ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ভারতের আতিথেয়তায় বিস্মিত পাক অধিনায়ক বাবর

​​​​​​​রুমেল খান

প্রকাশিত: ০০:৩৯, ৬ অক্টোবর ২০২৩

ভারতের আতিথেয়তায় বিস্মিত পাক অধিনায়ক বাবর

.

প্রথমে তিক্ত অভিজ্ঞতা, পরে চিত্তসুখের অনুভূতি। শুরুতে ভিসাপ্রাপ্তি নিয়ে বিড়ম্বনা-হয়রানি। সে সমস্যার সমাধানের পর প্রতিবেশী দেশে গিয়ে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি আতিথেয়তা পেয়ে বিস্মিত। বলা হচ্ছে, পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বাবর আজমের কথা। তিনি বলেছেন যে, তার দল ভারতে যে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছে তাপ্রত্যাশিত ছিল না সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন যে, ‘আমরা যেন বাড়িতেই আছি!’

আজ শুক্রবার হায়দরাবাদে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পাকিস্তান তাদের আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট শুরু করবে। তার আগে আজম এবং পাকিস্তান দল দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য গত সপ্তাহে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ভারতের হায়দরাাবাদে বিমানযোগে অবতরণ করে।

সেখানে পৌঁছেম্যান ইন গ্রিনখ্যাত পাকিস্তান দল তাদের ধারণার চেয়েও বেশি আতিথেয়তা পেয়ে বিমুগ্ধ এবং অভিভূত হয়েছে। প্রসঙ্গে একবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন  (২০১৯ আসরে ম্যাচে ৪৭৪ রান, গড় ৬৭.৭১, শতক-) বাবর বলেন, ‘আমি মনে করি আতিথেয়তা চমৎকার ছিল। আমরা এটি আশা করিনি, কিন্তু আমি মনে করি যে, লোকেরা আমাদের দলের প্রতি যেভাবে সাড়া দিচ্ছে, সবাই এটি উপভোগ করেছে।আগামী ১৪ অক্টোবর আহমেদাবাদের লাখ ৩২ হাজার ধারণক্ষমতার (এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম) নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে পাকিস্তান মুখোমুখি হবে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের। আগামী ১৫ অক্টোবর ২৯ বছর পূর্ণ হতে যাওয়া বাবর আরও বলেন, ‘আমরা হায়দরাাবাদে এক সপ্তাহ ছিলাম। তাই এটা এমন নয় যে আমরা ভারতে রয়েছি, এটা আমাদের বাড়ির মতো। আমি মনে করি প্রত্যেকের জন্য তাদের ১০০ শতাংশ দেওয়ার এবং টুর্নামেন্ট উপভোগ করার এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ।

কে না জানে, রাজনৈতিক তিক্ততার কারণে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে খারাপ সম্পর্ক বিরাজ করছে। আর এর কুপ্রভাব পড়েছে ক্রিকেটে। দুদেশ বহু বছর ধরেই পরস্পরের দেশে গিয়ে কোনো সিরিজ খেলে না। তবে আইসিসির কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে সূচির কারণে পরস্পরের মধ্যে খেলতে বাধ্য হয়! পাকিস্তান সর্বশেষ ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভারত সফর করেছিল। সেই দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই এখন নেই। ফলে প্রায় সমস্ত খেলোয়াড়দের জন্য এটি ভারতীয় উপকূলে প্রথমবারের মতো ভ্রমণ। ডান হাতি টপঅর্ডার উইলোবাজ বাবর আরও বলেন, ‘আমরা হায়দরাবাদে অবতরণ করার মুহূর্তে লোকেরা যেভাবে বিমানবন্দর থেকে হোটেলে এবং এমনকি শেষ (ওয়ার্ম-আপ) ম্যাচে আমাদের স্বাগত জানিয়েছে, তাতে আমরা দারুণ অভিভূত এবং ভালো অনুভব করেছি।

১০৮ ওয়ানডেতে ৫৮.১৬ গড়ে ৫৪০৯ রান, ১৯ শতক এবং ২৮ অর্ধশতকের মালিক বাবর আরও যোগ করেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সমর্থক থাকলে আরও ভালো হতো। আমরা প্রতিটি ম্যাচে, প্রতিটি স্টেডিয়ামে, এমন সমর্থন পাওয়ার আশা করব।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) অংশগ্রহণের কারণে বিশ্বকাপে অনেক দলের খেলোয়াড়দের ভারতীয় পিচের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু সেটার ঘাটতি রয়েছে পাকিস্তান দলের। কেননা ভারত সরকারের অনুমতি না থাকায় পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা আইপিএল খেলতে পারেনি (যদিও শুরুতে এক মৌসুম খেলতে পেরেছিলেন) তবে বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় এটাকে কোনো সমস্যা হিসেবে দেখছেন না আজম, ‘কোনো চাপ নেই। ভারতের অবস্থাও পাকিস্তানের মতো। এটা ঠিক যে এখানে বাউন্ডারি ছোট এবং বোলারদের ভুলের জন্য সামান্য ব্যবধান আছে। এটি বড় স্কোরিং হবে এবং আপনাকে এটির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। তাই আমাদের আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে হবে এবং আমাদের সেরাটাই নিংড়ে দিতে হবে।

সবশেষে আজম বলেন, ‘পেস স্পিয়ারহেড শাহিন শাহ আফ্রিদির নেতৃত্বে তার দলের বোলিং আক্রমণ বেশ শক্তিশালী।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে অন্য সব দেশের ক্রিকেট দলগুলো ভারতের ভিসা পেয়ে গেলেও ঝামেলা বাদে পাকিস্তানের বেলায়। তাদের ভিসা পাওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে যায়। নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির কাছে অভিযোগ করে। তখন বিব্রত হয় ভারত ক্রিকেট বোর্ড। তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করার চেষ্টা করে এই বলে ভিসা দেওয়ার বিষয়টি তাদের হাতে নেই। তখন পাকিস্তানি ক্রিকেটপ্রেমীরা ভারতের সমালোচনায় মুখর হন। বলা হয়শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই পাকিস্তান দলকে ভিসা না দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে! যা হোক, এই ডামাডোলের মধ্যেই অবশেষে পাকিস্তান দলকে ভিসা দেওয়া হয়, তারা ভারতে উড়াল দেয় এবং সেখানে গিয়ে অপ্রত্যাশিত আতিথেয়তা পেয়ে বিস্মিত-অভিভূত হয়ে পড়ে।

×