ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

বড় দেশের মর্যাদা চায় হল্যান্ড

​​​​​​​জিএম মোস্তফা

প্রকাশিত: ২২:৩২, ২৯ অক্টোবর ২০২৩

বড় দেশের মর্যাদা চায় হল্যান্ড

ডাচ্ অলরাউন্ডার বাস ডি লিডে

এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সেরা চমকটা উপহার দিয়েছে আফগানিস্তান। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও যে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে তারা। দ্বিতীয় দল হিসেবে ভারত বিশ্বকাপের চমকের নাম নেদারল্যান্ডস। আসরের শুরু থেকেই উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পর শনিবার বাংলাদেশের বিপক্ষেও দুর্দান্ত এক জয়ের স্বাদ পেয়েছে স্কট অ্যাডওয়ার্ডসের দল। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ডাচরা এদিন ৮৭ রানে পরাজিত করে টাইগারদের। এই জয়ের পর নেদারল্যান্ডসকে এখন থেকেবড় জাতিরমর্যাদা দেয়ার দাবি তুলেছেন দলটির অভিজ্ঞ অল-রাউন্ডার বাস ডি লিডে। প্রসঙ্গে ম্যাচের পর তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের দৃষ্টি আকর্ষণও সম্ভব হয়েছে বলে আমি মনে করি, ভবিষ্যতে যাতে নেদারল্যান্ডসকেও একটি বড় দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২০২৩ বিশ্বকাপে টেস্ট খেলুড়ে দেশের বাইরে একমাত্র দেশ হিসেবে অংশ নেয় নেদারল্যান্ডস। বাছাইপর্বের ম্যাচে রানার্সআপ হয়ে ভারত বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছিল তারা। যে বাছাই থেকে বিদায় নিয়েছিল দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ের মতো দলও। বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েই নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন তারা। যদিওবা প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের কাছে টানা হেরেছিল হল্যান্ড।

তৃতীয় ম্যাচেই আসরের অন্যতম সেরা চমকটা উপহার দেয় অ্যাডওয়ার্ডসের দল। ধর্মশালায় উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৮ রানে পরাজিত করে ভারতের মাটিতে প্রথম জয় তুলে নেয় তারা। এরপর শ্রীলঙ্কা এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছেও টানা হেরে কিছুটা হলেও ভেঙে পড়েছিল ডাচরা। কিন্তু নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচেই আসরের দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ পায় তারা। যদিওবা প্রথমে ব্যাট করে ২২৯ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। এই ম্যাচেও দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক স্কট অ্যাডওয়ার্ডস। যার সর্বোচ্চ ৬৮ রানের ইনিংসটিই ছিল ম্যাচের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট। ডাচদের ছুড়ে দেওয়া এই অল্প রানের জবাবে ৪২. ওভারে মাত্র ১৪২ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ! সেইসঙ্গে এবারের আসরে টানা পঞ্চম পরাজয়ের লজ্জা পায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে মিশন শুরু করা সাকিব আল হাসানের দল। এমন জয়ের পর ডি লিড দারুণ রোমাঞ্চিত। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বিশ^কাপের প্রতিটি জয়ই বড়। এটা কার্যত নেদারল্যান্ডসের ক্রিকেটকেই এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাড়ি ফিরে আমরা যেন এর মাধ্যমে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে পারি।

ভারতের মাটিতে পা রাখার আগে একদিনের বিশ্বকাপে মাত্র দুটি জয় সম্বল ছিল নেদারল্যান্ডসের। সেই ডাচরাই এবার প্রথম ছয় ম্যাচেই তুলে নিল দুই জয়। টাইগারদের হারিয়ে ৫০ ওভারের বিশ^কাপে চতুর্থ জয় তুলে নেয় ডাচরা। এর আগে ২০০৩ সালে নামিবিয়া আর ২০০৭ সালে স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছিল তারা। এমন জয়ের পরও পা মাটিতে রাখছে নেদারল্যান্ডস। কীভাবে উদযাপন করবেন তারা? এমন প্রশ্নের জবাবে ডি লিডে বলেন, ‘কোন উত্তেজনাকর কিছু করা হবে না। কেউ কেউ ড্রেসিং রুমেই হয়তো উদ্যাপনের উৎস খুঁজে নিবে। আমরা একসঙ্গে দলীয় সংগীত গাইব।

দক্ষিণ আফ্রিকার পর বাংলাদেশকে হারিয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে রবিবার পর্যন্ত টেবিলের আট নম্বরে অবস্থান করে নেদারল্যান্ডস। দুটি করে জয় নিয়ে তাদের উপরে থাকা শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানেরও পয়েন্ট সমান চার। যার ফলে সেমিফাইনালে খেলার ক্ষীণ আশা তাদের সামনে এখনো টিকে রয়েছে। তবে ডি লিড সেই স্বপ্ন দেখছেন না বরং বাকি তিন ম্যাচে যতটা সম্ভব ভালো খেলা উপহার দেওয়াই তাদের লক্ষ্য, ‘আমি মনে করি সেমিফাইনাল পজিশন অন্যদের ওপরও নির্ভর করছে। তারপরও আমাদের নিজেদের স্বাভাবিক খেলা চালিয়ে যেতে হবে। যতটা সম্ভব ম্যাচ জয় করে দেশে ফেরাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এবারের বিশ্বকাপে অন্তত দুটি ম্যাচে আমরা প্রত্যাশানুযায়ী খেলতে পারিনি। কিন্তু আবারও জয়ের ধারায় ফিরেছি। বাকি তিন ম্যাচেও যদি এমন ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারি তাহলে শেষ পর্যন্ত কি হয় তা এখনই কিছু বলা যায় না।

×