কৃতী ব্যাটসম্যান রনি তালুকদার
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০১৫ সালে পদার্পণ। কিন্তু নিজেকে চেনাতে ৮ বছর সময় লেগেছে রনি তালুকদারের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি২০ অভিষেক হয়েই বাদ পড়েছেন। কিন্তু এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার আবার পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। লম্বা সময় পর ফিরেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করেই। বিশেষ করে টি২০ ফরম্যাটে এই মারকুটে ওপেনার যে পুরোপুরি খাপ খেয়ে যান সেটিই প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান টি২০ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই ঝড়ো ইনিংস খেলে এখন আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ৩২ বছরের পরিণত এ ডানহাতি ব্যাটারের। এখন আর বাদ পড়ার ভয় নেই। রনি জানিয়েছেন, টিম ম্যানেজমেন্টই তাকে সাহস জুগিয়েছে। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে টিম হোটেলে সংবাদ মাধ্যমকে এসব কথা বলেন রনি।
ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করে মাত্র ২৪ বছর বয়সে ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি২০ অভিষেক হয় রনির। ওপেনার হলেও সেই ম্যাচে সাত নম্বরে নেমে ২২ বলে ২১ রান করেন। এরপর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যায়নি তাকে। কিন্তু নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেটে তার ব্যাটে রান দেখা গেছে। বিশেষ করে ব্যাট হাতে নেমেই বোলারদের ওপর তেড়েফুঁড়ে চড়াও হওয়ার মানসিকতা দেখিয়ে নজর কাড়তে থাকেন তিনি।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এবার ১২৯.১৭ স্ট্রাইকরেটে দ্বিতীয় সর্বাধিক ৪২৫ রান করেছেন তিনি। মাত্র ১৯ বলে ফিফটিও আছে। তাই আবার জাতীয় দলে তাকে ডাকতে বাধ্যই হয়েছেন নির্বাচকরা। ফেরার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নতুন করে তার যাত্রা শুরু হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এবার ওপেনার হিসেবেই খেলেছেন। প্রত্যাবর্তনের পর টানা ৫ টি২০ খেলে ৩৩ গড়ে ১৪৮.৬৪ স্ট্রাইকরেটে করেছেন এক হাফ সেঞ্চুরিতে ১৬৫ রান। আইরিশদের বিপক্ষে নিজেকে আরো বিস্ফোরক প্রমাণ করেছেন তিনি।
প্রথম ম্যাচে ৩৮ বলে ৬৭ রান করেন ১৭৬.৩১ স্ট্রাইকরেট আর দ্বিতীয় টি২০তে ১৯১.৩০ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ২৩ বলে ৪৪। এমন মনোভাব নিয়ে ব্যাটিং করার বিষয়ে রনি বলেন, ‘আমার এখানে হারানোর কিছু নেই। আমি ৮ বছর আগেও যেমন খেলা খেলেছি, শুরু থেকেই আমার খেলার ধরনটা এমন ছিল। কারণ আমি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মাঠে নামি। টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে যে বার্তা দিয়েছে যে, আমার খেলার ধরন অনুযায়ী আমাকে খেলতে বলছে। ইংল্যান্ড সিরিজের আগে আমাকেও বলল- তুমি বিপিএলে যে কাজটা করছ, এখানেও সেটাই করবে।’
ফেরার পর গত ৫ ম্যাচে যেভাবে ব্যাট চালিয়েছেন তাতে করে রনিকে বাদ দিয়ে কিছু চিন্তাই করবে না আপাতত টিম ম্যানেজমেন্ট। আর রনি নিজেও সে বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। তিনি বলেছেন, ‘এখন এই (বাদ পড়ার) ভয় কাজ করে না। কারণ টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে ওই সাহসটা দিয়েছে।’ লম্বা সময় পর ফিরেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন সাবলীল ব্যাটিংয়ের বিষয়ে রনি বলেন, ‘আমাদের একটা পরিকল্পনা থাকে। টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের একটা পরিকল্পনা দিয়ে দেয়।
আমরা সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা কাজটা করার চেষ্টা করি। মূল পরিকল্পনাটা হলো ইতিবাচক থাকার। আমরা যেন এখানে ইতিবাচক মনোভাব দেখাতে পারি। টিম ম্যানেজমেন্ট যারা... ড্রেসিং রুমে আমরা একটা জিনিসই করার চেষ্টা করছি, সবাই যেন ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারি আমরা। এটাই আমাদের মূল কাজ।’