স্পেনের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোলে সমতায় ফিরে জার্মান শিবিরে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস
কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল জার্মানি। বাঁচা-মরার ম্যাচে রবিবার স্পেনের বিপক্ষে ১-১ গোলে রুদ্ধশ্বাস ড্র করেছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এর ফলে এবারের আসর থেকে প্রথমবার ১ পয়েন্ট অর্জন করেছে বিশ্ব ফুটবলের পাওয়ার হাউসরা। সেইসঙ্গে গ্রুপ পর্বের বাধা অতিক্রম করার সম্ভাবনাও টিকে রইল তাদের। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির গড়েছিল জার্মানি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের। চার বছর পর রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার লক্ষ্যেই এবার কাতার বিশ্বকাপের মিশন শুরু করে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। কিন্তু এবারো প্রথম ম্যাচে জাপানের কাছে ২-১ গোলে হেরে মিশন শুরু করে বিশ্ব ফুটবলের পাওয়ার হাউসরা। দ্বিতীয় ম্যাচে তাই জয় কিংবা ড্রয়ের বিকল্প ছিল না তাদের। এমন কঠিন সমীকরণ নিয়েই স্পেনের মুখোমুখি হয় জার্মানি।
দোহার আল বাইত স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই দাপুটের সঙ্গে খেলতে থাকে সাবেক দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ম্যাচের ৬ মিনিটে দুরন্ত সেভ করেন জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়ের। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ওলমোর চেষ্টা বাঁ-দিকে ড্রাইভ দিয়ে অসাধারণভাবে সেভ করেন তিনি। দশম মিনিটে পাল্টা আক্রমণ করে জার্মানিও। লিও গোরেৎজকা স্পেনের ডিফেন্সের বুক চিরে মাঝখান দিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে যান। এবং বল দিয়ে দেন গ্যানাব্রিকে। গ্যানাব্রি বক্সে প্রবেশ করলে তাকে রুখে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমোন। এই সময়ে রেফারি অফসাইডের জন্য বাঁশি বাজান। ৩৩ মিনিটে দানি ওলমোর স্কোয়ার পাস। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন ফেরান টোরেস। তার শট চলে যায় গোলপোস্টের ওপর দিয়ে। তবে বড় সুযোগটা আসে ৩৯ মিনিটে। ফ্রি-কিক থেকে বল ভাসিয়েছিলেন গুন্ডোগান। অরক্ষিত রুডিগার হেডে করেন দুরন্ত গোল। উচ্ছ্বাসে ভাসে জার্মান শিবির। কিন্তু ভিএআর এর সাহায্যে দেখা যায়, তিনি অফসাইড ছিলেন। যে কারণে গোলটি বাতিল হয়। এরপরও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলে দুই দলের। কিন্তু কোনো দলই গোলের মুখ খুলতে পারেনি। ফলে গোলহীন থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পরও নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলতে থাকে প্রথম ম্যাচে হেরে খাদের কিনারায় থাকা জার্মানি। ৫৬ মিনিটে অসাধারণ এক আক্রমণ করে তারা। কিন্তু দুর্দান্ত সেভ করেন স্পেনের গোলরক্ষক সিমোন। তবে ৬১ মিনিটেই গোল হজম করে বসে জার্মানি।
গোলের নায়ক আলভারো মোরাতা। জর্দি আলভার বাড়ানো বল ডান পায়ে দুর্দান্ত শটে গোল করেন মোরাতা। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচের ফেরার জন্য সর্বশক্তি দিয়েই লড়াই করে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। এই সময়ে দুর্দান্ত কিছু আক্রমণও করে গ্যানাব্রি-মুসিয়ালারা। ৮৩ মিনিটেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে ফিরে জার্মানি। গোল করে জার্মানিকে ম্যাচে ফেরান নিকলাস ফুলক্রুগ। জার্মান স্ট্রাইকারের বুলেট গতির শট আসলে ফেরানোর সাধ্য ছিল না স্প্যানিশ গোলরক্ষক সিমোনের। এরপরও চলে দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। কিন্তু সফল সমাপ্তি টানতে পারেনি কেউ। যে কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়ে দুই দল। শেষ ম্যাচে আগামী বৃহস্পতিবার কোস্টারিকার মুখোমুখি হবে জার্মানি। একই দিনে জাপানের মুখোমুখি হবে স্পেন। সেই ম্যাচে লা রোজারা জয় পেলেই চলে যাবে শেষ ষোলোতে। অন্যদিকে, গ্রুপ পর্বের বাধা অতিক্রম করতে হলে কোস্টারিকাকে হারানোর বিকল্প নেই জার্মানির।