বাংলাদেশের ফুটবল দল
বাংলাদেশের ফুটবলের মানোন্নয়নে সহায়তা করবে উত্তর আমেরিকার অন্যতম ফুটবল পরাশক্তি মেক্সিকো। এজন্য দেশটির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ।
জানা গেছে, মেক্সিকো ১৯২৯ সাল থেকে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৬১ সাল থেকে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা কনকাকাফের সদস্য (উত্তর, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবীয় ফুটবল সংস্থা) হিসেবে রয়েছে। ১৯২৩ সালের ১ জানুয়ারি মেক্সিকো প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। গুয়াতেমালার গুয়াতেমালা সিটিতে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে মেক্সিকো গুয়াতেমালাকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে।
এখন পর্যন্ত ১৬ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে মেক্সিকো। যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ১৯৭০ এবং ১৯৮৬ ফিফা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে পৌঁছানো। অন্যদিকে কনকাকাফ গোল্ডকাপে মেক্সিকো অন্যতম সফল দল। যেখানে তারা ১১টি (১৯৬৫, ১৯৭১, ১৯৭৭, ১৯৯৩, ১৯৯৬, ১৯৯৮, ২০০৩, ২০০৯, ২০১১, ২০১৫ এবং ২০১৯) শিরোপা জয়লাভ করেছে। এছাড়াও মেক্সিকো ১৯৯৯ ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের শিরোপা জয়লাভ করে।
সবমিলিয়ে ফুটবলে অভিজ্ঞ দেশ মেক্সিকো। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশের ফুটবলের মানোন্নয়নে সহায়তা করবে দেশটি। সমঝোতা স্মারকের বিষয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় অংশ নেওয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সব অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব, পরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (ক্রীড়া), বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের এরইমধ্যে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ফুটবল খেলার মানোন্নয়নে বাংলাদেশ এবং মেক্সিকোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উদ্দেশ্যে আগামী ৬ জুলাই বেলা ১১টায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এবং ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সভা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করবেন। সভায় যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বা তার প্রতিনিধিকে সরাসরি বা ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (ক্রীড়া-১ অধিশাখা) মোহাম্মদ সানাউল হক বলেন, সমঝোতা স্মারকের বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার আমাদের প্রাথমিক সভা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এ বিষয়ে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করব। এরপর চূড়ান্ত করব।
এ বিষয়ে মেক্সিকোর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না-জানতে চিলে তিনি বলেন, না, আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের (মেক্সিকো) একটি চিঠি পেয়েছি। সেই চিঠির আলোকে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে সভাটি করব।
এ বিষয়ে মেক্সিকো আগ্রহ দেখিয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ সানাউল হক বলেন, হ্যাঁ, চিঠিটা মেক্সিকো থেকেই এসেছে। সমঝোতা স্মারক দ্বিপাক্ষিক হয়। দুপক্ষ সম্মত হলেই অগ্রসর হওয়া যায়। এর আগে আমরা আর্জেন্টিনার সঙ্গে চুক্তি করলাম। এখন মেক্সিকোর সঙ্গে করার বিষয়েও আলোচনা চলমান। দেখা যাক, ৬ তারিখ সভা হলে বোঝা যাবে অগ্রগতি কতটুকু হয়।
জানা গেছে, প্রথমত সমঝোতা স্মারক হবে চার বছরের জন্য। এতে দুই দেশের স্বাক্ষরের পর চার বছর পর্যন্ত কার্যক্রম থাকবে। তবে কোনো পক্ষের আপত্তি না থাকলে এটি পরে সমান মেয়াদের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়তে থাকবে।
সমঝোতা স্মারকের মূলে বাংলাদেশের ফুটবলের মানোন্নয়ন, ক্রীড়া শিক্ষা, বয়সভিত্তিক দলগুলোর সুযোগ-সুবিধা, নারী ফুটবলের উন্নত প্রশিক্ষণ থাকবে। এছাড়া কোচিং ডেভেলপমেন্ট, বিভিন্ন পর্যায়ের ক্লাব ফুটবল ও জাতীয় দলের জন্যও থাকবে পারস্পরিক নানা সুযোগ বিনিময়ের সুবিধা।
যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, মেক্সিকোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার আমাদের সভা আছে। আমরা প্রাথমিকভাবে আলাপ-আলোচনা করব। তারপর বিস্তারিত বলা যাবে। এ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সমঝোতা স্মারক যেভাবে আছে, এটিও সে অনুযায়ীই হবে।
এমএস