ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

লঙ্কা-রাবণদের হারানো কঠিন নয়

​​​​​​​রকিবুল হাসান

প্রকাশিত: ০০:৩৬, ৬ নভেম্বর ২০২৩

লঙ্কা-রাবণদের হারানো কঠিন নয়

.

প্রিয় পাঠক, আজ আমরা আবারো আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির খেলা দেখবো। এবারের বিশ্বকাপটা আমাদের জন্য মোটেও ভাল যাচ্ছেনা। অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে সাকিব আল হাসানের দল বিশ্বমঞ্চে পা রাখে। প্রত্যাশিত সাফল্য না আসলেও এখনো কিন্তু শেষটা সুন্দর অন্তত করার সুযোগ আছে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচটি জিতে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার সুযোগ থাকছে। বাস্তবতা দেখলে লঙ্কা-রাবণদের হারানো খুব কঠিন কাজ নয়। সেটা করতে পারলে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটাতেও ভাল কিছু করার রসদ চলে আসবে।

সময় খারাপ গেলে সমালোচনা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। টাইগারদের জন্যও এখন সেই দুঃসময় চলছে। তবে আমরা বীরের জাতি। যে কোনো প্রতিকূলতায় ঘুরে দাঁড়াতে পারি। আমি তাই বলবো, আগের ম্যাচগুলোতে যা হওয়ার হয়েছে সব ভুলে যেতে হবে। নতুন উদ্যোমে, নতুন শুরু করতে হবে। এমন সময়ে মিরাজ-মুশফিকরা মাঠে নামছেন তখন প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কাও স্বস্তিতে নেই। আগের ম্যাচে তারা ভারতের বিরুদ্ধে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয়েছে। কিছু ম্যাচ বাদ দিলে তাদের পারফরমেন্স বেশ খারাপ। সেই সাথে ইনজুরিতে লঙ্কানদের শক্তি খর্ব হয়েছে। এসব সুযোগ নিতে হবে বাংলাদেশকে। আমি এখনো বিশ্বাস করি, দলগতভাবে বিশ্বাস আর সাহস নিয়ে খেললে এই লঙ্কাকে হারানো কঠিন হবে না। অতীতে তাদের বিরুদ্ধে অনেক জয় আছে টাইগারদের।

প্রিয় পাঠক, বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ বেশ আলোচনায় ছিল। কারণ ওয়ানডে ফরম্যাটে দলটি ধারাবাহিভাবে ভাল করছিল। সেটা বিশ্বকাপে এসে ধরে রাখা না গেলেও আবার আগের জায়গায় যেতে এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো জরুরী। আমার ধারণা ম্যাচে একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে। ওপেনিংয়ে তানজিদ হাসান তামিমের পরিবর্তে নাজমুল হোসেন শান্তকে খেলানো যেতে পারে। অর্থাৎ লিটনের সাথে শান্ত শুরু করবে। তিনে আসবে অধিনায়ক সাকিব। সাকিব কিন্তু তিনে খেলেই ২০১৯ বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলেছিলেন। পরিস্থিতি বুঝে মুশফিক চারে। মাহমুদুল্লাহকে কোনোভাবেই ছয়ের পরে নামানো যাবেনা। সবাই সবার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করলে জয় সম্ভব। আমি আশা করি গা ঝারা দিয়ে টাইগাররা নতুন করে জেগে উঠুক। আগের গ্লানি মুছে দিয়ে নতুন সূর্যের শুরু হোক এখান থেকেই। অতীত ভুলে খেলতে হবে। বুকে সাহস রাখতে হবে।

খেলোয়াড়েরা যেন পেছনের ব্যর্থতা মাথায় না রাখেন। বরং যার যার নিজের সেরা পারফরমেন্স সামনে রেখে খেললে ইতিবাচক ফল পাওয়া সহজ হবে। ক্রিকেটারদের সবচেয়ে বড় সুযোগ দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটানোর। বাঙালি এমন জাতি যারা খুব অল্পতেই তুষ্ট। এখনো যদি বাংলাদেশ জয় পায় তাহলে তারা সব ভুলে ক্রিকেটারদের মাথায় তুলে রাখবেন। আমি আশা করবো, এই সুযোগটা কাজে লাগাবে সাকিবের দল। তবে এটাও ঠিক, লঙ্কাও কিন্তু জয়ের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে। তারা এবার বিশ্বকাপ খেলছে নানাবিধ সমস্যা নিয়ে। ভারতের সাথে খুব বাজে খেলেছে মানে তাদেরকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। তারাও শেষটা সুন্দর করতে মুখিয়ে থাকবে।

প্রিয় পাঠক, আমি যখন রবিবার রাতে লেখাটি লিখছি তখন আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে বিরাট কোহলির অনবদ্য ইনিংস। একটা ব্যাটার কতটা সুশৃঙ্খল হলে এতটা বছর ধারাবাহিকভাবে রান করা সম্ভব। কোহলি একজন ডিসিপ্লিনড খেলোয়াড়। এজন্য তার সাফল্য পাওয়া সহজ হয়েছে। শচীনকে কোহলি ছুঁয়ে ফেলেছে এজন্য ধন্যবাদ। ওর কীর্তিতে আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। কেননা কোহলি উপমহাদেশের খেলোয়াড়। অন্য কোনো মহাদেশের ক্রিকেটারের এমন কীর্তি নেই। কোহলি আমাদের প্রতিবেশী; সে পারলে আমরা কেন পারিনা! এখান থেকে অনেক কিছু শিক্ষা নেয়ার আছে।

অনুলিখন : জাহিদুল আলম জয়

×