত ১১ বল বাকি থাকতে ৩১৬ রানে তাড়া করে  ৭ উইকেটে জিতে যায়। ওই নকটি কোহলিকে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল এবং চেজ মাস্টার হওয়ার শুরুটা তার এখান থেকেই।

* অস্ট্রেলিয়া শাসন  (২০ অক্টোবর, ২০১০) : মিচেল স্টার্কের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে আরেকটি সফল রান তাড়া করতে বিশাখাপত্তমে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কোহলি তার প্রথম শতরান এবং ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতরান করেন।
দ্বিতীয় বলে ওপেনার শিখর ধাওয়ান আউট হয়ে গেলে কোহলি ওয়ানডাইন পজিশনে নামেন। এবং ৪৮.৫ ওভারে দলকে জেতাতে নিজে অবদান রাখেন অপরাজিত ১১৮ রান। ওই ম্যাচে তিনি যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে ১৩৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন, যেখানে অধিনায়ক এমএস ধোনি শূন্য রানে আউট হন এবং প্রতিপক্ষের অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক অপরাজিত ১১১ রান করেন। পাঁচ উইকেটের জয়ের পর ধোনি বলেন, কোহলি নিখুঁত ব্যাটিং করেছে।

* হোম হিরো (১৭ অক্টোবর, ২০১১) : দিল্লিতে তার হোম গ্রাউন্ডে একটি ইনিংস কোহলিকে চিত্তসুখ দিয়েছিল যখন তিনি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপরাজিত ১১২ রান করেছিলেন যখন ভারত তাদের জয়ের লক্ষ্য ২৩৮ রান সহজেই তাড়া করেছিল। ততদিনে কোহলি ভারতের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানদের একজন। এবং তিনি ওই ম্যাচে গম্ভীরের সঙ্গে ২০৯ রানের অপরাজিত জুটি গড়ে তার ক্লাস দেখান। গম্ভীর ৮৪ রান করেছিলেন। ভারত ৮০ বল হাতে রেখে ইংল্যান্ডকে আট উইকেটে পরাস্ত করেছিল।
ম্যাচের পর ইংল্যান্ড অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক বলেছিলেন, বিরাট এবং গম্ভীর আমাদের দেখিয়েছেন কীভাবে এটি করা হয়েছে’। কোহলি বলেছিলেন এটি তার হোম গ্রাউন্ড (ফিরোজ শাহ কোটলা)। এই মাঠে খেলা বিশেষ সন্তোষজনক ছিল।

* সর্বোচ্চ স্কোর (১৮ মার্চ, ২০১২) : মিরপুরে এশিয়া কাপ লিগের একটি ম্যাচে কোহলির ১৪৮ বলে ১৮৩ রান তার সর্বোচ্চ ওডিআই স্কোর। তার এই নক পাকিস্তান বোলিংকে ধাক্কা দেয়, যারা ৩২৯ রান করেও জিততে পারেনি। 
কোহলি তার আদর্শ টেন্ডুলকারের সঙ্গে একটিসহ দুটি সেঞ্চুরি জুটি গড়েন, যিনি ৫২ রান করেছিলেন, ভারত জিতেছিল ছয় উইকেটে।
জয় সত্তে¡ও ভারত ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু কোহলি, যিনি তার ইনিংসে ২২টি চার এবং একটি ছক্কা মেরেছিলেন, পরে বলেছিলেন, আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম ইনিংসটি খেলে। যার মাধ্যমে আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে।

* বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি (১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫) : এ্যাডিলেডে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোহলির ১০৭ রান ছিল বিশ্বকাপে তার প্রথম সেঞ্চুরি এবং একটি ভারতীয় জয় এটিকে আরও বিশেষ করে তুলেছিলে।
কোহলি ইনিংসটি বেশ সর্তকতার সঙ্গে খেলেছিলেন এবং শিখর ধাওয়ান ও সুরেশ রায়নার সঙ্গে বড় রানের জুটি খেলতে নিজে ১২৬টি বল মোকাবেলা করেছিলেন। তার ব্যাটিং ইনিংসটি ছিল পরিপক্ক। ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভারে কাঁটায় কাঁটায় ৩০০ রান স্কোর করে। তাদের বোলাররা দুর্দান্ত গোলকবাজি করে তাদের চিরপ্রতিদ্ব›দ্বীকে ২২৪ রানে অলআউট করে দেয়। মোহাম্মাদ শামি সর্বাধিক চার উইকেট তুলে নিয়েছিলেন।
কোহলি ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন এবং বলেছিলেন যে তিনি ক্রিকেট-পাগল জাতি এবং তার অগুণিত ভক্তদের প্রত্যাশা পছন্দ করেন।
 
 

 

রুমেল খান

সম্পর্কিত বিষয়:

×